অস্ট্রেলিয়ায় ময়ূর নিয়ে যে কারণে বিভক্ত নগরবাসী
প্রকাশিত : ১৯:৪৩, ২২ এপ্রিল ২০১৮
ময়ূর মূলত এশিয়া অঞ্চলের পাখি হলেও, এখন সে পাখিই সমস্যা হয়ে উঠেছে অস্ট্রেলিয়ার শহর ক্যানবেরায়। প্রায় দুই শতাব্দী আগে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকেরা অস্ট্রেলিয়ায় পোষা পাখি হিসেবে নিয়ে গিয়েছিল ময়ূর। এরপর পেখম মেলা সেই পাখির সৌন্দর্যে বিমোহিত হয় সবাই। কিন্তু এখন অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা শহরের বাসিন্দারা বিপাকেই আছেন এই সুদৃশ্য পাখিটিকে নিয়ে।
শহরের মানুষ রীতিমত দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে গেছেন। বিভক্তির কারণ, শহরে এই পাখি মুক্ত ঘুরে বেড়াবে না কি ফাঁদ পেতে তাদের ধরে মেরে ফেলা হবে- সে নিয়ে!
সম্প্রতি ক্যানবেরা শহরে ময়ূরের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। শহরের সড়কে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে তারা, যখন তখন ঢুকে পড়ছে লোকের বাড়িতে।
শোনা যায়, কিছুদিন আগে স্থানীয় এক লোক তার বাড়ির বাথরুমে ঢুকে দেখে সেখানে দেয়ালে সাঁটানো আয়নায় নিজের প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে দেখে সেখানে একটি ময়ূর।
এছাড়া পাখির ডাকে, বিশেষ করে তাদের ডিম পাড়ার মৌসুমে, অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে শহরের বাসিন্দারা। সেই সঙ্গে লোকেজনের শস্য ও সবজিও খেয়ে ফেলছে।
তাছাড়া বড় সড়কগুলোতে দুর্ঘটনা এড়াতে শহরের গাড়ির চালকদের প্রায়ই মারাত্মক অসুবিধায় পড়তে হয়। শহরে অন্য পাখিদের থাকার ও ডিম পাড়ার জায়গাতেও ঢুকে পড়ছে ময়ূর।
এসব কারণে নগর কর্তৃপক্ষ একটি আইন প্রস্তাব করেছে যেখানে বছরে অন্তত একবার একটি ফাঁদ পাতা কর্মসূচী নেওয়া হবে, যাতে ময়ূরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা যায়। আর প্রস্তাবিত এই আইনের পক্ষে সমর্থনের অভাব নেই।
কিন্তু বাধ সেধেছে শহরের বাসিন্দাদের আরেকটি অংশ। তারা বলছেন, এই পাখিরাও এ শহরেরই বাসিন্দা, ফলে তাদের মেরে ফেলার এই সিদ্ধান্ত হবে নির্মম ও অমানবিক। অনেকে একে সৌভাগ্যের প্রতীক বলেও মনে করেন।
অনেকে যুক্তি দিচ্ছেন, বাড়ির চারপাশে বা সৈকতে ঘুরে বেড়ানোর সময় পাশে পাশে ময়ূর হাঁটছে এটিই যেন তাদের চিরাচরিত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এখন তার অন্যথা তারা চান না।
ময়ূরের সংখ্যাধিক্য নিয়ে সমস্যার শুরু ২০০৩ সাল থেকে। তবে অস্ট্রেলিয়ার অন্য শহরে ময়ূরের সংখ্যা বৃদ্ধি সমস্যা সামলাতে কর্তৃপক্ষ আরও নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। যেমন ব্রিসবেনে কেউ ময়ূর পুষতে পারবেন না, এমন ধরণের আইন করতে যাচ্ছে। অন্যথায় প্রায় সাড়ে ছয় হাজার অস্ট্রেলীয় ডলার জরিমানা গুনতে হবে।
এখন ক্যানবেরা শহরবাসীদের প্রতিবাদে ময়ূরের ভাগ্য বদলায় কি-না সেটাই দেখার বিষয়।
সূত্র: বিবিসি
একে//এসি
আরও পড়ুন