নার্ভ গ্যাস প্রয়োগে হত্যা চেষ্টা
রাশিয়াকে দায়ী করছেন তেরেসা মে
প্রকাশিত : ১১:৫১, ১৩ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ১১:৫৩, ১৩ মার্চ ২০১৮
সাবেক সেনা গোয়েন্দা কর্মকর্তা সার্জেই স্ক্রিপাল ও তার কন্যাকে রুশ গুপ্তচরেরা বিষপ্রয়োগে হহ্যা চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে। সংসদে দেওয়া ভাষণে তেরেসা মে এ অভিযোগ করেন। এসময় তিনি বলেন, রাশিয়া ওই সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
এদিকে ঘটনার পরপরই দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছেন। আজকের মধ্যে যদি মস্কো কোন ধরণের প্রতিক্রিয়া না দেখায়, তাহলে যুক্তরাজ্য ধরে নেবে রাশিয়া বেআইনিভাবে সেখানে তাদের শক্তি প্রয়োগ করে যাচ্ছে।
ওই হামলায় ব্যবহৃত রাসায়নিক উপাদানটি নার্ভ গ্যাসের একটি গ্রুপ বলেও মন্তব্য করেন তেরেসা মে। সংসদে দেওয়া ভাষণে তেরেসা মে বলেন, ‘হয় রাশিয়া এ ধরণের কাজ করে স্বয়ং আমাদের দেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, সরকার দেশের নার্ভ গ্যাস প্রয়োগকারী সংস্থার উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে।
সংসদে দেওয়া ভাষণে মে আরও বলেন, ইতোমধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বরিস জনসন রাশিয়ার দূতাবাসকে ডেকে পাঠিয়েছেন। একইসঙ্গে নোভিচক নামের কর্মসূচির বিষয়ে রাসায়নিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ সংক্রান্ত কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ তথ্য সরবরাহের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এদিকে রাশিয়ার পক্ষ থেকে কোন ধরণের সাড়া না পেলে হাউজ অব কমনসে দেশটির বিরুদ্ধে বড় ধরণের পদক্ষেপ নিতে আলোচনা চলবে বলেও জানান তিনি।
অবসরপ্রাপ্ত সেনা গোয়েন্দা কর্মকর্তা মি. স্ক্রিপল (৬৬) ও তাঁর মেয়ে ইউলিয়াকে (৩৩) গত ৪ মার্চ স্যালিসবারি সিটি সেন্টার থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদেরকে নার্ভ গ্যাস দ্বারা আক্রমণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বর্তমানে তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে স্ক্রিপল রাশিয়াতে গুপ্তচর বৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার হন। তবে বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় স্ক্রিপলকে ২০১০ সালে যুক্তরাজ্যে পাটিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে ওই মামলার বর্তমান অবস্থা জানতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাম্বার রুডের সভাপতিত্বে একটি সরকারি জরুরি সভার আয়োজন করা হচ্ছে। স্ক্রিপলের বিষয়ে আলোচনা করতেই এ বৈঠক ডাকা হয়েছে।
জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠকের পরই কমন্সে দেওয়া ভাষণে তেরেসা মে বলেন, আমাদের সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত আমরা কখনো মেনে নিবো না। স্ক্রিপলের উপর আক্রমণ আমাদের সার্বভৌমত্বের উপর আক্রমণ। তাদের এই আক্রমণ আমাদের দেশের বিরুদ্ধে বিরতিহীন আক্রমণের অংশ বলে মনে করছি। এদিকে নার্ভ গ্যাস প্রয়োগের ফলে দুইটি নিরপরাধ মানুষের মৃত্যু ঘটতে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ৪ মার্চ স্ক্রিপল ও তার কন্য ইউলিয়াকে ব্রিটেনের একটি রেস্টুরেন্টের সামনে থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁদের শরীর নোভিচক নামের এক ধরণের গ্যাস পাওয়া গেছে। বিশ্বে একমাত্র রাশিয়ায় নোভিচক নামের ওই গ্যাস প্রয়োগ করে থাকে। ১৯৮০ দশকে রাশিয়া ওই রাসায়নিক অস্ত্রের আবিষ্কার করেন। জানা যায়, নোভিচক নার্ভ গ্যাসের সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ। এটি প্রয়োগের কয়েক মিনিটের মধ্যেই আক্রান্ত ব্যক্তি মারা যান। এ ঘটনার জন্য রাশিয়াকে দুষছেন মে। শুধু তাই নয়, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই রাশিয়ার পক্ষ থেকে কোন সাড়া না পেলে ব্রিটেন পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে বলেও জানান মে।
সূত্র: বিবিসি, ভয়েস অব এমেরিকা
এমজে/
আরও পড়ুন