বিক্ষোভে উত্তাল গাজা সীমান্ত
গুলিতে নিহত ১৬ ফিলিস্তিনি
প্রকাশিত : ০৮:৪৯, ৩১ মার্চ ২০১৮ | আপডেট: ০৮:৫৭, ৩১ মার্চ ২০১৮
হাজার হাজার ফিলিস্তিনি গাজা থেকে ইজরায়েলের সীমান্তের দিকে মিছিল করে যাওয়ার পর তাদের ওপর ইজরায়েলি সেনারা গুলি চালিয়েছে। এতে অন্তত ১৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও তিনশো ফিলিস্তিনি।
গতকাল শুক্রবার ইসরায়েল-গাজা সীমান্তে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
ইজরায়েলের বিরুদ্ধে ছয় সপ্তাহব্যাপী এক প্রতিবাদের অংশ হিসেবে ফিলিস্তিনিরা এই বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে।
ইজরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, অন্তত ছ`টি জায়গায় দাঙ্গা-হাঙ্গামা চলছে এবং তারা দাঙ্গায় `উস্কানিদাতাদের` দিকে গুলি করছে।
ফিলিস্তিনিরা তাদের এই মিছিলের নাম দিয়েছে `গ্রেট মার্চ টু রিটার্ন` বা নিজের ভূমিতে ফিরে যাওয়ার মিছিল। সীমান্তের কাছে তারা পাঁচটি ক্যাম্প স্থাপন করে সেখানে অবস্থান নিয়েছে। ফিলিস্তিনিরা ইজরায়েলের ভেতরে তাদের ফেলে আসা বাড়ি-ঘরে ফিরে যাওয়ার অধিকার চায়।
ইজরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, গাজা-ইসরায়েল সীমান্তের কাছে পাঁচটি জায়গায় প্রায় সতের হাজার মানুষ অবস্থান নিয়েছে। এরা সেখানে গাড়ির টায়ার জ্বালাচ্ছে এবং সীমান্তের প্রাচীরের দিকে মলোটভ ককটেল ছুঁড়ছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, ইজরায়েলি সেনাদের হাতে নিহতদের মধ্যে ১৬ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি বালকও রয়েছে।
ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস এই সহিংসতার জন্য ইজরায়েলকে দায়ি করেছে। হামাস নেতা ইজমাইল হানিয়েহ বলেছেন, তাঁরা এক ইঞ্চি ফিলিস্তিনি জমিও ইজরায়েলের কাছে ছাড়বেন না।
তিনি বলেন, ফিলিস্তিনের কোন বিকল্প নেই এবং আমাদের ফিরে যাওয়ার অধিকার ছাড়া এই সংকটের কোন সমাধান নেই।
গাজা-ইজরায়েল সীমান্তে সব সময় ইজরায়েলের কড়া সামরিক পাহারা থাকে। সেখানে ইসরায়েল তাদের সামরিক উপস্থিতি আরও বাড়িয়েছে।
ফিলিস্তিনিরা প্রতি বছরের ৩০ মার্চকে `ভূমি দিবস` হিসেবে পালন করে। ১৯৭৬ সালের এই দিনে ফিলিস্তিনিরা যখন তাদের জমি দখলের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছিল, তখন ইজরায়েলি সেনাদের গুলিতে ছ`জন নিহত হয়।
ছ`সপ্তাহ ব্যাপী এই বিক্ষোভ শেষ হবে আগামী ১৫ মে, যেদিনটিকে ফিলিস্তিনিরা `নাকবা` কিংবা বিপর্যয় দিবস হিসেবে পালন করে। ১৯৪৮ সালের ঐ দিনে লাখ লাখ ফিলিস্তিনি তাদের বাড়িঘর ফেলে চলে আসতে বাধ্য হয়েছিল ইজরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর। ফিলিস্তিনিরা বহু দশক ধরে ইজরায়েলে তাদের ফেলে আসা বসত বাড়িতে ফিরে যাওয়ার অধিকার দাবি করছে। কিন্তু ইজরায়েল এই অধিকারের স্বীকৃতি দেয়নি।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স
একে/
আরও পড়ুন