নেপালে বিমান বিধ্বস্ত
প্রিতুলার শেষ স্ট্যাটাস-‘খোদা হাফেজ’
প্রকাশিত : ১০:১৫, ১৩ মার্চ ২০১৮
প্রিতুলা রশিদ। আজ থেকে ৫২ দিন আগে জীবনের শেষ ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন ‘খোদা হাফেজ’। চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি ইথিওপিয়া থেকে দেশে ফেরার পথে লিখেছিলেন খোদা হাফেজ। এই খোদা হাফেজই যে তার জীবনের শেষ খোদা হাফেজ হবে কে জানতো? তার ফেসবুক বন্ধুরা কি জানতো, জীবনের কোন দিন আর স্ট্যাটাস বা খোদা হাফেজ শব্দটি লিখবেন প্রিতুলা।
গতকাল নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে মৃত ৪৯ জনের একজন প্রিতুলা রশিদ। ইউ-এস বাংলা এয়ারলাইনসের প্রথম সহকারী নারী পাইলট। বিধ্বস্ত বিমানের দুই ক্রু ও প্রধান পাইলট প্রাণে বেঁচে গেলেও বেঁচে নেই প্রিতুলা। তবে বিধ্বস্ত বিমানের বেঁচে যাওয়া কয়েকজন যাত্রী জানিয়েছেন চাইলেই নিজের জীবন বাঁচাতে পারতেন প্রিতুলা রশিদ। কিন্তু তিনি নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে বাঁচিয়েছেন ১০টি প্রাণ।
নেপালের পত্রিকা হিমালয়ান টাইমস জানিয়েছে, প্রিতুলা নিজের জীবনের বিনিময়ে বিমানটির ১০ নেপালি যাত্রীকে বাঁচিয়েছেন। ইউএস-বাংলার প্রথম নারী পাইলট প্রিথুলা নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। ফেসবুকের শেষ স্ট্যাটাসে প্রিথুলা লিখেছিলেন- খোদা হাফেজ। ইথিওপিয়া বিমানবন্দরে গত ১৮ জানুয়ারি দেয়া ওই স্ট্যাটাসের পর তিনি আর কোনো স্ট্যাটাস লেখেননি।
এদিকে দুর্ঘটনার পর সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে ‘সিকিম ম্যাসেঞ্জার’ নামে একটি পেজে প্রিথুলার মহানুভবতার কথা তুলে ধরে বলা হয়, ‘আজ নেপালি নাগরিকদের বাঁচাতে গিয়ে বাংলাদেশি কন্যা তার নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। অন্যের জীবন বাঁচাতে গিয়ে কাঠমান্ডুতে আজ এই বাংলাদেশি তরুণী পাইলট মারা গেছেন।
তার নাম মিস প্রিথুলা রশিদ। তিনি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের (ফ্লাইট বিএস২১১) কো-পাইলট ছিলেন। যেটি আজ নেপালের কাঠামান্ডুতে ত্রিভুবন বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয়েছে। যাই হোক, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ১০ নেপালি নাগরিককে রক্ষার চেষ্টা করে গেছেন। যাদের সবাই জীবিত আছেন।’
প্রিথুলার ফেসবুক পাতা থেকে জানা যায়, তিনি ২০১৬ সালের জুলাই মাস থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যুক্ত। নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করার পর তিনি আরিরাং এভিয়েশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে বিমান চালনার ওপর ডিগ্রি নেন।
এমজে/
আরও পড়ুন