‘ট্রাম্পের সঙ্গে পর্ন তারকার মেলামেশা হয়েছিল সম্মতির ভিত্তিতে’
প্রকাশিত : ১১:২৩, ২৭ মার্চ ২০১৮
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নীল তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েল দৈহিক সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। ২০০৬ সালে পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতেই ছিল তাদের এ সম্পর্ক। ওই সময় ট্রাম্পের তৃতীয় স্ত্রী মেলানিয়া সদ্য তাদের পুত্রসন্তান ব্যারনের জন্ম দিয়েছিলেন।
গত রোববার সিবিএস টিভির জনপ্রিয় অনুষ্ঠান সিক্সটি আওয়ার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্টর্মি ড্যানিয়েল এসব কথা জানান।
স্টর্মি জানিয়েছেন, ট্রাম্পের স্ত্রীর ব্যাপারে স্টর্মি কিছুটা অসস্তি বোধ করছিলেন। তখন ট্রাম্প তাকে আশ্বস্ত করেন। ট্রাম্প বলেন, এ নিয়ে ভাবতে হবে না। কারণ আমরা দুজন এক ঘরে থাকি না। দু’জনের অন্তরঙ্গ মুহূর্ত নিয়ে স্টর্মির ভাষ্য, ট্রাম্পের ঘরে ডিনারের শেষে একবার তারা স্বেচ্ছায় মিলিত হয়েছিলেন। সে সময় ট্রাম্প তাকে বলেছিলেন, `ওয়াও! তুমি খুব স্পেশ্যাল। তুমি আমাকে আমার কন্যার কথা মনে করিয়ে দিলে। ও তোমার মতোই স্মার্ট আর সুন্দরী। আই লাইক ইউ।`
ট্রাম্প এবার প্রকৃতই বিবস্ত্র হয়ে পড়েছেন। কারণ সাক্ষাৎকারের সবচেয়ে বিব্রতকর মুহূর্ত ছিল স্টর্মির বিবরণীতে ট্রাম্পের বিবস্ত্র হওয়ার একটি ঘটনা। স্টর্মি বলেন, তাদের নির্জন সাক্ষাতের সময় এক পত্রিকার প্রচ্ছদে নিজের ছবি দেখিয়ে কেবলই নিজের কথা বলছিলেন ট্রাম্প। তাতে বিরক্ত হন স্টর্মি। তিনি ট্রাম্পকে বলেন, এখন উচিত হবে ওই পত্রিকাটি নিয়ে তাকে কয়েক ঘা দেওয়া। এরপর পত্রিকাটি ছিনিয়ে ট্রাম্পকে বিবস্ত্র হয়ে ঘুরে দাঁড়াতে বলেন। ট্রাম্প সে আজ্ঞা পালন করেন। তখন স্টর্মি পত্রিকাটি দিয়ে ট্রাম্পের নিতম্বে আঘাত করেন।
২০০৬ সালে স্টর্মির সঙ্গে ওই ঘটনা ঘটার সময় তা গোপন রাখার কোনো প্রয়োজন ট্রাম্পের হয়নি। কিন্তু অবস্থা বদলে যায় ২০১৬ সালে। কারণ তখন তিনি রিপাবলিকান দলের প্রার্থী হিসেবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন। তাই ওই ঘটনা প্রকাশ না পাওয়ার জন্য ট্রাম্পের আইনজীবী মাকেল কোহেন নির্বাচনের মাত্র ১১ দিন আগে স্টর্মির সঙ্গে এক অপ্রকাশ্য চুক্তি স্বাক্ষর করিয়ে নেন। চুক্তি অনুসারে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলারের বিনিময়ে স্টর্মি ট্রাম্পের সঙ্গে তার গোপন সংসর্গের কথা প্রকাশ না করতে সম্মত হন।
কিন্তু ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পাদিত অপ্রকাশ চুক্তি অবৈধ, এই যুক্তি দেখিয়ে স্টর্মি ক্যালিফোর্নিয়ার এক আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। স্টর্মি বলেন, ওই বিবৃতিতে স্বক্ষর করেতে তিনি বাধ্য হয়েছিলেন। কারণ তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তাই তাতে তিনি ভয় পেয়ে সে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছিলেন।
এ মামলা সম্পর্কে তিনি বলেন, অর্থ তার লক্ষ নয়। তিনি চান সত্য প্রকাশিত হোক। আত্মরক্ষার জন্য মুখ খোলা তার জন্য অত্যন্ত জরুরি।
প্রসঙ্গত, কয়েক দিন আগে ক্যারেন ম্যাকডুগাল নামে এক প্লেবয়-মডেল এক দশক আগে প্রায় একই সময়ে ট্রাম্পের সঙ্গে তার প্রণয়ের সবিস্তার বিবরণ সিএনএনে তুলে ধরেন।
পরপর দুটি বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে জাতীয় টিভিতে বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশিত হওয়ায় ট্রাম্প রাজনৈতকিভাবে কতোটা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তা নিশ্চিত নয়। ট্রাম্পের ইভানজেলিক্যাল সমর্থক জানিয়েছেন, ১০-১১ বছর আগের এ ঘটনা নিয়ে তারা মোটেই উদ্বিগ্ন নন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নির্বাচনের মাত্র ১১ দিন আগে অর্থ দিয়ে মুখ বন্ধ রাখার চেষ্টা করায় নির্বচনী আইন ভঙ্গের অভিযোগ আসতে পারে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে।
স্টর্মির এ সাক্ষাৎকারের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং মেলানিয়া কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
সূত্র: সিবিএস
একে// এআর
আরও পড়ুন