ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

পশ্চিমারাই ওয়াহাবিবাদের প্রচারক ছিল: সৌদি প্রিন্স

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২৩:১৩, ২৯ মার্চ ২০১৮

সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান দাবি করেছেন যে, যে ওয়াহাবিবাদকে সন্ত্রাসবাদের জনক বলে মনে করে পশ্চিমারা সেই ওয়াহাবিবাদকেই একসময় প্রচার করেছিল পশ্চিমারা। সোভিয়েত ইউনিয়নের সমাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে ওয়াহিবাদকেই নিজেদের হাতিয়ার বানিয়ে পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর মদদ দিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন প্রিন্স মোহাম্মদ।

যুক্তরাষ্ট্র সফররত সৌদি প্রিন্স ওয়াশিংটন পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, “স্নায়ুযুদ্ধের সময় সোভিয়েত সমাজতান্ত্রিক মতবাদকে ঠেকাতে সেসময় পশ্চিমা দেশগুলোই সৌদি আরবের ওয়াহাবিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বিশ্বব্যাপী মুসলিম রাষ্ট্রগুলোতে যেন রুশ প্রভাব না পরে সেজন্য তারাই সৌদি আরবকে মসজিদ, মাদরাসা নির্মাণ করতে বিনিয়োগ করতে বলে”।

তবে এসব মসজিদ-মাদরাসার জন্য সৌদি সরকার বিনিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে বলেও জানান তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র অবস্থানের শেষ দিন গত ২২ মার্চ ওয়াশিংটন পোস্টকে ৭৫ মিনিটের সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।

তবে স্নায়ু যুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকেই ওয়াহাবিদের সাথে দূরত্ব বাড়তে থাকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলোর। নানান ঘটনার পর ওয়াহাবিদেরকে ‘সন্ত্রাসবাদের জনক’ হিসেবেও আখ্যা দেওয়া হয়।

এরপর মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন অঞ্চলে মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে থাকে ইসলামী জঙ্গি গোষ্ঠী। এসব গোষ্ঠীর বেশিরভাগই ওয়াহাবি দর্শনে দীক্ষিত ছিলেন। এদেরকে ‘সালাফি’ নামে ডাকা হত। 

সুন্নি মতবাদ অনুসারীদের মধ্যে থেকে ওয়াহাবিবাদের গোড়াপত্তন অষ্টাদশ শতকে। আরবের নজদ থেকে মোহাম্মদ ইবনে আবদ আল ওয়াহাব এই ওয়াহাবিবাদের প্রচলন করেন। তাঁর নাম থেকেই এই মতবাদের নাম হয় ‘ওয়াহাবিবাদ’।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর অটোমান সাম্রাজ্য ভেঙে পশ্চিমাদের হস্তক্ষেপে সৌদি আরব গঠন করে রাজতন্ত্র চালু করে সউদ পরিবার। এসময় ওয়াহাবিদের সাথে যুক্ত হয় সৌদি রাজ পরিবার। রাজ পরিবারের পৃষ্ঠপোষকতায় ছড়াতে থাকে ওয়াহাবিদের উগ্র মত।

এদিকে সৌদি প্রিন্স বলেন, “ওয়াহাবিদের পৃষ্ঠপোষকতায় সৌদি রাজ পরিবার যে বিনিয়োগ শুরু করে একসময় তা আর রাজ পরিবারের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। সৌদি আরব ভিত্তিক বিভিন্ন দাতা সংস্থাগুলোই এখন তাদের অর্থায়ন করছে”।

সৌদি যুবরাজ বলেন, “যে ‘বীজ’ পশ্চিমারা বপন করেছিলেন তাঁর থেকে বের হওয়া আগুনে এখন তারাই পুড়ছে। আর এই আগুনে সৌদি আরবও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আইএস এর মতো জঙ্গি গোষ্ঠীর আক্রমণের লক্ষ্যস্থল আমরাও হচ্ছে”। 

প্রসঙ্গত, আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে সোভিয়েতবিরোধী লড়াইয়ে উগ্র মুসলিম গোষ্ঠীগুলোতে অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে মদদ জোগানোর অভিযোগ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে।

সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট

//এস এইচ এস//টিকে


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি