যুক্তরাজ্য থেকে ২৩ রুশ কূটনীতিক বহিষ্কার
প্রকাশিত : ২০:০৭, ১৪ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ২১:০১, ১৪ মার্চ ২০১৮
যুক্তরাজ্যের সলবেরিতে ‘নার্ভ এজেন্ট’ হামলার ঘটনায় ২৩ রুশ কূটনৈতিককে বহিষ্কার করেছে যুক্তরাজ্য। আজ বুধবার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে দেশটির সংসদে এই ঘোষণা দেন। পাশাপাশি আসন্ন ফুটবল বিশ্বকাপে দেশটির কোন রাজ পরিবারের সদস্য অংশ নেবেন না বলেও সাফ জানিয়ে জানিয়ে দেন মে।
চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব পাওয়া সাবেক গুপ্তচর সারজেই স্ক্রিপাল এবন তার মেয়ে ইউলিয়া স্ক্রিপালের ওপর ভয়ানক ‘নার্ভ এজেন্ট’ প্রয়োগ করা হয়েছে বলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে আসছে যুক্তরাজ্য। এই ঘটনায় পুরো সলসবেরী শহরের জনগণ আক্রান্ত হতে পারত বলে জানিয়েছে দেশটির রসায়নবীদেরা। মূলত এরপরেই চটে যায় বার্মিংহাম প্যালেস।
এ ঘটনায় মস্কোর কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ব্যাখা’ দাবি করে লন্ডন। তবে ক্রেমলিন থেকে এ দাবি প্রত্যাখান করা হয়। আর এর পরেই যুক্তরাজ্যে থাকা ঐ ২৩ জন কূটনৈতিককে দেশ থেকে বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়।
তবে কাড়া এই ২৩ জন কূটনৈতিক তা এখনও জানা সম্ভব হয়নি। এসব কূটনীতিককে রাশিয়ার ‘অঘোষিত গুপ্তচর’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যেই তাদেরকে ইংল্যান্ড ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে থেরেসা মে’র ঐ আদেশে।
এদিকে লন্ডনের এমন সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া। লন্ডনে থাকা রাশিয়ার দূতাবাস থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তকে “অগ্রহণযোগ্য, অন্যায় বিচার এবং অদূরদর্শী” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল।
শুধু কূটনৈতিক বহিষ্কারেই সীমাবদ্ধ নেই থেরেসা মে’র এই আদেশ। দুই দেশের সম্পর্ক চূড়ান্ত দূরত্বে নিয়ে যেতে ঐ আদেশে আরও যা আছে তা হল-
১) যুক্তরাজ্যের বিমানে এবং কাস্টমস-এ রাশিয়ানদের ওপর নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে।
২) যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের জন্য হুমকি উল্লেখে দেশটিতে থাকা রাশিয়ার সকল সম্পত্তি জব্দ করেছে যুক্তরাজ্য।
৩) রাশিয়ার সাথে সকল উচ্চ-পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় সাক্ষাৎ বাতিল করেছে লন্ডন।
৪) রাশিয়ার মত শত্রু ভাবাপন্ন দেশগুলোর বিরুদ্ধে নিজেদের নিরাপত্তা বৃদ্ধিতে নতুন আইন প্রণয়নের কথা ভাবছে যুক্তরাজ্য।
তবে এতকিছুর পরেও নার্ভ এজেন্টের এই হামলার সাথে নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে রাশিয়া।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্জেই লাভরভ ইংল্যান্ড ‘নোংরা রাজনৈতিক খেলা খেলছে” বলে উলটো অভিযোগের তীর ছোড়েন। তিনি বলেন, “ইংল্যান্ড যদি রাসায়নিক অস্ত্র কনভেশনের অধীন সঠিক উপায়ে আমাদের কাছে ব্যাখ্যা চাইত তাহলে আমরা লন্ডনকে ব্যাখ্যা দিতাম”।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে ‘গুপ্তচর বিনিময়’ কর্মসূচির আওতায় ইংল্যান্ডে আসেন সার্জেই স্ক্রিপাল। সেখানে তাকে দেশটির নাগরিকত্বও দেওয়া হয়। এর আগে ২০০৬ সালে ইংল্যান্ডের কাছে তথ্য বিক্রির অভিযোগে রাশিয়াতে জেল হয় সাবেক এই গুপ্তচরের। গত ৪ মার্চ তার মেয়ে ইউলিয়া স্ক্রিপাল রাশিয়া থেকে বাবার সাথে দেখা করতে যুক্তরাজ্য যান। তার মাধ্যমে রাশিয়া সারজেইকে হত্যার জন্য ‘নার্ভ এজেন্ট’ পাঠিয়েছে বলে লন্ডনের অভিযোগ।
সূত্র: বিবিসি
//এস এইচ এস//টিকে
আরও পড়ুন