ঢাকা, বুধবার   ০৬ নভেম্বর ২০২৪

প্রথম স্ত্রীর কারণেই বেঁচেছিলেন হকিং

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:০৯, ১৪ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ১৪:১৪, ১৪ মার্চ ২০১৮

আজ থেকে ৩৪ বছর আগে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন স্টিফেন হকিং। একদিকে মরণঘাতী মটর নিউরণ রোগ, অন্যদিকে নিউমোনিয়া। এ দুই রোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী স্টিফেন জীবনের মায়া ত্যাগ করেছিলেন। চিকিৎসকদের বলেছিলেন যেন তাঁর লাইফ সাপোর্ট খুলে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরাও আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবে সব শেষ হয়ে গেলেও ইস্পাত-দৃঢ় মনোবল নিয়ে সেদিন দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন স্টিফেন হকিংয়ের প্রথম স্ত্রী জেন ওয়াল্ডি। আর জেনের সেই সিদ্ধান্ত-ই হকিংককে পরবর্তী ৩৪টি বছর বাঁচিয়ে রেখেছিলেন।

জানা যায়, ১৯৬৩ সালে হকিংয়ের যখন মোটর নিউরন রোগ ধরা পড়ে তখন চিকিৎসকরা বলেছিলেন হকিং বড়জোর দুই মাস বাঁচবেন। কিন্তু পৃথিবী সৃষ্টির রহস্য উদঘাটন করা যে তখনো স্বপ্নেই রয়ে গেছে। তিনি মটর নিউরনের কাছে পরাজিত হননি। তাই স্বয়ং স্রষ্টা তাকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। মাত্র ২১ বছর বয়সে মটর নিউরণে আক্রান্ত হলেও তার মনোবলে এতটুকু চিড় ধরেনি। তবে যখন ক্রমান্বয়ে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ-প্রতঙ্গ অসাড় হয়ে আসছিল, তখন ধীরে ধীরে মনোবল ভাঙতে থাকে বর্তমান পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ এ বিজ্ঞানীর।

এ রোগ ধরা পড়ার পরও স্টিফেন হকিংকে বিয়ে করেন তার স্ত্রী জেন ওয়াল্ডি। বিয়ের পর থেকেই স্বামী হকিংয়ের চিকিৎসা সেবা শুরু করেন ওয়ান্ডি। ওয়ান্ডি ও হকিং দম্পত্তির তিন সন্তান রয়েছে। তবে সেই সংসার ১৯৯১ সালে ভেঙ্গে যায়। আবারও বিয়ে করেন স্টিফেন হকিং। বিয়ে করেন ওয়াল্ডিও। দুজনার দুটি পথের শুরু তখন থেকে। তবে কোন দিন গণমাধ্যমে নিজের প্রথম স্বামী হকিংয়ের মনোবল নিয়ে কোন কথা বলেননি ওয়াল্ডি।

হকিংয়ের প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের প্রায় ২০ বছর পর তিনি তার জীবনের ‘অন্ধকার’ সময়ে স্ত্রী জেনের সেই প্রাণ বাঁচানো সহায়তার কথা জানান। হকিংয়ের জীবন নিয়ে তৈরি হয়েছে এক তথ্যচিত্র। সেখানেই এই তথ্য পাওয়া যায়। ১৯৮৫ সালের গ্রীষ্মে জেনেভার সার্ন-এ অবস্থানকালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বিজ্ঞানী ৷ তার অবস্থা সে সময় এতই খারাপ হয়ে গিয়েছিল যে, তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখতে হয়। এরপর তার প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছিল। চিকিৎসকরাও তাঁর কষ্ট দেখে একসময় লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ৷ সাপোর্ট বন্ধ করলেই তার নিশ্চিত মৃত্যু হতো।

ওই তথ্যচিত্রে হকিং বলেন, ‘নিউমোনিয়ার ধকল আমি সহ্য করতে পারিনি, কোমায় চলে গিয়েছিলাম। তবে চিকিৎসকরা শেষ অবধি চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিলেন , একসময় তারাও আমার দশা দেখে হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন। সে সময় চেষ্টা সত্ত্বেও হকিংয়ের অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে চিকিৎসকরা হকিংয়ের স্ত্রী জেনকেও লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম বন্ধ করে দেওয়ার কথা জানান। কিন্তু ওয়াল্ডির প্রচেষ্টায় তারা আবার আশা ফিরে পান।

সূত্র: ডেইলি মিরর

এমজে/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি