`৭১ থেকেই পারমাণবিক অস্ত্র মজুদ শুরু
তৃতীয় বিশ্বশক্তির দ্বারপ্রান্তে পাকিস্তান
প্রকাশিত : ১১:৪৮, ২৬ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ১১:৫০, ২৬ এপ্রিল ২০১৮
১৯৭১ সালের পর থেকে পাকিস্তান পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে চলেছে। শুধু তাই নয় দেশটি বিপজ্জনক প্লুটোনিয়াম ও ইউরোনেয়াম মজুদের মাধ্যমে বিশ্বের তৃতীয় পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রে পরিণত হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটনের যুদ্ধ সংক্রান্ত ওয়েবসাইট মিলিটারি ডট কম। নিবন্ধটি লিখেছেন যুদ্ধ বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ জোসেফ ভি মিকালেফ।
মিকালেফ দাবি করেন, পারমাণবিক অস্ত্র মজুতের পাশাপাশি স্বল্প পাল্লার (৫ থেকে ১০ কিলোমিটার) যুদ্ধাস্ত্র নিজেদের সক্ষমতায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান। এর ফলে ভবিষ্যতে দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন এই বিশেষজ্ঞ। এদিকে দেশটিতে চারটি প্লুটোনিয়াম উৎপাদন রি-এক্টর ও তিনটি প্লুটোনিয়াম পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের প্লান্ট রয়েছে জানিয়ে মিকালেফ বলেন, এর মাধ্যমে দেশটি দ্রুতই তৃতীয় শক্তিধর দেশে পরিণত হবে।
এদিকে পাকিস্তানের অস্ত্র মজুদের ফলে দক্ষিণ এশিয়া উত্তেজনা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা তার। মিকালেফ আরও জানান, পাকিস্তান এ ধরনের বিপজ্জন অস্ত্র তৈরি করার সাহস পাচ্ছে একমাত্র ভারত-চীনের দ্বন্দ্বের কারণে। ভারত-চীনের দ্বন্দ্বের সুযোগ নিয়ে এবং যুক্তরাষ্ট্রের নীরবতায় দেশটি দীর্ঘদিন ধরেই পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ বাড়িয়ে চলছে।
এতে পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের সশস্ত্র ইসলামি জঙ্গি সংগঠনগুলোর হাতে পারমাণবিক অস্ত্র পৌঁছে যেতে পারে বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। মিলিটারি.কমে মিকালেফ লিখেছেন, আফগান তালেবান, তেহরিক-ই-জিহাদ ইসলামি, জয়েশ-ই মোহম্মদ, লস্কর-ই তইবা অথবা হিজবুল মুজাহিদিনের মতো সশস্ত্র জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের কারণেই এ আশঙ্কা করছেন তারা।
বিভিন্ন গোয়েন্দা সূত্র উদ্ধৃত করে মিকালেফ লিখেছেন, বর্তমানে পাকিস্তানের কাছে ১৪০ থেকে ১৫০টি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। কিন্তু মনে করা হচ্ছে, দেশটির কাছে ৩ থেকে ৪ হাজার কিলোগ্রাম ইউরেনিয়াম ও দুশ থেকে তিনশ গ্রাম প্লুটোনিয়াম রয়েছে। এসব উপাদান ব্যবহার করে আরও দুই থেকে আড়াইশ’টি অস্ত্র তৈরি সম্ভব বলেও জানান তিনি। কলকাতা টুয়েন্টিফোর।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ভারত ও পাকিস্তান দেশভাগের পর চারবার যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। ১৯৪৭, ১৯৬৫, ১৯৭১ ও ১৯৯৯ সালে দেশ দুটির মধ্যে যুদ্ধ হয়। এর প্রত্যেকটিতেই ভারত জয়ী হয়েছে। তবে ৬৫ সালের যুদ্ধে ভারত-পাকিস্তান দুদলেরই ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে ৭১ সালের যুদ্ধের ফলে পাকিস্তান রাষ্ট্রটি ভেঙ্গে যায় বলেও দাবি করা হয় প্রতিবেদনে।
এদিকে ১৯৯৯ সালে কারগিল যুদ্ধে দুই দেশই পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের দিকে নজর দেয়। তবে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের কারণে তখন পারমাণবিক যুদ্ধ থেকে রক্ষা পায় দক্ষিণ এশিয়া। এদিকে দেশটির পারমাণবিক অস্ত্র মজুদের অন্যতম কারণ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি। প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধংদেহী মনোভাবের কারণেই পাকিস্তান পারমাণবিক অস্ত্রের দিকে হাত বাড়াচ্ছে। আর এর মাধ্যমে বিশ্বের তৃতীয় শক্তিধর রাষ্ট্র হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি।
সূত্র: ইকোনোমিক টাইমস, মিলিটারি ডট কম
এমজে/
আরও পড়ুন