ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

শিশু অপহরণ ও চুরির গুজব

তামিল নাড়ুতে গণধোলাইয়ে নিহত ১ নারী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:৪৫, ১১ মে ২০১৮ | আপডেট: ১১:৫৯, ১২ মে ২০১৮

ভারতের তামিল নাড়ু প্রদেশে জনতার গণধোলাইয়ে নিহত হয়েছেন ৫৫ বছর বয়সী এক নারী। আজ শুক্রবারের এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তার সাথে থাকা চার আত্মীয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত পুলিশ ৩০ ব্যক্তিকে আটক করেছে।

ভারতে সাম্প্রতিক সময়ে শিশু অপহরণ ও চুরির গুজব ব্যাপক হারে ছড়িয়ে যায়। বিগত কয়েক সপ্তাহ যাবত মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিশু অপহরণ ও চুরি প্রতিরোধে সবাইকে সতর্ক থাকতে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এমন বার্তা ছড়িয়ে পরার পর এর আগেও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে শিশু চোর বা অপহরণকারী সন্দেহে কয়েক ব্যক্তিকে ‘গণধোলাই’ দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটে।

তামিল নাড়ুতে যা হয়েছে   

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের বরাতে বিবিসি জানায়, তামিল নাড়ুর ত্রিভুবনামালাই জেলায় বেড়াতে আসেন একটি পরিবার। এসময় পথ জিজ্ঞাসা করার জন্য সড়কের পাশে খেলতে থাকা কিছু শিশুদের কাছে যায় ঐ পরিবারের গাড়িটি। গাড়িতে বসেই তাদেরকে সঠিক পথের বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। শিশুদের জন্য কিছু চকলেট  উপহার দেয় পরিবারটি।

এসময় ঐ সড়কে উপস্থিত থাকা লোকজন মুহুর্তের মধ্যে গাড়িটি ঘিরে ফেলে। শিশু অপহরণকারী সন্দেহে তাদেরকে প্রহার করতে শুরু করে তারা।

এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ঐ নারী। আর আহত হওয়া তার পরিবারের অন্যান্যদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এর আগে আজই ত্রিভুবনামালাই জেলাতে একটি হোয়াটস অ্যাপ বার্তায় শিশু অপহরণকারীদের থেকে সাবধান থাকতে বলা হয়। মিথ্যা এই খবর প্রচারের জন্য ইতোমধ্যে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে তামিল নাড়ুর পুলিশ। এই গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ঐ পরিবারের ওপর হামলা করানো হয়েছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

গত এপ্রিল মাসে আরেকটি অডিও বার্তায় হোয়াটস অ্যাপে ছড়ানো হয় যে, তামিল নাড়ুতে প্রায় ৪০০ ব্যক্তির আগমন ঘটেছে যাদের অন্যতম উদ্দেশ্য শিশু অপহরণ করা। এই বার্তার সাথে একটি ভিডিও দেওয়া হয় যেখানে সড়ক থেকে শিশু অপহরণের চিত্র দেখা যায়।

মূলত এসব বার্তার কারণে প্রদেশটির সাধারণ জনগণের মাঝে আগে থেকে এক ধরণের উত্তেজনা কাজ করছিল বলে জানায় সেখানকার পুলিশ। তবে এসব বার্তা যে ভুল এবং মিথ্যা জনগণকে তা বোঝানোর জন্য সচেতনতামূলক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে বলেও জানায় তামিল নাড়ুর পুলিশের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, ভারতে গুজব থেকে প্রাণহানির ঘটনা এটিই নতুন নয়। গত মাসে এই তামিল নাড়ুতেই এক শিশু অপহরণ সন্দেহে এক ব্যক্তির গণধোলাইয়ে মৃত্যু হয়। যে শিশুটিকে তিনি অপহরণ করছিলেন বলে সন্দেহ করা হয় সেই শিশুটি মূলত ঐ ব্যক্তির সন্তান ছিলেন।

এছাড়াও গত বছরের মে মাসে একই ধরণের সন্দেহের জেরে ৬ ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।

২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত আসাম প্রদেশে ‘ডাকিনীবিদ্যা’ চর্চার অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হয় অন্তত ৭০ নারীকে। ২০১৫ সালে নাগাল্যান্ডে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত এক ব্যক্তিকে পুলিশি হেফাজত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে পিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়।

সূত্র: বিবিসি

/এস এইচ এস//টিকে


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি