ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

মার্কিন ঘোষণার পর হামলা শুরু এরদোগানের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৪০, ১৭ জানুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১৩:৩৫, ১৭ জানুয়ারি ২০১৮

সিরিয়ার উত্তরপূর্ব সীমান্তে কুর্দি-প্রধান মিলিশিয়াদের সমন্বয়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনী গঠনের খবর চাউর হওয়া মাত্রই অঞ্চলটিতে এবার সামরিক অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদাগান। এক টেলিভিশন ভাষণে তিনি বলেন, সিরিয়ায় কুর্দি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে তুর্কী সামরিক অভিযান `অত্যাসন্ন`।

এদিকে কুর্দী-মিলিশিয়াদের সমন্বয়ে বিএসএফ গঠনের মার্কিন ঘোষণা আসার পরই তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লামিদিরি পুতিন ও সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাসার-আল আসাদ। তবে সবচেয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান। তিনি বিএসএফ কে `সন্ত্রাসী বাহিনী` বলে হিসেবে আখ্যায়িত করে একে `আঁতুড়ঘরেই ধ্বংস করে দেবার` হুমকি দিয়েছেন।

এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, উত্তর পশ্চিম সিরিয়ায় কুর্দি প্রধান এলাকায় ইতোমধ্যে হামলা শুরু করেছে তুরস্কের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। এছাড়া ওয়াইপিজি নামে কুর্দি মিলিশিয়াদের ওপর এরই গোলাবর্ষণ শুরু হয়েছে। মার্কিন এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে তার দীর্ঘদিনের মিত্র তুরস্ক এত ক্ষিপ্ত কেন? এর বড় কারণ, তুরস্কের মোট জনসংখ্যার ১৫-২০ শতাংশ কুর্দী জনগোষ্ঠী। তুরস্কে প্রায় প্রতিবছরই কুর্দীরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্ট করে থাকে। তবে তুরস্কের সরকার তাদের সামরিক অভিযান ও গ্রেফতারের মাধ্যমে দমিয়ে রাখছে।

বিশ্লেষকদের ধারণা, তুরস্ক সীমান্তের কাছাকাছি কুর্দীদের একটি শক্তিশালী বাহিনী থাকলে তা তুরস্কের অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলায় ব্যঘাত ঘটতে পারে। তা ছাড়া সীমান্তের ধারে কোন কুর্দী সামরিক বাহিনী থাকলে, তারা তুরস্কের কুর্দীদের সামরিক সহায়তা দিয়ে দেশটিতে গৃহযুদ্ধও বাঁধিয়ে দিতে পারে এমন আশঙ্কা তুরস্কের কর্তাব্যক্তিদের। এদিকে তার দীর্ঘদিনের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রকে বিষয়টি বারবার অবহিত করলেও, ওয়াশিংটন বিষয়টি কানে নিচ্ছে না।

ওয়াশিংটনের ভাষ্য, ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ওয়াইপিজি (কুর্দীরা) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দিয়েছে। ওযাশিংটনের ভাষায় , এসডিএফ নামে এই নতুন মিলিশিয়ার কাজ হবে তুরস্ক ও ইরাকের সাথে সিরিয়ার সীমান্ত, এবং ইউফ্রেটিস নদীর উপত্যকাকে নিরাপদ রাখা। এটিই কার্যত সিরিয়ার সরকারি সৈন্য ও এসডিএফের নিয়ন্ত্রিত এলাকার বিভাজন রেখা। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, একটি শক্তিশালী সীমান্তরক্ষী বাহিনী এখানে ইসলামিক স্টেটের চলাচল বন্ধ করতে পারবে।

এদিকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ বলেছেন, এ বাহিনী হলে তা সিরিয়ার বিভক্তি ডেকে আনতে পারে। তাই এ বাহিনী গঠনের তীব্র বিরোধীতা করছি আমরা।

উল্লেখ্য, কুর্দিরা এমন একটি জাতিগোষ্ঠী যারা সিরিয়া, ইরাক, ইরান, আরমেনিয়া এবং তুরস্ক - এই পাঁচটি দেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় বাস করে। এদের অধিকাংশই সুন্নি মুসলিম নামে পরিচিত। তবে তাদের স্বতন্ত্র জীবনধারা, ভাষা এবং সংস্কৃতি রয়েছে। তারা কখনোই নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র পায় নি। ১৯৭৮ সালে ওয়াইজিরা সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করার পর এ পর্যন্ত অন্তত ৪০ হাজার লোক নিহত হয়েছেন। তাই স্বাধীনতার দাবি থেকে অনেকটাই পিছিয়ে এসেছে কুর্দীরা। তবে তুরস্ক মনে করে সুযোগ পেলেই কুর্দীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে।

সুত্র: বিবিসি
এমজে/

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি