স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ
প্রকাশিত : ১৫:৩১, ২৫ জানুয়ারি ২০১৮
রোদের দেখা না পাওয়া আর দীর্ঘদিন ধরে বন্দিদশার ফলে উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের শারীরিক ও মানষিক স্বাস্থ্য মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এমনকি এভাবে চলতে থাকলে যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তার দুই চিকিৎসক।
এদিকে তার স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে তাকে দ্রুত কোন নিরাপদ হাসপাতালে নেওয়া প্রয়োজন বলেও চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন। তবে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে ইকুয়েডরের দূতাবাস থেকে বের হওয়া মাত্র গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছে ব্রিটেনের পুলিশ। তাই আপাদত কোন হাসপাতালে যেতে পারছেন না অ্যাসাঞ্জ।
বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সোন্ড্রা ক্রসবি ও লন্ডনের মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ ব্রোক কিসোলাম গত অক্টোবরে ২০ ঘণ্টা ধরে তার শারীরিক পরীক্ষা করেন। গার্ডিয়ানে লেখা এক নিবন্ধে ওই দুই চিকিৎসক জানান, তার শরীরে চালানো পরীক্ষার ফল প্রকাশ না করা আমাদের পেশাগত দায়িত্ব। তবে তাকে দ্রুত খোলা আলো-বাতাসের কাছে নেওয়া না হলে যে কোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
তবে ওই দুই চিকিৎসক তার শারীরিক অবস্থার বিস্তারিত কিছু না বললেও গত পাঁচ বছর ধরে লন্ডনের ইক্যুয়েডর দূতাবাসের মধ্যে আটকে থেকে তার শারীরিক ও মানষিক অবস্থা অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েছে। তবে আর কতদিন ওই দূতাবাসে তিনি থাকতে পারবেন, সে বিষয়ে ইকুয়েডর বলছে অ্যাসাঞ্জ অনির্দিষ্টকালের জন্য দূতাবাসটিতে থাকতে পারবেন।
তাকে শিগগিরই এমআরআই করানো প্রয়োজন বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে অ্যাসাঞ্জ কাঁধের ব্যথায় ভোগছেন। এ ছাড়া তাঁর ফুসফুসেও মারাত্মক সমস্যা ধরা পড়েছে। তবে ২০১২ সালে ওই দূতাবাসে আশ্রয় নেওয়ার পর তাকে দূতাবাসটির বাইরে বের হতে দেওয়া হয়নি। ব্রিটেনের পুলিশ তাকে গ্রেফতারে দূতাবাসের বাইর সার্বক্ষণিক পাহাড়া দিচ্ছে। এদিকে ইকুয়েডরের পক্ষ থেকে অ্যাসাঞ্জকে এমআরই করানোর সুযোগ দেওয়ার জন্য লন্ডনকে অনুরোধ জানালেও, তা প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটি।
এদিকে এমআরই পরীক্ষার জন্য দূতাবাস থেকে বের হলেই অ্যাসাঞ্জকে গ্রেফতার করবে ব্রিটেনের পুলিশ। এরপর তাকে তুলে দেওয়া হবে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে। যেখানে ইরাক যুদ্ধসহ সিআইএর গুরুত্বপূর্ণ নথি প্রকাশের দায়ে তার দীর্ঘদিনের জেল হতে পারে আশঙ্কা অ্যাসাঞ্জ সমর্থকদের।
এর আগে ২০১৬ সালে উইকিলিকস অ্যাসাঞ্জের মেডিকেল রেকর্ড প্রকাশ করেছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতার মানসিক অবস্থা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এভাবে যদি দূতাবাসে তাঁকে আরও সময় থাকতে হয়, তাহলে তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য হুমকিতে পড়বে।
অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত অ্যাসাঞ্জ যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অতি গোপনীয় অনেক নথি ফাঁস করে দিয়ে ঝড় তোলেন। এর কিছুদিন পর সুইডেনে তাঁর বিরুদ্ধে এক নারী ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় বিচারের জন্য যুক্তরাজ্য সরকার ২০১০ সালে তাঁকে সুইডেনের কাছে হস্তান্তর করতে যাচ্ছিল। শেষ মুহূর্তে লন্ডনে ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নেন অ্যাসাঞ্জ। তবে তাঁর বিরুদ্ধে আনা ধর্ষণের অভিযোগ থেকে গত বছরের মে মাসে তিনি অব্যাহতি পেলেও ব্রিটেন তাকে গ্রেফতারে তোড়জোর শুরু করেছে।
সুত্র: গার্ডিয়ান
এমজে/
আরও পড়ুন