যুক্তরাষ্ট্রে বেকার হওয়ার শঙ্কায় ১০ লাখ শ্রমিক
প্রকাশিত : ২১:৫৪, ২০ জানুয়ারি ২০১৮
যুক্তরাষ্ট্রে হঠাৎ করে সরকারি সেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশটিতে কমপক্ষে ১০ লাখ লোক বেকার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাই ভোগছে। সর্বশেষ ২০১৩ সালের প্রায় সাড়ে আট লাখ কর্মীকে সাময়িক ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল। এবার এ সংখ্যা ১০ লাখে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে সরকারি কাজে জড়িতরা সাময়িক সময়ের জন্যও বেকার হয়ে পড়লে দেশটিতে এর ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে উঠে এসেছে। নিচে তা তুলে ধরা হলো-
হোয়াইট হাউস:
মার্কিন প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে শুক্রবার জানানো হয়েছে, তাদের এক হাজার ৭১৫ কর্মীর মধ্যে এক হাজার ৫৬ জনকে ছুটিতে পাঠানো হবে। আর জরুরি বিবেচনায় ৬৫৯ কর্মী তাদের নিয়মিত দায়িত্ব পালন করবেন। এতে হোয়াইট হাউজে স্থবিরতা নেমে আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পত্রিকাগুলো।
সামরিক বাহিনী:
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র্রের অভ্যন্তরে অচলাবস্থার প্রভাব পড়লেও দেশ ও দেশের বাইরে কর্মরত সেনা-বিমানসহ প্রতিরক্ষা বাহিনীতে এর কোন ধরণের প্রভাব পড়বে না। ইরাক, সিরিয়া ও আফগানিস্তানসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নানা দায়িত্ব পালন করে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী। এই অচলাবস্থা তাদের কার্যক্রমে প্রভাব ফেলবে না বলে জানিয়েছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর। তবে অচলাবস্থা সপ্তাহ গড়ালে সামরিক বাহিনীর প্রায় ১৩ লাখ সক্রিয় সদস্যকে বিনা বেতনে দায়িত্ব পালন করতে হতে পারে।
ওয়ালস্ট্রিট:
দেশটিতে অচলাবস্থার ফলে ওয়ালস্ট্রিটের স্টক মার্কেট নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কিছু কর্মীকে অবৈতনিক ছুটিতে যেতে হবে। এতে ওয়ালস্ট্রিটের উপর মারাত্মক প্রভাব দেখা দিতে পারে। দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা কিছুটা হলেও ধাক্কা খাবে বলে মনে করছে পত্রিকাগুলি।
পর্যটন খাত:
সরকার এ ধরনের অচলাবস্থায় পাসপোর্ট ও ভিসা প্রক্রিয়াও বন্ধ হয়ে যায়। এটি পর্যটন খাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। শুধু বিদেশি পর্যটক নয়; দেশি পর্যটকদেরও হারাতে হয় ট্যুরিস্ট স্পটগুলোকে। এর আগে ২০১৩ সালের শাটডাউনে লিঙ্কন মেমোরিয়াল, কংগ্রেস লাইব্রেরি এবং জাতীয় আর্কাইভের মতো জনপ্রিয় পর্যটন স্থাপনাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
ট্রাম্পের রুশ সংযোগের তদন্ত:
নির্বাচনকালে ট্রাম্পের রুশ সংযোগ তদন্তে কাজ করছেন মার্কিন বিচার বিভাগের স্পেশাল কাউন্সেল রবার্ট মুলার। সরকারি কাজে অচলাবস্থা নেমে আসলেও এফবিআইয়ের সাবেক প্রধান তার তদন্ত চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। বিচার বিভাগের একজন মুখপাত্র যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী গণমাধ্যম সিএনএন’কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কর বিভাগ:
অচলাবস্থার ফলে কর বিভাগের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়বে। প্রতিষ্ঠানটির অধিকাংশ কর্মী সাময়িক ছুটিতে থাকবেন। তবে সরকার চাইলে বিকল্প উপায়ে কর্মীদের বেতন পরিশোধ করতে পারবে। এর আগে ২০১৩ সালের শাটডাউনে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগের প্রায় ৯০ শতাংশ কর্মীকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল।
ডাক বিভাগ:
অচলাবস্থা চলাকালেও জরুরি সেবা ডাক বিভাগ চালু থাকবে। ফলে লোকজন ডাক বিভাগের সেবা পাবেন।
ওয়াশিংটন ডিসি
২০১৩ সালের শাটডাউনে রাজধানী ওয়াশিংটনের ওপর প্রভাব পড়েছিল। তবে এবার ওই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে বদ্ধপরিকর মেয়র মুরিয়েল বাউসার। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, কর্তৃপক্ষ জনগণকে তাদের প্রত্যাশিত সেবা দেওয়া অব্যাহত রাখবে।
সুত্র: আল-জাজিরা, বিবিসি
এমজে/
আরও পড়ুন