শতাধিক নারী ধর্ষণ
সেই নাসেরের ১৭৫ বছরের কারাদণ্ড
প্রকাশিত : ১১:০৮, ২৫ জানুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১১:১০, ২৫ জানুয়ারি ২০১৮
মেডিকেল সেবা দেওয়ার নামে শতাধিক নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের নারী জিমন্যাস্ট দলের চিকিৎসক ল্যারি নাসেরকে ৪০ থেকে ১৭৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত।
গত এক সপ্তাহ ধরে চলা বেশ কয়েকজন নারী জিমন্যাস্টের আবেগঘন স্বাক্ষ্যদানের পর গতকাল দেশটির আদালত ল্যারি নাসেরকে ১৭৫ পর্যন্ত কারাদণ্ডের আদেশ দেন। চিকিৎসা পেশার ছদ্মবেশে শতাধিক নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় ল্যারি নাসেরকে এই দণ্ড দেন আদালত।
মিশিগান অঙ্গরাজ্যের একটি আদালতের বিচারক রোজামেরি অ্যাকুইলিনা বলেন, আমি এইমাত্র আপনার মৃত্যুদণ্ডাদেশে স্বাক্ষর করলাম। এত নারী ধর্ষণের ঘটনায় যাবজ্জীবনের কারাদণ্ড যথেষ্ট নয় জানিয়ে বিচারক অবশেষে এই রায় দেন। আর আপনার মৃত্যুদণ্ডের সমান দণ্ড হলো ৪০ থেকে ১৭৫ বছরের কারাদণ্ড। আপনি আর কখনো, জেলের বাইরে হাঁটতে পারবেন না। আপনি একটা আতঙ্ক। আপনি যেখানেই হাঁটবেন, সেখানেই ধ্বংস নেমে আসবে।
রায় ঘোষণার কিছুক্ষণ আগে ল্যারি নাসের জিমন্যাস্ট দলের সব নারী সদস্যের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। এই তালিকায় আছেন, অলিম্পিক সোনাজয়ী সিমোন বিলিস, আলী রয়সম্যান, গ্যাবি ডগলাস এবং ম্যাকলি ম্যারনি। এসময় তিনি বলেন, আমি যা করেছি, ক্ষমা চাওয়ার মতো কোন শব্দ নেই।
রায় ঘোষণার সময় আদালত বলেন, এটা কোন চিকিৎসা নয়। এটি মেডিকেল সেবা নয়। আপনার কাছে আমি আমার কুকুরকেও পাঠাবো না। এর আগে নারী দলের স্বাস্থ্য পরীক্ষক ল্যারি নাসেরের বিরুদ্ধে শতাধিক নারী আদালতে মুখ খোলেন। এই সময় কয়েক ডজন নারী জিমন্যাস্ট তার বিরুদ্ধে আদালতে স্বাক্ষী দিয়েছেন। এই সময় অনেককে কান্নায় ভেঙ্গে পড়তে দেখা গেছে। ৫৪ বছর বয়সী নাসের কিভাবে তাদের যৌন নির্যাতন করেছেন সে বিষয়ে তারা বর্ণনা দেন। এসময় তারা নাসেরের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।
এক নারী জিমন্যাস্ট বলেন, নাসের আমাকে শতাধিক বার যৌন নির্যাতন করেছে। শুধু তাই নয়, আমার ফিটনেস ঠিক নয়, এমন ঘোষণা দিয়ে আমাকে দল থেকে বাদ দেওয়ার হুমকি দিয়ে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে সে। সে আমাকে অন্ধ করে দেওয়ারও হুমকি দিয়েছিল। সে এভাবে আমাকে শতাধিক বার ধর্ষণ করেছে।
এইসময় নাসেরের যৌন নির্যাতনের স্বীকার হওয়া এক নারী সদস্যের মা অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ে ২২ বছর বয়স থেকে তার যৌন নির্যাতনের স্বীকার। বেঁচে থাকলে তার বয়স বর্তমানে ৩২ বছর হতো। সে প্রতিদিনই আমার কাছে এসে নাসেরের যৌন নির্যাতন বিষয়ে বলতো আর কাঁদতো। ইতোমধ্যে তার যৌন নির্যাতনের স্বীকার হয়ে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
আরেক জিমন্যাস্ট অভিযোগ করে বলেন, নাসের তার শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় ম্যাসেজ করতো। কিছু বললে, সে তাকে ফিটনেসহীন দেখিয়ে দল থেকে বাদ করে দেওয়ার হুমকি দিত বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এসময় শুনানিতে অংশ নিয়ে প্রতিটি নারীই তার সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।
আরও পড়ুন