ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

শতাধিক আফগান সেনাকে হত্যা করেছে তালেবান: এইচআরডব্লিউ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২১:২০, ৩০ নভেম্বর ২০২১

তালেবান সৈন্যদের একটি টহল দল

তালেবান সৈন্যদের একটি টহল দল

আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর শতাধিক সদস্য তালেবানদের হাতে নিহত হয়েছে বা নিখোঁজ হয়েছে। সম্প্রতি হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক নতুন প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। 

এইচআরডব্লিউর বরাত দিয়ে মঙ্গলবার বিবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যদিও তালেবান নেতৃত্ব সাধারণ ক্ষমার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তবুও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির সাবেক সৈন্য এবং পুলিশকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করতে বাধা দেয়নি স্থানীয় কমান্ডাররা।

যে কারণে তালেবান নেতৃত্বের বিরুদ্ধে "ইচ্ছাকৃত" এই হত্যাকাণ্ডকে "সহজ" করার অভিযোগ করেছে অধিকার রক্ষার এই সংগঠনটি। তবে কোনোরকম প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ডের কথা অস্বীকার করেন তালেবানের একজন মুখপাত্র।

দীর্ঘ ২০ বছর ধরে যুদ্ধের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত আগস্টে আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করার সাথে সাথে গ্রুপটি আশরাফ ঘানির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।

ক্ষমতা দখলের পর তালেবান দেশটির সরকারি কর্মচারীদের এই বলে আশ্বস্ত করেছিল যে- তারা পুলিশ, সেনাবাহিনী বা রাজ্যের অন্যান্য শাখায় যারা কর্মরত ছিল, তারা প্রতি সাধারণ ক্ষমার আওতায় নিরাপদ থাকবে।

কিন্তু অনেকেই এই সাধারণ ক্ষমার বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। কারণ, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের এবং সুশীল সমাজের ব্যক্তিদের হত্যার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে তালেবানদের।

২০২০ সালের শুরু থেকে গত আগস্টে তাদের দেশ দখলের মধ্যবর্তী ১৮ মাসে একটি নির্মম এবং রক্তাক্ত অভিযানের জন্য এই গ্রুপটিকে ব্যাপকভাবে দায়ী করা হয়। এইসময়ে তাঁদের হাতে নিহতদের মধ্যে বিচারক, সাংবাদিক ও শান্তিকর্মীরাও রয়েছেন।

ক্ষমতায় ফিরে আসার আগে সম্ভাব্য সমালোচকদের নির্মূল করার জন্য এবং যারা বেঁচে আছে তাদের মধ্যে ভয় জাগানোর জন্যই মূলত ওই অভিযান চালানো হয়েছিল বলেই বিশ্লেষকদের অভিমত।

মঙ্গলবার প্রকাশিত এইচআরডব্লিউ রিপোর্ট অনুসারে, তালেবান প্রশাসনের অধীনে চলা এই বেছে বেছে হত্যাকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে এবং দেশটির চারটি প্রদেশ- গজনি, হেলমান্দ, কুন্দুজ এবং কান্দাহারজুড়ে ১০০ জনেরও বেশি লোক নিহত বা নিখোঁজ হয়েছে।

অধিকার সংস্থাটি বলছে, তালেবান সরকার একটি আত্মসমর্পণকারী নিরাপত্তা বাহিনী নামে একটি ইউনিট গঠন করে এর সদস্যদেরকে তাদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়ে একটি চিঠি নিবন্ধন করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু পরিবর্তে তাদের নিবন্ধনের কয়েক দিনের মধ্যেই নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের আটক ও মৃত্যুদন্ড বা ‘গুম’ করার জন্য তথ্য সরবরাহ করেছে।

তালেবানরা এই গ্রেপ্তার ও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে নির্ধারিত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে সাবেক সরকারের রেখে যাওয়া কর্মসংস্থানের রেকর্ডও ব্যবহার করেছে বলেই দাবি করেছে এইচআরডব্লিউ।

দাতব্য সংস্থাটির সহযোগী এশিয়া পরিচালক প্যাট্রিসিয়া গসম্যান বলেন, ‘তালেবান নেতৃত্বের দেয়া প্রতিশ্রুত সাধারণ ক্ষমা আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর প্রাক্তন সদস্যদেরকে হত্যা বা নিখোঁজ করা থেকে স্থানীয় কমান্ডারদের বিরত রাখতে পারেনি।’

তিনি বলেন, ‘আসন্ন হত্যাকাণ্ড রোধ করার জন্য, দায়ীদেরকে জবাবদিহি করাতে এবং নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার ভার নিতে হবে তালেবান নেতৃত্বকেই।’

তবে তালেবান প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ উল্টো গত শনিবার এক জনসভায় ভাষণে কোনরকম প্রতিশোধ নেয়ার কথা অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘এখানে কারো জন্য কোনও সমস্যা নেই।’ সূত্র- বিবিসি।

এনএস//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি