ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ট্রাম্প-হ্যারিস, হাড্ডাহাড্ডি লড়াইর আভাস

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪৬, ৩ নভেম্বর ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে গুরুত্বপূর্ণ সুইং স্টেটগুলো চষে বেড়াচ্ছেন ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

স্থানীয় সময় শনিবার ব্যাটেল গ্রাউন্ড হিসেবে পরিচিত নর্থ ক্যারোলিনা রাজ্যে যাচ্ছেন দুই প্রার্থী। এ নিয়ে টানা চতুর্থ দিনের মতো একই রাজ্যে পাল্টাপাল্টি প্রচারণা চালাচ্ছেন কমলা ও ট্রাম্প। 

হারিকেন হেলেনে বিধস্ত নর্থ ক্যারোলিনার সবচেয়ে বড় শহর শার্লটেতে রক তারকা জন বন জোভির সাথে প্রচারণা চালান কমলা হ্যারিস। অপরদিকে শার্লটের পশ্চিমে গ্যাস্টোনিয়ায় সমাবেশ করবেন ট্রাম্প।  

এরপর সন্ধ্যায় অঙ্গরাজ্যটির গ্রিনসবরো শহরে যাবেন রিপাবলিকান এই প্রার্থী। বর্তমানে নর্থ ক্যারোলিনায় ৪৮ দশমিক ৪ শতাংশ সমর্থনে এগিয়ে আছেন ট্রাম্প। অন্যদিকে ৪৭ দশমিক ১ শতাংশ ভোটারদের পছন্দ কমলাকে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই রাজ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

পৃথিবীর সবচেয়ে জটিল নির্বাচন ব্যবস্থার একটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। যেখানে জনগণের সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া প্রার্থী জয়ের নিশ্চয়তা পায় না। বরং প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন একদল কর্মকর্তার পরোক্ষ ভোটে। জটিল এই পদ্ধতিকে বলা হয় ইলেক্টোরাল কলেজ সিস্টেম। এছাড়া নির্বাচনের দিন নির্ধারণ থেকে শুরু করে ভোট গণনার পদ্ধতিতেও রয়েছে ভিন্নতা। 

প্রতি চার বছর পর নভেম্বরের প্রথম সোমবারের পরদিন মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট হয়। কিন্তু ১৯৪০ সাল পর্যন্ত একেক অঙ্গরাজ্যে ভোট হতো ভিন্ন তারিখে। এতে নানা সংকট সৃষ্টি হওয়ায় ১৯৪৫ সালে একটি নির্দিষ্ট দিনে নির্বাচন আয়োজনের আইন পাস হয়। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্রে কৃষিভিত্তিক সমাজ থাকায় নভেম্বর মাসকে বেছে নেওয়া হয় ভোটের জন্য। কারণ নভেম্বরের শুরুতে কৃষকের ঘরে ফসল উঠে। এসময় অবসরে থাকেন বেশিরভাগ মানুষ। 

যুক্তরাষ্ট্রে এবার ভোটার সংখ্যা প্রায় ২৫ কোটি। তবে জনগণের এই ভোট সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতে পারে না। যুক্তরাষ্ট্রে দুই ধরণের ভোট রয়েছে। একটি জনগণের মাথাপিছু ভোট, বা পপুলার ভোট। অপরটি অঙ্গরাজ্যভিত্তিক ইলেকটোরাল কলেজ ভোট। মার্কিন গণতন্ত্রে পপুলার ভোটের চেয়ে ইলেকটোরাল কলেজ ভোট অনেক বেশি ক্ষমতাশালী।

কলেজ বলতে এখানে একদল লোককে বোঝায়, যারা নির্বাচক বা ইলেকটরের ভূমিকা পালন করে। সাধারণ নাগরিকরা ভোট দিয়ে ইলেকটরদের নির্বাচন করে। আর এই ইলেকটরদের কাজ হলো প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা। এই পদ্ধতির কারণেই কোন প্রার্থী জনগণের কাছ থেকে বেশি ভোট পেয়েও প্রেসিডেন্ট হতে পারেন না। 

মূলত যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উভয় কক্ষ মিলিয়ে রাজ্যটির যত প্রতিনিধি, সেটাই হলো ইলেকটরদের সংখ্যা। হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসে একটি রাজ্যের প্রতিনিধি সংখ্যা নির্ভর করে রাজ্যটির জনসংখ্যার ওপর। অপরদিকে সিনেটে প্রতি রাজ্যের দুটি করে আসন থাকে। সব মিলিয়ে ৫০টি রাজ্যের ৪৩৫ জন রিপ্রেজেন্টেটেটিভ ও সেইসাথে ১০০ জন সিনেটর। এছাড়া ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়ার তিনজন ইলেকটর রয়েছে। 

সব মিলিয়ে ৫০ রাজ্যে ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৩৮টি। জয়ের জন্য একজন প্রার্থীর দরকার হয় ২৭০টি ভোট। 

ইলেকটোরাল ভোটের সবচেয়ে বিতর্কিত এবং জটিল বিষয় হলো উইনার টেক অল গণনা পদ্ধতি। এর অর্থ, যেই রাজ্যে জনগণের ভোটে যেই প্রার্থী এগিয়ে থাকবেন, সেই রাজ্যের সবগুলো ইলেক্টোরাল ভোট তিনি পাবেন। যেসব রাজ্যে ইলেকটোরাল ভোট বেশি, সেগুলোতেই জিততে মরিয়া থাকেন প্রার্থীরা। 

এ বছর সবচেয়ে বেশি ৫৪টি ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ায়। অপরদিকে সবচেয়ে কম ইলেকটোরাল ভোট ভারমন্টে। 

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি