ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৫ নভেম্বর ২০২৪

কূটনীতিক বহিষ্কার করলে কি ঘটে?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:০৫, ১৯ মার্চ ২০১৮

স্যালসবারি শহরে সাবেক এক রুশ এজেন্টকে বিষ প্রয়োগে হত্যার চেষ্টার পর ব্রিটেন এই ঘটনার জন্য সরাসরি রাশিয়াকে দায়ী করে রুশ কূটনীতিকদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। ২৩ জন রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কারের পাল্টা জবাব হিসেবে রাশিয়াও সমান সংখ্যক কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে দুদিন আগে। সেই সঙ্গে ব্রিটিশ কাউন্সিল বন্ধ আর সেন্ট পিটার্সবুর্গ শহরে ব্রিটিশ কনস্যুলেট বন্ধেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ইংল্যান্ডের স্যালসবারি শহরে এ মাসের ৪ তারিখে সাবেক এক রুশ এজেন্টকে বিষ প্রয়োগে হত্যার চেষ্টার পর ব্রিটেন এই ঘটনার জন্য সরাসরি রাশিয়াকে দায়ী করে কদিন আগে রুশ কূটনীতিকদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।

কিন্তু কোন দেশ কেন কূটনীতিকদের বহিষ্কার করে? যখন একজন কূটনীতিককে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়, তখন আসলে কি ঘটে?

সারা বিশ্বেই কূটনীতিকরা যে দেশে কাজ করেন, সেখানে ইম্যুনিটি বা সাধারণ ক্ষমার আওতায় থাকেন। তার মানে, তাদের সেসব দেশে বিচার করা যাবে না।

কিন্তু তারা যদি আইন ভাঙ্গেন বা ওই দেশ বিরোধী কোন কাজ করেন, কিংবা কূটনৈতিক সংকট তৈরি হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট দেশের এসব অধিকার প্রত্যাহার করার অধিকার রয়েছে। যেমনটা এখন ঘটেছে ব্রিটেন আর রাশিয়ার মধ্যে।

কূটনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে ভিয়েনা কনভেনশনের ৯ আর্টিকেলে বলা আছে, যে কোন দেশ যেকোনো কারণে কোন ব্যক্তিকে `নন গ্রাটা` বা ওই দেশে অনাকাঙ্ক্ষিত বলে ঘোষণা করতে পারবে।

কে এসব সিদ্ধান্ত নেন?

হোস্ট কান্ট্রি বা যে দেশে কূটনীতিকরা কাজ করেন, সেই দেশটি সিদ্ধান্ত নেয়, কে থাকবে আর কে চলে যাবে। যেমন শনিবার ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে ডেকে রাশিয়া জানিয়ে দিয়েছে যে তাদের চলে যেতে হবে। তিনি তার কর্মীদের সেই তথ্য জানিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে জানানোর নির্দিষ্ট কোন নিয়মনীতি নেই। রাষ্ট্রদূতকে ডেকে সংশ্লিষ্ট দেশ যেমন জানিয়ে দিতে পারে, অথবা আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক চিঠিও পাঠাতে পারে।

ভেনিজুয়েলায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিক ডুডি যখন ওয়াশিংটনে ছিলেন, তখন তাকে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে ফোন করে বলা হয়, তাকে আর ভেনিজুয়েলায় যেতে হবে না। কারণ তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুগো চ্যাভেজ তাকে দেশ থেকে বহিষ্কার করেছেন।

একজন কূটনীতিককে চলে যেতে বলার পর কি ঘটে?
কাউকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে বলার মানে তাকে চলে যেতে হবে। সেটা প্রত্যাখ্যান করা মানে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গ করা, যা হয়তো বড় ধরণের সংকটের জন্ম দিতে পারে। এবার যেমন রাশিয়া ব্রিটিশ কূটনীতিকদের দেশ ছাড়তে এক সপ্তাহ সময় দিয়েছে। কখনো কখনো সেটি ৭২ ঘণ্টা বা মাত্র ২৪ ঘণ্টাও হয়ে থাকে।

এই কর্মীরা কি আবার কখনো ফিরে যেতে পারে?
সাবেক কূটনীতিক স্যার ক্রিস্টোফার মেয়ের বলছেন, এটা আসলে খুবই বিরল ঘটনা যে, একবার বহিষ্কৃত হওয়ার পর আবার কেউ কূটনীতিক হিসাবে সেই দেশে ফিরে গেছেন।

এ ক্ষেত্রে কোন বিধিনিষেধ নেই, তবে কারো ফিরে যাওয়ার কথাও তার জানা নেই।

বহিষ্কৃত কূটনীতিক দেশে ফিরে আসার পর কি ঘটে?

আবার সেই দেশে ফেরত যাবার অপেক্ষায় এই কূটনীতিকদের বসিয়ে রাখা হয় না। তাদের নতুন কাজের দায়িত্ব দেয়া হয়। এমনকি ওই দেশের ভাষার বিষয়ে তার বিশেষ দক্ষতা থাকলেও।

স্যার ক্রিস্টোফার বলছেন, বেশিরভাগ কূটনীতিক কর্মকর্তার কোন বিশেষ ভাষায় দক্ষতা থাকে। কিন্তু তার আরো অনেক দক্ষতাও থাকে। আর তাই পররাষ্ট্র দপতরে তার কাজের আরও অনেক সুযোগও থাকে। এই সময়ে আপনাকে কোন কাজ করতে হবে না। আপনার প্রধান কাজ হবে সবার কাছ থেকে বিদায় নেওয়া।

তথ্যসূত্র: বিবিসি।

এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি