রোহিঙ্গাদের ত্রাণ দিতে তিন এনজিওর প্রতি নিষেধাজ্ঞা
প্রকাশিত : ২০:০৪, ১১ অক্টোবর ২০১৭ | আপডেট: ১৭:২১, ১২ অক্টোবর ২০১৭
রোহিঙ্গাদের ত্রাণ বিতরণের কাজে বেসরকারি তিন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার (এনজিও) উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। এগুলো হলো মুসলিম এইড বাংলাদেশ, ইসলামিক রিলিফ এবং আল্লামা ফজলুল্লাহ ফাউন্ডেশন।
এই সংস্থাগুলো ত্রাণ বিতরণের নামে ভিন্ন কিছু করছে বলে অভিযোগ আছে।
আজ বুধবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়।
এ বিষয়ে কমিটির সদস্য মাহজাবিন খালেদ গণমাধ্যমকে বলেন, তিনটি এনজিওকে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ত্রাণ তৎপরতা চালাতে নিষেধ করা হয়েছে। সেখানে কাজ করতে হলে সরকারের এনজিও বিষয়ক ব্যুরো থেকে অনুমতি নিতে হয়, কিন্তু ওই এনজিওগুলো কোনো অনুমোদন না নিয়েই কাজ করছিল। অনেকে (পারমিশন) না নিয়ে সরাসরি চলে যাচ্ছে। সেগুলোও বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈঠকে যেসব রোহিঙ্গা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে বসবাস করছে তাদেরকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি যারা নতুনভাবে প্রবেশ করেছে তাদেরকেও ফিরিয়ে নেওয়ার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার সুপারিশ করা হয়। এছাড়া রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী হিসেবে চিহ্নিত করার যে অপচেষ্টা চালাচ্ছে মিয়ানমার সরকার তার পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা ইস্যুকে বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
বৈঠকে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি, জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রস্তাব উত্থাপন এবং নিরাপত্তা পরিষদে এ ইস্যুতে ১৫টি দেশের মধ্যে ১২ দেশের অকুণ্ঠ সমর্থন এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের বিশেষ সম্মান প্রদর্শন বাংলাদেশের কূটনৈতিক সফলতা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
এছাড়া রোহিঙ্গারা যে এদেশে অস্থায়ী ভিত্তিতে বসবাস করছে এ বিষয়টি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রচার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর মাধ্যমে মিয়ানমারের উপর চাপ অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। এ সময় প্রতিবেশী দেশ হিসেবে মিয়ানমার ও ভারতসহ নিকটবর্তী অন্য দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিবেশীসুলভ বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রাখার উপরেও গুরুত্বারোপ করা হয়।
বৈঠকে রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠী সম্পর্কে দেশের জনগণকে স্বচ্ছ ধারণা দিতে পাঠ্যপুস্তকে একটি অধ্যায় সংযোজন করতে মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়।
আসন্ন কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনসহ (সিপিএ) বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশের যেসব প্রতিনিধি যোগ দেবেন তারা যাতে রোহিঙ্গা ইস্যুটি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উত্থাপন করতে পারেন সেলক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে একটি সংক্ষিপ্তসার সরবরাহ করার সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সভাপতি দীপু মনির সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, মুহাম্মদ ফারুক খান, গোলাম ফারুক খন্দকার প্রিন্স এবং মাহজাবিন খালেদ অংশ নেন। উল্লেখ্য, রোহিঙ্গাদের মধ্যে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মসূচি সমন্বয়ে বর্তমানে সেনাবাহিনী কাজ করছে।
কেআই/ডব্লিউএন
আরও পড়ুন