ইমরান খানকে ‘নির্বাচনের অযোগ্য’ ঘোষণা
প্রকাশিত : ১৯:২১, ২১ অক্টোবর ২০২২
ইমরান খান
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানকে আপাতত ‘নির্বাচনের অযোগ্য’ ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) তোশাখানা মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে সর্বসম্মত রায় দিয়েছে ইসিপির পাঁচ সদস্যের একটি বেঞ্চ।
এতে বলা হয়েছে, অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় ইমরান খান জাতীয় পরিষদের সদস্য হওয়ার অযোগ্য।
ইসলামাবাদে এদিন ইসিপি সচিবালয়ে রায় ঘোষণা করেন পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সিকান্দার সুলতান রাজা।
রায়ে বলা হয়, ইমরান খান আর জাতীয় পরিষদের সদস্য নন এবং তার প্রতিক্রিয়া সঠিক ছিল না। এ কারণে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় জাতীয় পরিষদে তার আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে।
দেশটির সংবাদমাধ্যম ডনের খবর অনুসারে, তোশাখানা রেফারেন্সে ভুল তথ্য দেয়ায় পিটিআই প্রধানকে সংবিধানের ৬৩(১)(পি) ধারা অনুযায়ী পাঁচ বছরের জন্য জাতীয় সংসদ বা প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হওয়ার অযোগ্য ঘোষণা করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন।
রায়ে বলা হয়েছে, ভুল তথ্য দেয়ায় ইমরান খানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলাও শুরু হবে।
সরকারি তোশাখানায় উপহার ও সেগুলোর কথিত বিক্রয় থেকে আয় সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য না দেয়ায় ইমরান খানের বিরুদ্ধে গত আগস্টে একটি মামলা করে জোট সরকার। ক্ষমতাসীন পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের আইনপ্রণেতারা জাতীয় পরিষদের স্পিকার রাজা পারভেজ আশরাফের কাছে এ অভিযোগ জমা দেন। এরপর তিনি পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সেটি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে পাঠান।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় তোশাখানা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৪ সালে। যা পরিচালনা করে দেশটির মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। অন্যান্য দেশের সরকার ও রাজ্যের প্রধান, সংসদ সদস্য, আমলা, কর্মকর্তাসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের দেয়া মূল্যবান উপহার সংরক্ষণ করা হয় এই তোশাখানায়।
নিয়ম অনুসারে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পাওয়া উপহার বা এ জাতীয় অন্যান্য উপকরণগুলোর বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে রিপোর্ট করা বাধ্যতামূলক।
অভিযোগ উঠেছে, পিটিআই ক্ষমতায় থাকাকালে পাওয়া উপহারের যথাযথ বিবরণ প্রকাশ করেননি ইমরান খানের সরকার। এমনকি এ বিষয়ে পাকিস্তান তথ্য কমিশনের (পিআইসি) নির্দেশও উপেক্ষা করেছিল তারা।
পরে, গত ৮ সেপ্টেম্বর ইসিপি’তে জমা দেয়া লিখিত জবাবে ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তার পাওয়া কমপক্ষে চারটি উপহার বিক্রি করার কথা স্বীকার করেন।
পাকিস্তানের সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী জানান, তিনি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ২ কোটি ১৫ লাখ রুপি দেয়ার পরে যে উপহারগুলো সংগ্রহ করেছিলেন, সেগুলো বিক্রি করে প্রায় ৫ কোটি ৮০ লাখ রুপি পেয়েছেন। এসব উপহারের মধ্যে একটি গ্রাফ হাতঘড়ি, এক জোড়া কাফ লিংক, একটি দামি কলম, একটি আংটি এবং চারটি রোলেক্স ঘড়ি ছিল।
এদিকে, নির্বাচন কমিশনের দেয়া এই রায়ের বিরুদ্ধে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আপিল করা হবে বলে জানায় পিটিআই। শুক্রবারই এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাবেন বলেই জানিয়েছিলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক আসাদ উমর।
এনএস//
আরও পড়ুন