ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

বিয়ের পর কী করছেন হ্যারি-মার্কেল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১৩, ১৮ মে ২০১৮

আর মাত্র একদিন পরই আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিটিশ রাজবধূ হতে যাচ্ছেন মার্কিন তারকা মেগান মার্কেল। যুবরাজ হ্যারির সঙ্গে তার বিয়ের সানাই বাজবে বলেই। রাজকীয় বিয়ের সব প্রস্তুতিই সম্পন্ন এরই মধ্যে হয়েছে। এখন গণমাধ্যমের ‘হট টপিক’ এই রাজকীয় বিয়ে। মেগান-হ্যারির বিয়ের নানা খবরের ফাঁকে ফাঁকেই উঠে আসছে নানা বিষয়।

গত ডিসেম্বরের প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে শত শত মানুষ হাজির হয়েছিলেন ইংল্যান্ডের শহর নটিংহ্যামে। প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান মার্কলের বাগদানের পর এটাই ছিল তাদের প্রথম কোনও রাজকীয় অনুষ্ঠান। আর এই অনুষ্ঠানটি দেখতে সারা বিশ্বের সাংবাদিকরা উপাস্থিত ছিলেন। সেদিন লিজি জর্ডান নামের একজনও সেখানে গিয়েছিলেন।

প্রিন্স হ্যারি দীর্ঘদিন ধরে এইচআইভি-এইডস বিষয়ে জন সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। লিজি জর্ডান নিজে একজন এইচআইভি পজিটিভ এবং এমন একটি সেবা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন যেখানে তরুণরা এই বিষয়ে তাদের মতামত রাখতে পারে। তিনি বলছিলেন, হ্যারি-মেগানের ব্যাপারে মিডিয়ার যে আগ্রহ রয়েছে এই কাজে সেটাকে কিভাবে ব্যবহার করা যায় তারা এ সম্পর্কেও ভালভাবেই জানেন।

জর্ডান বলেন, এরা একেবারেই অসাধারণ। এই বিষয়ে তারা অনেক কিছু জানেন। এইচআইভি-এইডসকে ঘিরে মানুষের মধ্যে যে বৈষম্য এবং যে সামাজিক অনুশাসন রয়েছে তার সে সম্পর্কে মানুষকে তারা আরও সজাগ করতে পারেন।

তিনি নিজে যা কিছু বিশ্বাস করেন তার প্রচারের জন্য শক্তি এবং সময় ব্যয় করার ব্যাপারটা প্রিন্স হ্যারির জন্য নতুন কিছু নয়। তার বয়স যখন ১৯, তখন লেখাপড়া বন্ধ রেখে তিনি কিছু সময় কাটিয়েছিলেন আফ্রিকার দেশ লেসুটুতে।

সেখানে এইডস মহামারীতে অনাথ হয়ে যাওয়া শিশুদের অবস্থা দেখে তিনি এতটাই বিচলিত হয়ে পড়েন যে এরপর তিনি একটি নতুন সেবা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এর নাম সেন্টাবেল। এরপর থেকে তিনি বারে বারে লেসুটুতে গিয়েছেন এবং এই প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন প্রকল্পে জড়িত হয়েছেন।

সেন্টাবেলের প্রধান নির্বাহী ক্যাথি ফ্যরিয়ার বলছেন, আন্তর্জাতিক ক্যাম্পেইনার হিসেব প্রিন্স হ্যারি খুবই কার্যকর এক ব্যক্তিত্ব।

একজন খ্যতিমান অভিনেতা মেগান মার্কেলও তার ভাবমূর্তিকে ব্যবহার করে নানা বিষয়কে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। ২০১৬ সালে সেবা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্লড ভিশনের প্রতিনিধি হিসেবে তিনি রোয়ান্ড সফর করেন। জাতিসংঘের নারীবিষয়ক দূত হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন।

গত বছর তিনি মুম্বাই গিয়ে মাইনা মহিলা ফাউন্ডেশনের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন। এই রাজকীয় দম্পতি বিয়ের উপহার হিসেবে পাওয়া অর্থ যে সাতটি প্রতিষ্ঠানে দান করবেন বলে ঘোষণা করেছেন, তার মধ্যে মাইনা মাহিলা একটি।

বিয়ের পর তার ভাসুর ও তার জা কেমব্রিজের ডিউক এবং ডাচেসের পর মেগান মার্কেল হবেন রাজকীয় ফাউন্ডেশনের চতুর্থ পৃষ্ঠপোষক। মানসিক স্বাস্থ্য, সাইবার বুলিং এবং পরিবেশ সংরক্ষণ ইত্যাদি বিষয়ে এই ফাউন্ডেশন ইতোমধ্যেই মনোযোগ দিয়েছে। ফাউন্ডেশনের বোর্ডে মেগানের যোগদানের পর নতুন বিষয় যুক্ত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

গত ফেব্রুয়ারি মাসে বোর্ডের এক সভায় মেগান মার্কেল বলেন, আপনারা প্রায়ই একটি কথা শুনে থাকবেন। তা হলো- আমরা নারীদের আওয়াজ প্রকাশে সহায়তা করছি। কিন্তু আমি এর সঙ্গে মোটেই একমত নই। নারীদের আওয়াজ তাদের কণ্ঠেই রয়েছে। আমাদের শুধু তাদের সেই আওয়াজ প্রকাশের শক্তি বাড়াতে সহায়তা করতে হবে। এবং মানুষকে সেই আওয়াজ শুনতে উৎসাহিত করতে হবে।

ক্যমিলা টমিনি হলেন ব্রিটিশ পত্রিকা দা সানডে এক্সপ্রেসের রাজকীয় খবর বিভাগের সম্পাদক। তিনি মনে করেন, প্রিন্স হ্যরি বরাবরই খুব কার্যকর এক কণ্ঠ। উদাহরণ হিসেবে আমি শুধু ইনভিকটাস গেমসের কথাই তুলে ধরবো এবং বলবো দেখুন এ থেকে কতখানি সাফল্য তিনি অর্জন করেছেন। এখন তার সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন মেগান মার্কেল, যার সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর ক্ষমতা সম্ভবত রাজপরিবারের অন্য সদস্যদের চেয়েও বেশি। এদের যৌথ শক্তি ব্র্যাড এবং অ্যাঞ্জেলিনার মতো `পাওয়ার কাপল`কেও ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আমার বিশ্বাস।

প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান মার্কলকে ঘিরে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের যে প্রবল আগ্রহ তৈরি হয়েছে, বিয়ের পর তাতে ভাটা পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।

কিন্তু দম্পতি হিসেবে তাদের ভাবমূর্তি এমনই যে আন্তর্জাতিক আন্দোলনের ধারায় তারা তখনও শক্তিশালী কণ্ঠ হিসেবে বিবেচিত হতে থাকবে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি।

একে// এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি