মানবাধিকারকে হুমকির মুখে ফেলেছেন বিশ্ব নেতারা : অ্যামনেস্টি
প্রকাশিত : ১৫:৪৩, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ২৩:২৭, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
বিশ্ব নেতারা মানবাধিকার রক্ষার বদলে মানবাধিকারকে হুমকির মুখে ফেলছেন বলে দাবি করেছে লন্ডন ভিত্তিক সংস্থা মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। জনবান্ধবহীন নীতিমালা এবং ঘৃণা ভরা বাক্যালাপের মধ্যে দিয়ে বিশ্ব নেতারা মানবাধিকারের সার্থ ক্ষুণ্ণ করছেন। আর এর সাথে ট্রাম্প, পুতিন এবং শি জিনপিংয়ের মতো বিশ্ব নেতারাও অন্তর্ভুক্ত বলে এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে সংস্থাটি।
আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত মানবাধিকার বিষয়ক এক বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন দাবি করে মানবাধিকার ইস্যুতে কাজ করা এই সংস্থাটি। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মতো নেতারা গত ২০১৭ সালে যেসব কঠোর নিয়ম নীতি প্রবর্তন করেন তা মানবাধিকার রক্ষার বদলে ক্ষুণ্ণ করবে।
সংস্থাটির তালিকায় মিশর, ফিলিপাইন এবং ভেনেজুয়েলার শাসকেরাও আছেন।
অ্যামনেস্টির সাধারণ সচিব সালিল শেট্টি বলেন, ঘৃণা এবং ভয়ের চাদর সারা পৃথিবী জুড়ে বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে মানবাধিকারের পাশে দাঁড়ানো সরকারের সংখ্যা খুবই কম। পক্ষান্তরে এল সিসি, দুয়ের্তো, মাদুরো, পুতিন, ট্রাম্প এবং জি এর মত নেতারা লক্ষ লক্ষ মানুষের মানবাধিকার ক্ষুণ্ণ করছে।
‘দ্য স্টেট অব দ্য ওয়ার্ল্ডস হিউম্যান রাইটস’ শীর্ষক ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়, ছয়টি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার ট্রাম্পের বিতর্কিত আদেশ, ভেনুজুয়েলায় আন্দোলনরত জনগণের ওপর দেশটির সরকারের হামলা এবং মাদক বিরোধী অভিযানের নামে ফিলিপাইনে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বিশ্বে মানবাধিকার অবস্থার নেতিবাচক চিত্রই ফুটিয়ে তোলে বলে।
জুন ২০১৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার ব্যক্তি ফিলিপাইনে নিহত হয় বলেও জানায় সংস্থাটি।
পাশাপাশি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান জেইদ রাদ আল হুসেন বলেন, “ভেনুজুয়েলায় সরকারি বিরোধী আন্দোলনে গত বছরের এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত প্রায় এক ডজন মানুষ নিহত হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর অতিরিক্ত বল প্রয়োগেই এমনটা হয়েছে”।
বৈশ্বিক সংকট
অ্যামনেস্টি বলছে, বিশ্বের প্রায় ১৫৯টি দেশে মানবাধিকার সংকট চলছে।
ইয়েমেন জনগণের প্রায় ৭৫ শতাংশই মানবাধিকার লংঘনের শিকার। দেশটিতে তিন বছর ধরে চলমান গৃহযুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ২ কোটি ২০ লক্ষ মানুষের জরুরী ভিত্তিতে মানবিক সাহায্য প্রয়োজন বলেও জানায় সংস্থাটি।
২০১৫ সালের মার্চে সৌদি জোট আর ইরান সমর্থিত হুদি যোদ্ধাদের মধ্যেকার সহিংসতায় নিহত হয় কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ।
অপরদিকে মিয়ানমারের রাখাইন সম্প্রদায়ের ওপর দেশটির নিরাপত্তাবাহিনীর হামলায় ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় ঐ প্রতিবেদনে। মাত্র পাঁচ মাসে প্রায় সাত লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী মিয়ানমার ছেড়ে বাংলাদেশসহ প্বার্শবর্তী দেশগুলোতে প্রবেশ করেন।
সংস্থাটির সাধারণ সচিব শেট্টি কাতার ভিত্তিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “মিয়ানমার থেকে ইরাক, দক্ষিণ সুদা, সিরিয়া এবং ইয়েমেনে সংঘটিত মানবাধিকার অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ বিশ্ব নেতাদের ব্যররথতাকে প্রমাণ করে। সরকারগুলো নির্লজ্জভাবে মানবাধিকার ইস্যু থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে”।
সূত্রঃ আল জাজিরা
//এস এইচ এস// এআর
আরও পড়ুন