সিরিয়া সংকট
৭ বছরে নিহত সাড়ে ৪ লাখ
প্রকাশিত : ১২:০৯, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১২:৪৭, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
২০১১ সালে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৪ লাখ ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ১০ লাখেরও বেশি মানুষ। আর উদ্বাস্তু জীবন বরণ করতে হয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ মানুষকে।
গৃহযুদ্ধের ৭ বছর অতিক্রম করলেও এখনো দেশটিতে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের যুদ্ধ চলছে। বিশেষ করে রুশ বাহিনী সিরীয় সরকারের পক্ষ হয়ে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ায়, সরকারি বাহিনী বেশ কয়েকটি অঞ্চল পুনর্দখল করেছে। এখনো দামাস্কাসের নিকটবর্তী পূর্ব ঘৌতায় বিদ্রোহীদের তাড়াতে রুশ ও আসাদ বাহিনী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে শতশত বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে গত এক সপ্তাহের যুদ্ধে কেবল পূর্ব ঘৌতায় দেড় হাজার বেসামরিক মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। আর সরকারের অবরোধে সেখানে ৪ লাখ মানুষের জীবনে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। এরইমধ্যে জাতিসংঘসহ সারাবিশ্ব সিরিয়ার উভয়পক্ষকে যুদ্ধ বন্ধের জন্য আহ্বান জানিয়ে আসছে।
দেশের কোন অংশ কার দখলে?
এদিকে ধারণা করা হচ্ছে, কুর্দী যোদ্ধাদের সঙ্গে মিলে দেশ চালাতে চাইছে আসাদ। জানা গেছে, দেশটির প্রায় অর্ধেক অংশ রয়েছে কুর্দী যোদ্ধাদের দখলে। বাকি অর্ধেকের মধ্যে রয়েছে সিরীয় সরকার আসাদ বাহিনী ও অন্যান্য বিদ্রোহী গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ। এরইমধ্যে তুর্কী সেনাদের রুখতে সিরীয় সরকারি বাহিনী কুর্দী যোদ্ধাদের আফরিনে পাঠিয়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
এদিকে কুর্দী যোদ্ধাদের একটি অংশ আফরিনে জড়ো হয়েছে, এমন গোয়েন্দা খবরে আফরিনে হামলা শুরু করে তুরস্ক। এরইমধ্যে ২ হাজারেরও বেশি কুর্দী যোদ্ধাকে আটকের কথা জানায় দেশটি। শুধু তাই নয়, কুর্দীদের বিরুদ্ধে প্রতিদিনই সাফল্য পেয়ে যাচ্ছে তুর্কী বাহিনী। এরইমধ্যে তুর্কী বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়ার জন্য সরকারি বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে কুর্দী যোদ্ধারা।
আন্তর্জাতিক যুদ্ধ গবেষণাবিষয়ক সংস্থা ‘ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়্যার’ জানিয়েছে, সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসের একটি অংশসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চল পুনর্দখল করেছে আসাদ বাহিনী। তবে এখনো দামাস্কাসের পূর্ব ঘৌতায় বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধ চলছে। এদিকে রাজধানী দামাস্কাসের বড় একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর হাতে।
এছাড়া সিরীয় সরকারি বাহিনীর দখলে এসেছে হোমস, টারটাস, পালমিরা, আবু কামাল, দেইজ আজ জর, হামা ও লতাকিয়া শহর। এদিকে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস সরকারি বাহিনী, রুশ বাহিনী ও মার্কিন বাহিনীর যৌথ হামলায় পিছু হটলেও আবু কামালে তারা এখনো যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বর্তমানে তাঁদের বিরুদ্ধে রুশ ও সরকারি বাহিনী যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে ইদলিব ও দামাস্কাসের বড় একটি অংশ। এ ছাড়া দেশটির রাকা, হাসাকা, কমিশলি ও আফরিনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে কুর্দী যোদ্ধাদের হাতে। তবে নিয়ন্ত্রণ থাকলেও এখনো তিনটি অঞ্চলে ব্যাপক যুদ্ধ চলছে সরকারি বাহিনী-বিদ্রোহী বাহিনী ও বিরোধী দলগুলোর মধ্যে। ওই অঞ্চল তিনটি হলো আফরিন, আবু কামাল ও পূর্ব ঘৌতা।
সূত্র: আল-জাজিরা
এমজে
আরও পড়ুন