বাংলাদেশের হাই কমিশনারকে পাকিস্তানের পাল্টা তলব!
প্রকাশিত : ২২:২৫, ৩ নভেম্বর ২০১৭
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে নির্মিত একটি ভিডিও পাকিস্তান হাই কমিশনের ফেসবুকে প্রচারের ঘটনায় ঢাকায় দেশটির হাই কমিশনারকে তলব করা হয়। জবাবে ইসলামাবাদও পাল্টা বাংলাদেশের হাই কমিশনারকে তলব করেছে।
ইসলামাবাদে বাংলাদেশের নিযুক্ত হাই কমিশনার তারিক আহসানকে বৃহস্পতিবার তলব করেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া ও সার্ক বিষয়ক মহাপরিচালক।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “উৎস স্পষ্ট নয় এমন একটি ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদলিপিতে কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত শব্দের ব্যবহার নিয়ে আমাদের প্রতিবাদ জানাতে এটা করা হয়। হাই কমিশনারকে বলা হয়েছে যে, তৃতীয় পক্ষের শেয়ার করা একটি ভিডিওর দায়ভার ঢাকায় পাকিস্তান হাই কমিশনকে দেওয়া যায় না।”
সম্প্রতি ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনের ফেসবুক পেজে শেয়ার করা একটি ভিডিওতে বলা হয়, “শেখ মুজিবুর রহমান নন, জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক। আর বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর তাজউদ্দীন আহমেদ এ ব্যাপারে তখনকার মেজর জিয়াকে সমর্থন দেন।”
১৩ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছিল পাকিস্তান অ্যাফেয়ার্স নামে একটি ফেসবুক পেইজে।
পাকিস্তান হাইকমিশনের ফেসবুক পেইজে ওই ভিডিও শেয়ার করার পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য গত মঙ্গলবার ঢাকায় পাকিস্তানের হাই কমিশনার রফিউজ্জামান সিদ্দিকীকে তলব করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পররাষ্ট্র সচিব (বাইলেটারাল ও কনস্যুলার) কামরুল আহসান তার হাতে বাংলাদেশের প্রতিবাদলিপি ধরিয়ে দেন এবং ‘ইতিহাস বিকৃতির এই চেষ্টার’ বিষয়ে সতর্ক করে দেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে ‘অসৎ উদ্দেশ্যে বিভ্রান্তিকর’ ভিডিও প্রচারের ঘটনায় ইসলামাবাদকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে বলা হয়।
ওই দিন তলবে হাজিরা দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নে হাই কমিশনার রফিউজ্জামান ‘নো কমেন্টস’ বলে চলে যান।
তবে সচিব কামরুল আহসান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, পাকিস্তানের হাই কমিশনার দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, এ ঘটনা ‘অনিচ্ছাকৃত’ এবং তারা বিষয়টি ‘বুঝে উঠতে পারেননি’। তারা ভিডিওটি তাদের ফেসবুক পেইজ থেকে সরিয়েও ফেলেছেন।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলাতে ঢাকার পক্ষ থেকে বারবার আহ্বান জানানো হলেও ইসলামাবাদ তা থেকে সরে আসেনি। এ কারণে গত দুই বছরে আরও কয়েকবার পাকিস্তানের হাই কমিশনারকে ডেকে বাংলাদেশ সতর্ক করেছে।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বার বার প্রতিবাদ জানানোর পরও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ও দেশটির বিভিন্ন সংস্থার অপপ্রচার বন্ধ হয়নি। হাই কমিশনার সিদ্দিকীকে বলা হয়েছে, তার দেশ প্রতিষ্ঠিত কূটনেতিক শিষ্টাচারের প্রতি সম্মান দেখাবে এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এ ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবে বলেই ঢাকা আশা করে।
কেআই/ডব্লিউএন
আরও পড়ুন