নতুন করে ফুঁসে উঠল ইরান, মৃত্যু ৪০০ ছাড়াল
প্রকাশিত : ১৯:৫৫, ২৯ অক্টোবর ২০২২ | আপডেট: ১৯:৫৮, ২৯ অক্টোবর ২০২২
দেশব্যাপী বিক্ষোভের ছয় সপ্তাহের ঢেউ প্রশমিত না হতেই শুক্রবার আবারও রাস্তায় নেমে আসে হাজার হাজার ইরানি। দেশটির দক্ষিণ-পূর্বের জাহেদান শহরে এই বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলিও চালায় নিরাপত্তা বাহিনী।
যাতে এদিন নতুন করে নিহত হন আরও ৮ জন। যা নিয়ে দেশটিতে গত মাসে শুরু হওয়া বিক্ষোভে মৃতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়ালো।
দেশটির ভিন্ন মতাবলম্বীরা বলেছেন, ক্ষমতাসীনরা উত্তরের কুর্দি শহর মাহাবাদের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে এবং তেহরানের কুখ্যাত বাসিজ মিলিশিয়ার অর্ধেক সদস্য বিক্ষোভের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন কার্যকর করার কাজে যোগ দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
অধিকার গোষ্ঠীগুলো বলেছে যে, সরকারের পুলিশ বাহিনী এবং সৈন্যরা গত ২৪ ঘণ্টায় চারটি প্রদেশে কমপক্ষে ৮ জনকে হত্যা করেছে, যা একেবারেই ‘বেআইনি হত্যা’।
ভিন্নমতাবলম্বী কর্মীরা বলেছেন, গত ১৬ সেপ্টেম্বর নৈতিকতার নামে পুলিশ হেফাজতে কুর্দিস্তান প্রদেশের ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনের মৃত্যু হওয়ার পর থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ দমনে এখন পর্যন্ত ৪০০ জনেরও বেশি লোক মারা গেছে।
শুক্রবার মাহাবাদে এই বিক্ষোভের সূত্রপাত হয় মূলত গত বুধবার রাতে নিহত ৩৫ বছর বয়সী বিক্ষোভকারী ইসমাইল মৌলুদির জানাজায় শোক পালনের জড়ো হওাদের মাধ্যমেই। এসময় তারা গভর্নরের কার্যালয়, পুলিশ স্টেশন, ব্যাংক এবং ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানও দখল করে নেয়।
অন্যদিকে, পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর খোররামাবাদের বাইরের লড়াইটা হয় মূলত ১৬ বছর বয়সী কিশোরী নিকা শাহকারামির কবরের কাছে। যেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিকা নিহত হওয়ার পর থেকে তার ঐতিহ্যবাহী ৪০ দিনের শোকের সমাপ্তি পর্যন্ত কয়েক ডজন লোককে চিহ্নিত করা হয়।
বিক্ষোভকারীরা এসময় “যে আমার বোনকে যে হত্যা করেছে, তাকে আমরা শাস্তি দিব, তাকে আমরা শাস্তি দিব” বলে স্লোগান দেয় এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে ধাওয়া করে কিশোরীর সমাধির কাছে একটি সেতুর ওপর নিয়ে যায়।
বিশ্লেষকরা বলেছেন, সহিংসতা আরও খারাপ হবে বলে আশা করেছিলেন তারা। ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউটের ইরান বিশেষজ্ঞ হেনরি রোম বলেছেন, “আমার সন্দেহ, নিরাপত্তা বাহিনী বৃহত্তর মাত্রার সহিংস ঘটনা পরিচালনার বিষয়টি অস্বীকার করেছে।”
হেনরি রোম বলেন, “তারা হয়তো হিসাব করছে যে, প্রতিবাদকারীদের নিবৃত্ত করার পরিবর্তে আরও হত্যাকাণ্ড উৎসাহিত করবে- যদি সেই হিসাব পরিবর্তন হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও সহিংস হয়ে উঠবে।”
এদিকে, ইরানে রক্তপাত বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। অধিকার সংস্থাটি বলছে, “সিদ্ধান্তমূলকভাবে মীমাংসায় ব্যর্থতা কেবলমাত্র ইরানি কর্তৃপক্ষকে শোক পালনকারী এবং বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে আরও দমন পীড়ন চালাতে উৎসাহিতই করবে।” সূত্র- আরব নিউজ।
এনএস//
আরও পড়ুন