ইংল্যান্ডে ১৭ জনের শুক্রানুতে ৫০০ শিশুর জন্ম
প্রকাশিত : ১৪:৩০, ৭ মে ২০১৮
ইংল্যান্ডে ১৭ জন ব্যক্তি বাবা হয়েছেন অন্তত ৫০০ শিশুর। অর্থ্যাৎ একজন ব্যক্তি এদের অনেকেরই বাবা। বাবা হওয়া এই লোকগুলো মূলত স্পার্ম বা শুক্রাণু দানকারী।
কিন্তু আশংকার কথা এই যে, স্পার্ম দানকারী এসব ব্যক্তির শুক্রাণু কোনো ধরণের পরীক্ষা ছাড়াই প্রজননের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। এর ফলে ত্রুটিযুক্ত ডিএনএ যেমন বিআরসিএআই/২ নামের ক্ষতিকর জিন প্রবেশ করতে পারে শিশুদের মধ্যে। এ ধরণের জিন ওভারিন এবং স্তনের ক্যান্সারের জন্য দায়ী।
শুধু তাই নয়, শুক্রাণুর এমন প্রদানের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুদের অনেকেই একে অপরের ভাই-বোন। আর এ সম্পর্কে তাদের কোন ধারণাই নেই।
এ ধরনের ভাই বোনদের একে অপরের সাথে মিলিয়ে দেওয়ার জন্য কাজ করে সংস্থা হিউম্যান ফার্টিলাইজেশন এন্ড এমব্রায়ো অথরিটি। সংস্থাটি বলছে, অন্তত ১৮ হাজার শিশু আছে যাদের অন্তত আট থেকে নয় জন করে ভাই অথবা বোন এই ১৮ হাজারের মধ্যে।
সংস্থাটি আরও জানায় যে, ১৯৯১ থেকে ২০১৫ এই সময়ের মধ্যে অন্তত ১৭ জন শুক্রানু দানকারী বাবা আছেন যাদের প্রত্যেকে অন্তত ৩০টি করে শিশুর জন্ম দিয়েছেন। এছাড়াও আরও প্রায় ১০৪ জন ২০ থেকে ২৯টি করে শিশুর জন্মের জন্য শুক্রাণু প্রদান করেছেন।
শুক্রাণু ডোনেট করার আগে ডোনারের অনেক ধরণের পরীক্ষা করা হয় যেমন এইচআইভি টেস্ট, হেপাটাইটিস বি এন্ড সি ইত্যাদি। কিন্তু ডোনারদের জিনের অবস্থার পরীক্ষা হয় না।
একটি গবেষণা বলছে যে, বিআরসিএআই জিন বিশিষ্ট নারীদের ৬০ শতাংশের ওপরে ওভারিন ক্যান্সারে ভোগার সম্ভাবনা আছে। যা অন্য মহিলাদের জন্য মাত্র ২ শতাংশ। আর স্তনের ক্যান্সারে আক্তান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ নারী।
ওভারিন ক্যান্সার অ্যাকশন থেকে মেরি ক্লেয়ার প্লেট জানান, “স্পার্ম প্রদানকারীরা হয়তো নিজেদের অজান্তেই ক্যান্সারের বীজ ছড়িয়ে দিচ্ছেন। ওনেক বাবার আবার আগে থেকেই পরিবারে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী থাকতে পারে। এমন ব্যক্তির শুক্রাণু নিয়ে যে শিশু বড় হবে ভবিষ্যতে তার ক্যান্সারে আক্রান্তের সম্ভাবনা অনেক বেশি”।
“ এটা সেইসব দম্পতিদের জন্য উদ্বেগজনক যারা সন্তান নিবেন কিন্তু তারা এসব বিষয়ে এখনও জানেন না। আর তাই ডোনারের শুক্রাণু সেইভাবে পরীক্ষা দেখা হয় না”।
শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অ্যালান পেসি বলেন, “পারফেক্ট ডোনার’ বলে পৃথিবীতে আসলে কিছু নাই। সবার মধ্যেই কিছু না কিছু সমস্যা আছে। আমরা যদি তাঁকে ছেঁকে বাদ দিতে যাই তখন দেখা যাবে যে, আমরা এমন একটি স্থানে এসে দাঁড়িয়েছি যেখানে আর কোন স্পার্ম ডোনার অবশিষ্ট নেই”।
সূত্রঃ টেলিগ্রাফ
//এস এইচ এস// এআর
আরও পড়ুন