ভারতের প্রধান বিচারপতিকে অভিশংসনের নোটিশ
প্রকাশিত : ২০:৪৩, ২০ এপ্রিল ২০১৮
ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রকে অভিশংসনের জন্য নোটিশ দিয়েছে দেশটির সাত বিরোধী দল। শুক্রবার রাজ্যসভার চেয়ারম্যান এম ভেঙ্কাইয়া নাইডুর কাছে এ–সংক্রান্ত একটি আরজি জমা দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধী সাতটি দলের নেতারা এই আরজিতে স্বাক্ষর করেন।
প্রধান বিচারপতির অভিশংসনের প্রস্তাবে যারা স্বাক্ষর করেছেন, তাদের মধ্যে কংগ্রেস, ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি, সিপিআই (এম), সিপিআই, সমাজবাদী পার্টি, ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লিগ (আইইউএমএল) এবং বহুজন সমাজবাদী পার্টি থেকে নির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্যরা রয়েছেন। অভিশংসনের নোটিশে স্বাক্ষরের আগে এসব রাজনৈতিক দলের নেতারা পার্লামেন্টে এক সভায় একসঙ্গে বসে প্রস্তাব চূড়ান্ত করেন।
ভারতের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল সোলি সোরবজি বলেছেন, শুধু সুনির্দিষ্ট অসদাচরণের অভিযোগেই অভিশংসনের নোটিশ দেওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে অসদাচরণের প্রমাণ দাখিল করতে হবে। তিনি বলেন, ‘ভুল রায় দিয়েছেন—এটি মনে করে কোনো প্রধান বিচারপতিকে অভিশংসনের জন্য নোটিশ দেওয়া যায় না।’
খুব দুঃখের সঙ্গে’ এই পদক্ষেপ নিতে হয়েছে উল্লেখ করে স্বাক্ষরকারী নেতারা বলেন, নির্বাহী বিভাগের হস্তক্ষেপের মুখে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে না পারায় প্রধান বিচারপতিকে অভিশংসনের আরজি জানিয়েছি।
নেতারা জানান, দীপক মিশ্রকে অভিশংসনের আরজির প্রতি রাজ্যসভার ৬০ জনের বেশি সদস্যের সমর্থন রয়েছে। এ ধরনের নোটিশের ক্ষেত্রে রাজ্যসভার কমপক্ষে ৫০ জন সদস্যের স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়।
প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বিরুদ্ধে অসদাচরণের পাঁচটি অভিযোগ এনেছে বিরোধী দলগুলো। গত জানুয়ারি মাসেই এই অভিযোগগুলো উঠেছিল। তখন চারজন বিচারক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে প্রকাশ্যে প্রধান বিচারপতির সমালোচনা করেছিলেন।
এদিকে গতকাল বিচারক বিএইচ লোয়ার মৃত্যুর ঘটনার কোনো তদন্ত করা হবে না বলে উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ।
বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর বিরুদ্ধে দায়ের করা হত্যা মামলার বিচারক ছিলেন বিএইচ লোয়া। ২০১৪ সালে হৃদ্রোগে তার মৃত্যু হয়। ধারণা করা হচ্ছে, বিএইচ লোয়ার মৃত্যুর তদন্ত না করার রায় দেওয়ায় প্রধান বিচারপতিকে অভিশংসনের আরজি জানিয়েছে বিরোধী দলগুলো। তবে কংগ্রেস এ কথা অস্বীকার করেছে। যদিও সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ব্যাপারে অসন্তুষ্টি জানিয়েছে দলটি। একে ‘ভারতের ইতিহাসের দুর্দশার দিন’ বলে অভিহিত করেছে কংগ্রেস।
কংগ্রেস নেতা গোলাম নবী আজাদ বলেন, “মোট ৭১ জনের স্বাক্ষর নিয়ে আমরা নোটিশটি জমা দিয়েছি। এর মধ্যে অবসর নেওয়া ছয়জনও আছেন। তাঁদের গণনায় আনা হবে না।’ কংগ্রেসের আরেক নেতা কপিল সিবাল বলেন, ‘আমাদের আশা, এমন দিন যেন আর কখনো না আসে।”
এমএইচ/টিকে
আরও পড়ুন