যুক্তরাজ্যের কূটনৈতিক বহিষ্কারের রাশিয়ার হুমকি
প্রকাশিত : ২৩:২৬, ১৫ মার্চ ২০১৮
যুক্তরাজ্য থেকে রুশ কূটনৈতিক বহিষ্কারের ঘটনায় এবার যুক্তরাজ্যের কূটনৈতিক বহিষ্কারের পালটা হুমকি দিল রাশিয়া। রাশিয়ায় থাকা যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনে নিয়োজিত থাকা কূটনৈতিকদের মধ্যে কয়েকজনকেই বহিষ্কারের ইঙ্গিত দেয় রাশিয়া। দেশটির বার্তা সংস্থা স্পুটনিকের কাছে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন কথা বলেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সার্জেই লেভরভ।
লেভরভকে প্রশ্ন করা হয় যে, যুক্তরাজ্যের রাশিয়ান কূটনৈতিক বহিষ্কারের জবাবে রাশিয়াও তার দেশ থেকে ব্রিটিশ কূটনৈতিকদের বহিষ্কার করবে কি না? এমন জবাবে ইতিবাচক জবাব দেন তিনি। সাক্ষাৎকার নেওয়া সাংবাদিককে বলেন, “সার্টেইনলি (অবশ্যই)”। আর এ সিদ্ধান্ত খুব দ্রুত নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
রাশিয়ার জেল থেকে মুক্তি পেয়ে যুক্তরাজ্যে আসা দেশটির সাবেক এক গুপ্তচরের ওপর ‘নার্ভ এজেন্ট’ প্রয়োগের অভিযোগে গতকাল বুধবার ২৩ জন রাশিয়ান কূটনৈতিককে বহিষ্কার করে যুক্তরাজ্য। এমন সিদ্ধান্তকে ‘কাণ্ডজ্ঞানহীন’ হিসেবেও উল্লেখ করেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
শুধু তাই নয়, যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের রাশিয়ার ভিসা দেওয়ার সংখ্যাও কমিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দেয় রাশিয়া। লন্ডনের রাশিয়ান দূতাবাসের এক মুখপাত্র আজ বৃহস্পতিবার দূতাবাসের এমন সিদ্ধান্তের কথা গণমাধ্যমকে জানান।
পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দেওয়া এক বক্তব্যেরও কড়া সমালোচনা করে রাশিয়া। ব্রিস্টলে আজ যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী গেভিন উইলিয়ামসন বলেন, “রাশিয়ার পালটা কোন কাজ করা উচিত না। তাদের যুক্তরাজ্য থেকে চুপচাপ চলে যাওয়া উচিত আর চুপ থাকা উচিত”।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাকারোভা বলেন, “লন্ডন কিছু লুকানোর চেষ্টা করছে। তাদের মিত্ররা আতংকিত”।
শুধু তাই নয় যুক্তরাজ্য এবং রাশিয়ার সম্পর্কের অবনতির সমস্ত দায়ভার লন্ডনকেই নিতে হবে বলেও সতর্ক করে ক্রেমলিন।
যুক্তরাজ্য এবং রাশিয়ার এমন মুখোমুখি অবস্থানে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট। কেউ কেউ এটিকে ‘কূটনৈতিক সম্পর্কচ্ছেদের পূর্বাভাস’ হিসেবেই দেখছেন।
চলতি মার্চ মাসের ৪ তারিখ রাশিয়ার সাবেক গুপ্তচর অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল সের্গেই স্ক্রিপালের সাথে দেখা করেন তার মেয়ে ইউলিয়া স্ক্রিপাল। রাশিয়া থেকে যুক্তরাজ্যের সলসবেরিতে এসে বাবার সাথে দেখা করেন তারা।
এসময় একটি পিজ্জার দোকানে খাবার খেতে ঢুকতে সেখানেই তাদের ওপর নার্ভ এজেন্ট প্রয়োগ করা হয় বলে নিশ্চিত হয় যুক্তরাজ্য পুলিশের ফরেনসিক বিভাগের কর্মকর্তারা। ঘটনায় ঘন্টা দুয়েক পর শহরটির একটি পার্কে মুমূর্ষু অবস্থায় বাবা-মেয়েকে অচেতন হয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
এই ঘটনার জন্য রাশিয়াকেই শুরু থেকে দায়ী করে আসছে যুক্তরাজ্য। যুক্তরাজ্যের অভিযোগ, দেশটির মাটিতে রাশিয়ার এমন ষড়যন্ত্র রীতিমত ধৃষ্টতা।
সূত্র: স্পুটনিক
//এস এইচ এস//টিকে
আরও পড়ুন