ট্রাম্প-কিমের বৈঠক হবে সিঙ্গাপুরের যে দ্বীপটিতে
প্রকাশিত : ১৩:২৭, ৬ জুন ২০১৮ | আপডেট: ১৩:২৮, ৬ জুন ২০১৮
পাঁচ তারকা এ স্যান্টোসা হোটেলটিতে ট্রাম্প-কিম শীর্ষ বৈঠক হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের মধ্যে বহুল প্রত্যাশিত বৈঠকটি সিঙ্গাপুরের স্যান্টোসা দ্বীপের একটি পাঁচ তারকা হোটেলে অনুষ্ঠিত হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দফতর হোয়াইট হাউজ থেকে এটি নিশ্চিত করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার ট্রাম্প বলেছেন, পরিকল্পনা সুন্দরভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।
ঐতিহাসিক এ শীর্ষ বৈঠকটি আগামী ১২ জুন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু এ বৈঠকের অনেক বিষয় এখনও নিশ্চিত করা হয়নি। প্রসঙ্গত, উত্তর কোরিয়ার নেতা এবং কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্টর মধ্যে এটি হবে প্রথম বৈঠক।
যে ৬৩টি দ্বীপের সমন্বয়ে সিঙ্গাপুর দেশটি গঠিত হয়েছে স্যান্টোসা দ্বীপ সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই দ্বীপটি ৫০০ হেক্টর জায়গার উপর গড়ে উঠেছে। মূল ভূখণ্ড থেকে এ দ্বীপটি কাছে। এখানে প্রচুর বিলাসবহুল হোটেল এবং অভিজাত গলফ কোর্স রয়েছে।
তবে স্যান্টোসা দ্বীপের একটি কালো অধ্যায় রয়েছে। দস্যুতা, রক্তপাত এবং যুদ্ধের ইতিহাস রয়েছে এ দ্বীপের।
উনিশ শতকে ব্রিটেনের অধীনস্থ একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে সিঙ্গাপুরের আবির্ভাব ঘটে। ভারত এবং চীনের মধ্যে যে সমুদ্র পথ আছে সেটির মাঝখানে সিঙ্গাপুরের অবস্থান। ফলে সিঙ্গাপুরের আলাদা একটি গুরুত্ব রয়েছে।
ব্রিটিশ শাসনের পূর্বেই সিঙ্গাপুর একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠছিল। এখানে ব্যবসায়ীদের আসা-যাওয়া যেমন ছিল, তেমনি দস্যুদের আনাগোনাও ছিল।
স্যান্টোসা দ্বীপটি `মৃত্যুর দ্বীপ` হিসেবে পরিচিত ছিল। কারণ এ দ্বীপ দস্যুতার জন্য পরিচিত ছিল।
১৯৪২ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটেনের আত্নসমর্পনের পর সিঙ্গাপুর জাপানের হাতে চলে যায়। তখন জাপানিরা এ দ্বীপটিকে `সায়োনান` অর্থাৎ `দক্ষিণের বাতি` নামে নতুন নামকরণ করে।
সে দ্বীপে নৃ-তাত্ত্বিক চীনা সম্প্রদায়ের বসবাস ছিল। জাপান-বিরোধীদের সেখান থেকে সরানোর নামে বহু মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী চীনা পুরুষদের বিভিন্ন জায়গায় ডেকে নিয়ে মেশিনগান দিয়ে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে সাগরে ফেলে দেওয়া হয়। যেসব জায়গায় হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল তার মধ্যে বর্তমানে কাপেল্লা হোটেলের সামনে সমুদ্র সৈকত অন্যতম।
১৯৭০ সালে সিঙ্গাপুর সরকার দ্বীপটির নামকরণ করে স্যান্টোসা, যার অর্থ `শান্তি`। এরপর দ্বীপটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ দ্বীপে গড়ে উঠেছে অনেক ব্যয়বহুল আবাসন প্রকল্প। এখানে একেকটি বাড়ির দাম কয়েক মিলিয়ন ডলার। সেই সঙ্গে রয়েছে বিলাসবহুল গলফ কোর্স এবং নানা ধরনের অভিজাত রেস্টুরেন্ট।
মূল ভূখণ্ডের কাছ হওয়ায় স্যান্টোসা দ্বীপ বেশ নিরাপদ। এ দ্বীপে যাওয়ার জন্য যেসব প্রবেশ পথ আছে সেগুলোকে খুব সহজেই নিরাপদ রাখা যায়। সেখানে যাওয়ার জন্য একটি ক্যাবল কার লাইন, একটি মনোরেইল লাইন এবং যানবাহন চলাচলের একটি টানেল রয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা আলোচনায় যদি কোনও বিরতি নিতে চান, তাহলে সেখানে গলফ কোর্সও রয়েছে।
সূত্র: বিবিসি
একে//
আরও পড়ুন