রোহিঙ্গাদের কানাডায় আশ্রয় দিতে সুপারিশ
প্রকাশিত : ১৩:১৯, ৪ এপ্রিল ২০১৮
মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে কানাডায় স্থানান্তরের সুপারিশ করেছে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রোডোর গঠিত কমিশন। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ শেষে দেশটির বিশেষ কূটনীতিক গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রতিবেদন প্রকাশকালে এই সুপারিশ করেন।
সাবেক ওনটারিও প্রধানমন্ত্রী ও টরেন্টোর সংসদ সদস্য বব রয় এই প্রতিবেদন তৈরি করেন। এ ছাড়া তিনি রোহিঙ্গা নির্যাতনে জড়িত ব্যক্তিদের ওপর আরও অধিকহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করেন। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, মিয়ানমার সেনাদের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী জঘন্য অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এর আগে জাস্টিন ট্রডো রয়কে বিশেষ কূটনীতিক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য পাঠান। এরপরই গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে সফর করেন রয়। কক্সবাজারের কুতুপালং ক্যাম্পসহ বেশ কয়েকটি ক্যাম্প পর্যবেক্ষণ শেষে তিনি প্রতিবেদন তৈরি করেন। ওই সময় তিনি মিয়ানমারে সফর করতে চাইলেও তিনি ভিসা পাননি।
এদিকে রোহিঙ্গাদের ওপর সব ধরণের অত্যাচার হয়েছে দাবি করে রয় বলেন, সেখানে পাশবিকতার এমন কিছু ঘটেছে, যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। এসময় তিনি বলেন, আমি নারীদের কাছে যৌন নির্যাতনের এমন পাশবিকতার শুনেছি, যা সভ্য বিশ্বে মেনে নেওয়া যায় না। তাই রোহিঙ্গাদের স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিতে রয় ১৭টি সুপারিশ করেন।
সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে, মিয়ানমার ও আশেপালের দেশগুলোতে যে সব রোহিঙ্গা নাগরিক মানবিকতর জীবন-যাপন করছেন এবং যারা কানাডায় পাড়ি দিতে চান, তাদের জন্য কানাডার দরজা খুলে দেওয়া। পাশাপাশি মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাসহ রোহিঙ্গানিধনে জড়িতদের উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কথা বলেন তিনি। এদিকে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের নিরাপদে দেশটিতে ফিরে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার কথাও বলেন তিনি। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীসহ কানাডাকে মিয়ানমারের উপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ও জাহাজ পরিবহন নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রাখার কথা বলেন তিনি।
রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জীবন ক্রমান্বয়ে খারাপ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে জানিয়ে রয় বলেন, রোহিঙ্গাদের সেবায় বর্তমানে কানাডার ১৫০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। তবে ইতোমধ্যে দেশটি ৪১ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে বলে জানা গেছে। তিনি আরও জানান, গত আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৭ লাখ লোক পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে কমনওয়েলথভূক্ত দেশগুলোর আগামী সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যুটি জোরেশোরে আলোচনার জন্য ট্রডোর সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন রয়। এ ছাড়া জি-৭ সম্মেলনে রোহিঙ্গা নিধন বিষয়ে সরব থাকার ঘোষণা দেন রয়। এই রিপোর্ট কানাডা সরকার যাচাই বাছাই করে খুব শিগগিরই এটার উপর ব্রিফ করবেন বলে জানা গেছে।
সূত্র: আনাদুলো নিউজ এজেন্সি
এমজে/
আরও পড়ুন