ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

পুতিনকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ বললেন বাইডেন, কড়া প্রতিক্রিয়া মস্কোর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৫৮, ১৭ মার্চ ২০২২ | আপডেট: ১৩:০৪, ১৭ মার্চ ২০২২

জো বাইডেন ও ভ্লাদিমির পুতিন

জো বাইডেন ও ভ্লাদিমির পুতিন

ইউক্রেনে আগ্রাসন বিষয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে 'যুদ্ধাপরাধী’ বলে অভিহিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জবাবে ত্বরিত এক প্রতিক্রিয়ায় একে 'অগ্রহণযোগ্য' এবং 'ক্ষমার অযোগ্য' অনর্থক বাক্য প্রয়োগ বলে আখ্যা দিয়েছে ক্রেমলিন।

বুধবার হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে প্রথমবারের মত 'যুদ্ধাপরাধী' বলে আখ্যা দেন বাইডেন।

তবে পুতিনকে ওই আখ্যা দেবার বিষয়ে বাইডেনের কোনোরকম পূর্বপ্রস্তুতি ছিল না। বরং একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবেই তিনি তাৎক্ষণিক ওই মন্তব্য করেন।

তবে পরে হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতি দিয়ে বলেছে, জো বাইডেন ‘স্পিকিং ফ্রম হিজ হার্ট’ বা ‘অন্তর থেকে’ ওই কথা বলেছেন।

এদিকে, ক্রেমলিন বাইডেনের এই মন্তব্যকে ‘ক্ষমার অযোগ্য’ বাগাড়ম্বর বলেই আখ্যা দিয়েছে। রুশ মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাসকে বলেন, ‘একজন রাষ্ট্রনেতার কাছ থেকে এ ধরণের অনর্থক বাক্য প্রয়োগ অগ্রহণযোগ্য এবং ক্ষমার অযোগ্য বলে আমরা বিশ্বাস করি। বিশেষ করে, যাদের ছোড়া বোমায় সারা দুনিয়ায় হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে।’

এদিকে, বাইডেনের ওই বক্তব্যের মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সম্পর্কে উত্তেজনার পারদ নতুন করে আরো একটু চড়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

জানা গেছে, ওইদিন ওয়াশিংটনে জো বাইডেনকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, "মি. প্রেসিডেন্ট, সব কিছু দেখার পর আপনি কি মি. পুতিনকে এখন যুদ্ধাপরাধী বলবেন?"

জবাবের শুরুতেই জো বাইডেন 'না' বললেও, পরে তিনি হঠাৎই মত বদলে জিজ্ঞেস করেন, "আপনি কি জানতে চাইছেন, আমি তাকে বলবো কি না...? ওহ, আমি মনে করি, তিনি একজন যুদ্ধাপরাধী।"

হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি পরে বলেছেন, ইউক্রেনে 'বর্বর' হামলার চিত্র দেখে, আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা না দিয়ে প্রেসিডেন্ট মন থেকেই ওই কথা বলেছেন।

তবে তিনি উল্লেখ করেছেন, এজন্য যুদ্ধাপরাধ কী, তা চিহ্নিত বা শনাক্ত করার জন্য স্টেট ডিপার্টমেন্টের আলাদা আইনি প্রক্রিয়া আছে এবং সে কাজটি পৃথকভাবে চলছে।

অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মার্কিন কংগ্রেসে দেয়া এক ভার্চুয়াল ভাষণে বলেছেন, তার দেশে বর্তমান পরিস্থিতি পার্ল হারবার এবং নাইন ইলেভেনের মত। আর তা মোকাবেলায় পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে আরো সহায়তার আহ্বান জানান তিনি।

জেলেনস্কি পরে ইউক্রেনের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বলেছেন, সিরিয়া, আফগানিস্তান এবং চেচনিয়াতে রাশিয়ার যত সৈন্য মারা গেছে, তার চেয়েও বেশি রুশ সেনা ইউক্রেনে মারা গেছে।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে কৌশলগত ১০০টি মানব-বিধ্বংসী ড্রোন, রকেট ও গ্রেনেড লঞ্চার, রাইফেল, মেশিন গান, বডি আর্মার এবং গোলাবারুদসহ ১০০ কোটি ডলারের সামরিক সরঞ্জাম পাঠাচ্ছে।

বার্তা সংস্থা এপি এই সিদ্ধান্তের সাথে ঘনিষ্ঠ একজন মার্কিন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বুধবার বাইডেন প্রশাসনের এই সামরিক সহায়তা পাঠানোর কথা জানায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন সামরিক বাহিনীর একজন কর্মকর্তা বলেছেন, যেসব অস্ত্র পাঠানো হবে তার মধ্যে আছে সুইচব্লেড ৩০০ নামে ড্রোন, যা মার্কিন বাহিনীর কাছে 'কামিকাজি ড্রোন' নামে পরিচিত। এটি ব্যাকপ্যাকের মত পরা যায় এমন একটি অস্ত্র।

কংগ্রেসের কর্মকর্তারা এনবিসি নিউজকে বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাটি মূলত কোনো 'ব্যক্তির ওপর সুনির্দিষ্ট আঘাতের' জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা। এই ক্ষেপনাস্ত্র বহু মাইল দূরে থেকে সরাসরি তার লক্ষ্যবস্তুতে সঠিকভাবে আঘাত করতে পারে।

বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, মূলত রাশিয়ার নকশায় তৈরি এসব অস্ত্র এখন নোটোভুক্ত কিছু ইউরোপীয় দেশ উৎপাদন করছে।

আর সেজন্যই ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী সহজেই এগুলো ব্যবহার করতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্র- বিবিসি।

এনএস//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি