রুশ হামলায় ৮ জন নিহত
প্রকাশিত : ১৬:৫২, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | আপডেট: ১৬:৫৪, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২
রাশিয়ান সেনা বাহিনীর বোমা হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৮ জন মারা গেছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনের পুলিশ। আহত হয়েছে ৯ জন।
কর্মকর্তারা বলছেন ওদেসার বাইরে পোডিলস্ক শহরের একটি সেনা ঘাঁটিতে হওয়া হামলায় ছয়জন মারা গেছেন এবং সাতজন আহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। পুলিশ আরো জানিয়েছে যে মারিউপল শহরে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা রয়টার্সকে বলেছেন, আকাশ পথে এবং ভূমিতে বড় ধরনের আক্রমণ শুরু করেছে রাশিয়া।
শেরনিহিভ, খারকিভ ও লুহানস্ক এলাকা দিয়ে রুশ স্থলবাহিনীর কলাম ইউক্রেইনের সীমানায় ঢুকে পড়েছে বলে সীমান্তরক্ষীদের বরাতে জানিয়েছে রয়টার্স।
শেষ মুহূর্তের চেষ্টা হিসেবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘মানবতার নামে’ যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ইউক্রেইন নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি এক বৈঠকের পর তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট পুতিন, মানবতার দোহাই, আপনার সেনাদের রাশিয়ায় ফিরিয়ে নিন।’
যুদ্ধ ইউক্রেইনের জন্য ধ্বংসাত্মক পরিণতি নিয়ে আসবে এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে এর পরিণতি সুদূরপ্রসারী হবে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।
ইউক্রেইনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফ দাবি করেছেন, রাশিয়ার বাহিনী ইউক্রেইনে হামলা শুরু করার পর আগ্রাসী বাহিনীটির পাঁচটি এয়ারক্র্যাফট ও একটি হেলিকপ্টার গুলি করে নামানো হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেইনে সেনা অভিযানের ঘোষণা দেওয়ার পর ছয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে রুশ মুদ্রা রুবলের মান। এ পরিস্থিতিতে লেনদেন স্থগিত করেছে মস্কো এক্সচেঞ্জ।
রয়টার্স জানায়, সকালে মস্কোর বাজারে লেনদেন শুরুর মিনিট খানেকের মধ্যেই রুবলের দর ডলারের বিপরীতে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ এবং ইউরোর বিপরীতে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ পড়ে যায়।
এক বিবৃতিতে মস্কো এক্সচেঞ্জ জানিয়েছে, ‘সব বাজারেই রুবলের লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে। লেনদেন আবার চালুর বিষয়ে পরে জানানো হবে। এখনও বিশ্বাস করে উঠতে পারছে না কেউ’
বিবিসির পূর্ব ইউরোপের প্রতিবেদক সারাহ রেইনসফোর্ড ইউক্রেইনের দনবাস অঞ্চলের ক্র্যামাতোরস্কে আছেন। তিনি লিখেছে, সামনে কী আসছে তা ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
তিনি বলেন, “ওই এলাকার পরিস্থিতি পুরোপুরি ঘোলাটে। গত রাতেও লোকজন শহরের রাস্তায় ছিল, তারা ইউক্রেইনের পতাকা উড়িয়েছে। তারা বলছিল এটা তাদের এলাকা। তারা কোথাও যাবে না।
তার মতে, ‘খারাপ পরিস্থিতির একটা আশঙ্কা ছিল তাদের মনে। কিন্তু সত্যি সত্যি সেটা ঘটতে শুরু করেছে, এখনও এটা কেউ বিশ্বাস করে উঠতে পারছে না।’
এদিকে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী বলেছে তারা পাঁচটি রুশ বিমান ও একটি হেলিকপ্টার গুলি করে ভূপাতিত করেছে।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘শান্ত থাকুন ও ইউক্রেনের রক্ষকদের ওপর বিশ্বাস রাখুন।’
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের বিমান ভূপাতিত হওয়ার খবর অস্বীকার করেছে।
মস্কোর স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ৫৫ মিনিটে ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে সেনা অভিযান চালানোর ঘোষণা দেন। এর কয়েক মিনিট পরেই ইউক্রেনে বোমা এবং মিসাইল হামলা শুরু হয় বলে খবর প্রকাশিত হয়।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে জরুরি সাইরেন বাজানো হয় এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায় যে মহাসড়কগুলোতে শহর ছেড়ে যেতে চাওয়া মানুষের গাড়ির ভিড়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেকেই আতঙ্ক প্রকাশ করে মন্তব্য করেছেন যে তারা বোমা থেকে সুরক্ষা পেতে আশ্রয় কেন্দ্র এবং বেজমেন্টে আশ্রয় নিচ্ছেন।
কিয়েভে বৃটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ানের সাংবাদিক লুক হার্ডিং টুইট করেছেন যে রাস্তায় অপেক্ষাকৃত কম মানুষ দেখা যাচ্ছে এবং মানুষকে ক্যাশ মেশিনগুলোতে লাইন দিতে দেখা যাচ্ছে।
এসি
আরও পড়ুন