ফিলিস্তিনের উচিত আলোচনায় বসা নয়তো চুপ থাকা: সৌদি যুবরাজ
প্রকাশিত : ২১:৫৮, ১ মে ২০১৮ | আপডেট: ২২:০৯, ১ মে ২০১৮
সৌদি আরবের যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান ফিলিস্তিন সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন যে, ফিলিস্তিনের উচিত হয় আলোচনার টেবিলে বসা আর নয়তো চুপ করে থাকা। আলোচনায় বসতে না চাইলে দেশটির সরকারকে সব ধরনের অভিযোগ না করতেও পরামর্শ দেন সৌদি যুবরাজ।
গত মার্চ মাসের ২৭ তারিখ যুক্তরাষ্ট্র অবস্থানকালে যুবরাজ মুহাম্মদ এমনটাই বলেছেন উল্লেখ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম।
ইজরায়েলের টেলিভিশন চ্যানেল টেন এবং দৈনিক টাইমস অব ইজরায়লের গত রবিবার রাতে প্রকাশিত খবরে বলা হয় যে, যুক্তরারষ্ট্র অবস্থানকালে নিউইয়র্কে সেখানকার ইহুদী নেতাদের সাথে এক বৈঠকে ফিলিস্তিন সরকারের উদ্দেশ্যে এমন মন্তব্য করেন তিনি। ফিলিস্তিন সরকারের প্রতি যুবরাজ মুহাম্মদের সমালোচনার বক্তব্য এতটাই কঠিন এবং আকস্মিক ছিল যে, বৈঠকে থাকা অনেকেই প্রথমে তা বিশ্বাস করতে পারেননি বলেও সেসব প্রতিবেদনে বলা হয়। এসময় ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ আব্বাসেরও কড়া সমালোচনা করেন তিনি।
সৌদি রাজ সিংহাসনের পরবর্তী দাবিদার এই যুবরাজ আরও বলেন, “বিগত ৪০ বছর যাবত ফিলিস্তিন নেতারা আলোচনার অনেকগুলো সুযোগ হারিয়েছে আর নয়তো বাতিল করেছে। এখনই উপযুক্ত সময় হয় তারা প্রস্তাব গ্রহণ করে আলোচনার টেবিলে আসুক; আর নয়তো চুপ থাকুক এবং অভিযোগ করা বন্ধ করুন”।
তবে ইজরায়েলের সাথে আরব দেশগুলোর সম্পর্ক উন্নোয়নের আগে ফিলিস্তিনের সাথে তাদের (ইজরায়েল) একটি চুক্তি হওয়া অত্যাবশকীয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, “সৌদি এবং অন্যান্য আরব দেশের সাথে ইজরায়েলের চুক্তি করার আগে ইজরায়েলের সাথে ফিলিস্তিনের একটি চুক্তিতে আসা উচিত”।
একই বৈঠকে ইরান প্রেক্ষাপটেও কথা বলেন মুহাম্মদ। ইহুদী নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “ফিলিস্তিন সৌদির সরকারের এজেন্ডার তালিকায় উপরের দিকে নেই। সৌদি সরকারের জন্য আরও কিছু বিষয় আছে যা আগে ফয়সালা করতে হবে; যেমন ইরান”।
অন্যদিকে, সৌদি যুবরাজের এমন বক্তব্যের সত্যতা নিশ্চিত করে কোন মন্তব্য করেনি দেশটির কোন কর্তৃপক্ষ। তবে মার্চের শেষের দিকে ওয়াশিংটনে সৌদি দূতাবাস থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে ইহুদী এবং খ্রিস্টানদের সাথে যুবরাজের বৈঠক হয়েছিল বলে জানানো হয়েছিল। যদিও ঐ বৈঠকগুলোতে ঠিক কোন কোন ব্যক্তিদের সাথে যুবরাজ আলোচনা করেছেন আর কী বিষয়ে আলোচনা করেছেন তা স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়েছিলে যে, “বৈঠকে যুবরাজ এই অঞ্চলের মানুষদের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্কের প্রতি জোর দেন। বিভিন্ন বিশ্বাসের মানুষেরা কীভাবে সহনশীলতা, সহ-অবস্থান বজায় রেখে মানবতার জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য কীভাবে কাজ করে যেতে পারেন সেই বিষয়েই আলোচনা হয়”।
সৌদি-ইজরায়েল বন্ধুত্ব
সাম্প্রতিক সময়ে সৌদি আরবের সাথে ইজরায়েলের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে বেশ উন্নয়ন হয়েছে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান দেশটির রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার পর থেকেই দেশ দুইটির মধ্যে কূটনৈতিক যোগাযোগ নতুন মাত্রা লাভ করে।
ধারণা করা হচ্ছে, দেশটির সাথে সৌদি সরকারের দিন দিন বেড়ে ওঠা ঘনিষ্ঠতারই ফলাফল যুবরাজের এমন মন্তব্য।
গত সপ্তাহে দি আটলান্টিক ডট কমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইজরায়েলের নিজস্ব দেশ ও জাতি গঠনের অধিকার আছে বলেও মন্তব্য করেছিলেন যুবরাজ মুহাম্মদ।
//এস এইচ এস//এসি
আরও পড়ুন