ঢাকা, মঙ্গলবার   ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪

সিরিয়া ইস্যুতে যৌথ হামলা চালাবে ফ্রান্স-যুক্তরাষ্ট্র

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২০:৪৬, ১২ এপ্রিল ২০১৮

সিরিয়ার পূর্ব ঘৌতায় ১ হাজার ৪০০ মানুষের নিহতের ঘটনায় রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার করেছে আসাদ ও রুশদের মিলিত বাহিনী। রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয়টি সামনে আসার পরই যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানি দেশটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ইতোমধ্যে সংস্থাটিতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিক্কি হ্যালি ঘোষণা করেছেন দেশটির ব্যবস্থা নিতে হবে। শুধু তাই নয়, রাসায়নিক অস্ত্র যারা ব্যবহার করছে, তাদের বিরুদ্ধে বিশ্বকে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এদিকে ব্রিটেনের সেলিসবাড়িতে সাবেক এক রুশ গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও তার কন্যাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স,কানাডা ও জার্মানিসহ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভূক্ত ২৫টি দেশ। এ ছাড়া ইউরোপীয় সংগঠন ন্যাটোও রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। এরপরই যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানিসহ বাকি দেশগুলোর বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেয় রাশিয়া।

এদিকে সিরিয়া ও রাশিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার ও পাল্টাপাল্টি কূটনীতিক বহিষ্কারের ঘটনায় বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর মাঝে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সিরিয়া ইস্যুতে একই সুরে কথা বলছে, জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র। এরইমধ্যে সিরিয়ায় রাসায়নিক হামলার অভিযোগ এনে যেকোনো মুহূর্তে সিরীয় ভূখণ্ডে নতুন ধরনের স্মার্ট ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, রাশিয়াকে লক্ষ্য করে ট্রাম্প বলেন, প্রস্তুত থেকো, আমরা যে কোন সময় সিরিয়ায় ক্ষেপনাস্ত্র হামলা শুরু করবো।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার চলমান সংকটের মধ্যে যোগ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সব সময়ের মিত্র ফ্রান্স। বৃহস্পতিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদ দেশটিতে রাসায়নিক হামলা চালিয়ে আসছে। তাই, দ্রুতই আমরা রাসায়নিক ক্ষেপনাস্ত্র হামলার জবাবা দিবো। এদিকে সিরিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপে সমর্থনের ব্যাপারে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মেরকেল বলেছেন, ‘তার দেশ আগে থেকেই দাবি করে আসছে যে, সিরিয়া রাসায়নিক অস্ত্রভাণ্ডার নির্মূল করেনি এবং এটাই সত্যি।’

এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা পদক্ষেপ বিরোধীরা বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে। ওই পক্ষে রয়েছে ইরান, রাশিয়া, সিরিয়াসহ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী বেশ কয়েকটি দেশ।

ট্রাম্পের টুইটের জবাবে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, ‘স্মার্ট ক্ষেপণাস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিকে ছুঁড়ে মারা উচিত, বৈধ (সিরিয়ার) সরকারের দিকে নয়; যে সরকার গত কয়েকবছর ধরে সিরীয় ভূখণ্ডে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়ছে।’ এ ছাড়া তিনি বলেন, আমরা টুইটার যুদ্ধে জড়াতে চাই না। তবে দেশটি বলছে, মিত্র বাশার আল আসাদের সমর্থনে যেকোনো ধরনের হামলা হলে দেশটি পিছু হবে না তারা।

এর আগে গত বুধবার রাশিয়া সমর্থিত জোটের তীব্র সমালোচনা করে টুইট করেন ট্রাম্প । তিনি বলেন, যারা মানুষকে মারছে এবং এটি উপভোগ করছে; তাদের মতো গ্যাস প্রয়োগকারী দুষ্টদের দমন করা হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপে আশঙ্কা করা হচ্ছে, ফের কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দিকে যাচ্ছে বিশ্ব। নাকি ইরাক যুদ্ধের মত, সিরিয়ায় হামলা চালিয়ে দেশটির লাখ লাখ নিরীহ মানুষকে হত্যা করবে যুক্তরাষ্ট্র।

সূত্র: আল-জাজিরা, বিবিসি
এমজে


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি