চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব বাছাই হয় যেভাবে
প্রকাশিত : ১১:৩৭, ১০ অক্টোবর ২০১৭
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সম্মেলনের আর মাত্র সপ্তাহ খানেক বাকি। ধারণা করা হচ্ছে, বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আবারো কমিউনিস্ট পার্টির নেতা নির্বাচিত হবেন। প্রতি পাঁচ বছর পর পৃথিবীর দৃষ্টি থাকে চীনের উপর। কারণ প্রতি পাঁচ বছর পর চীনের কমিউনিস্ট পার্টি তাদের নেতৃত্ব নির্বাচন করে।
কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে যারা আসবেন তারা ১৩০ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি পরিচালনা করবে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ১৯তম সম্মেলন শুরু হবে আগামী ১৮ অক্টোবর। ধারণা করা হচ্ছে, চীনের প্রেসিডেন্ট এবং কমিউনিস্ট পার্টির বর্তমান নেতা শি জিনপিং তাঁর পদে অপরিবর্তিত থাকবেন। গোটা চীনে কমিউনিস্ট পার্টির ২৩০০ প্রতিনিধি আছে। কিন্তু ১৮ অক্টোবরের সম্মেলনে এদের মধ্য থেকে ১৩ জন অংশ নিতে পারবেন না। কারণ `যথাযথ আচরণ` না করায় এ ১৩ জনকে সম্মেলনে যোগদানের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি সবাই সম্মেলনের জন্য বেইজিং-এর গ্রেট হলে সমবেত হবেন।
এ সম্মেলনে বেশ গোপনীয়তার সঙ্গে সারাদেশ থেকে আসা প্রতিনিধিরা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কামিটির জন্য ২০০ সদস্য নির্বাচিত করবেন। এছাড়া কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি ২৪ সদস্য বিশিষ্ট পোলিট ব্যুরো নির্বাচিত করবে।
এরপর সে পোলিটব্যুরো থেকে সাত সদস্য বিশিষ্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি করবে কেন্দ্রীয় কমিটি। যদিও বিভিন্ন সময় এ সংখ্যা কিছুটা কম-বেশি হতে পারে।চীনের রাষ্ট্র ক্ষমতা পরিচালনার জন্য এ স্ট্যান্ডিং কমিটি হচ্ছে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। যদিও নির্বাচনের কথা বলা হয়, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। পলিটব্যুরো কিংবা স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য কারা হবেন সেটি আগেই বাছাই করে রেখেছে বর্তমান নেতৃত্ব।
কেন্দ্রীয় কমিটি সেটি অনুমোদন করবে মাত্র। স্ট্যান্ডিং কমিটির কর্মপদ্ধতি সবসময় গোপন থাকে। তবে ধারণা করা হয় স্ট্যান্ডিং কমিটি প্রায়ই বৈঠকে বসে। সে বৈঠকে সিনিয়র নেতারা প্রথমে বক্তব্য রাখেন এবং তাদের মতামত তুলে ধরেন। কোনো একটি বিষয়ে সবাই যাতে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারে সেজন্য জোর দেয়া হয়।কিন্তু যদি সেটা না হয়. সেক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতকে প্রাধান্য দেয়া হয়। কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হলে সবাই সেটি মানতে বাধ্য থাকে। বিভিন্ন নীতি নির্ধারন বিষয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় বিতর্ক এবং মতপার্থক্য হলেও সেগুলো জনসম্মুখে আসে না ।কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি দলটির শীর্ষ নেতা অর্থাৎ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে।
দলের সাধারণ সম্পাদকই দেশের প্রেসিডেন্ট হন। ধারনা করা হচ্ছে, চীনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আবারো দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবেন এবং তিনি দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে থাকবেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কমিউনিস্ট পার্টির কিছু পদের ক্ষেত্রে অলিখিত নিয়ম-কানুন নির্ধারণ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে ধারণা করা হচ্ছে পোলিটব্যুরোর অধিকাংশ সদস্য, যাদের বয়স ৬৮ বছরের বেশি হয়েছে, তারা হয়তো পদ ছেড়ে দেবেন। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন চীনের দুর্নীতি বিরোধী প্রতিষ্ঠানের প্রধান ওয়াং কিশান। তিনি বর্তমান প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এর কাছের লোক। সেজন্য তাকে হয়তো তাঁর কাজ চালিয়ে যাবার জন্য বলা হতে পারে।
সূত্র:বিবিসি
এম/এআর
আরও পড়ুন