নেপালের সব এয়ারলাইন ইউরোপে নিষিদ্ধ
প্রকাশিত : ২২:১৮, ১৩ মার্চ ২০১৮
পৃথিবীর সব জায়গায় যখন আকাশ ভ্রমণ আরো নিরাপদ হচ্ছে, সেখানে নেপাল বারবার বিমান দুর্ঘটনার জন্য সংবাদ শিরোনামে আসছে। নেপালের কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে (টিআইএ) সোমবারের ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের দুর্ঘটনাটি দিয়ে গত আট বছরে নয়টি বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে দেশটির বিমান ব্যবস্থাপনা নিয়ে আবারো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও অনেক আগে থেকেই নেপালের সব এয়ারলাইন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলোতে নিষিদ্ধ।
ইইউ’র নিরাপত্তা বিষয়ক কর্মকর্তারা নেপালের সিভিল এভিয়েশন অথরিটিকে (বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ) বিশ্বাস করে না। ‘ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এয়ার সেফটি লিস্ট’ বা নিরাপদ আকাশ ভ্রমণ তালিকায় যেসব বিপজ্জনক এয়ারলাইন অন্তর্ভুক্ত আছে, সেগুলো বেশিরভাগই স্বল্প পরিচিত। এগুলো আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মানদণ্ড বা সেফটি স্ট্যান্ডার্ড মেনে চলতে সক্ষম নয়। নেপালের ১৭টি এয়ারলাইনের সবগুলোই এ তালিকায় রয়েছে।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এয়ার কমোডর ইকবাল হোসেইন কাঠমান্ডুর বিমানবন্দরে অবতরণের সময় পাইলটদেরকে কেমন সব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয় তা বিবিসিকে জানান।
ইকবাল হোসেইন বলেন, ‘সেখানে রানওয়ে একপ্রান্তের ঠিক পিছনেই একটা পাহাড় রয়েছে। অবতরণের সময় প্রতিটি উড়োজাহাজকে ওই পাহাড় কাটিয়ে আসতে হয়। পাহাড়টা পেরোনোর পর পরই পাইলটকে খুব দ্রুত মাটির কাছে নেমে আসতে হয়।’
‘রানওয়ের বাম পাশে কিছুটা সমতল জায়গা রয়েছে, কিন্তু এর ডান দিকে রয়েছে গভীর একটা খাদ। প্লেন যদি রানওয়ে থেকে পিছলে যায়, তাহলে সেটা ওই খাদের মধ্যে গিয়ে পড়বে। ওটা পৃথিবীর ১০টি বিপজ্জনক এয়ারপোর্টের একটি’।
এর আগে ২০১০ সালের আগস্ট মাসে নেপালের অগ্নি এয়ারের উড়োজাহাজ খারাপ আবহাওয়ার কারণে অবতরণ করতে ব্যর্থ হলে দুর্ঘটনায় ১৪ জন প্রাণ হারায়। ২০১২ সালে একই রকম দুর্ঘটনায় ওই এয়ারলাইনেরই আরেকটি উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহত হন ১৫ জন।
২০১০ সালের ডিসেম্বরে নেপালেরই তারা এয়ার টুইন অটারের দুর্ঘটনায় মারা যায় আরও ২২ জন। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে বুদ্ধ এয়ারের একটি উড়োজাহাজ কাঠামান্ডুর কাছাকাছি বিধ্বস্ত হলে নিহত হয় ১৯ জন। পরের বছর নেপালেরই সিতা এয়ারের একটি প্লেন উড্ডয়নের একটু পরেই মুখ থুবড়ে পড়লে নিহত হন ১৯ জন যাত্রী।
২০১৪ সালেও নেপালে বিমান দুর্ঘটনা চলতে থাকে। নেপাল এয়ারওয়েজের একটি টুইন অটার উড়োজাহাজ জুমলা থেকে পোখরা যাওয়ার সময় সেটির ১৮ জন যাত্রীর সবাই মারা যান। ২০১৬ সালে সেখানকার তারা এয়ারের একই রকম আরেকটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হলে ২৩ জন নিহত হয়। এর দু’দিন পর এয়ার কাষ্ঠমণ্ডপের একটি প্লেন ১১ জন যাত্রী নিয়ে বিধ্বস্ত হলে দুইজন নিহত হয়।
ঢাকা থেকে ৬৭ জন যাত্রীসহ ৭১ জন আরোহী নিয়ে সোমবার দুপুরে ত্রিভুবনে নামার সময় ইউএস-বাংলার ফ্লাইট বিএস ২১১ রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ে এবং আগুন ধরে যায়। এতে ৪৯ জন আরোহী নিহত হন। বাকিরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সূত্র: দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট
আর
আরও পড়ুন