ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

বিবিসির বিশ্লেষণ

কিম-ট্রাম্প বৈঠকে জিতলেন কে?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:০০, ১৩ জুন ২০১৮

সিঙ্গাপুরে কিম জং উনের সঙ্গে ঐতিহাসিক আলোচনা এবং চুক্তি স্বাক্ষরের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, বৈঠক এতটাই ভালো হয়েছে যা কেউই আশা করেননি। তবে অনেক বিশ্লেষক দেড় পৃষ্ঠার স্বাক্ষরিত দলিলটিকে `অস্পষ্ট এবং সারবস্তুহীন` বলে আখ্যায়িত করেছেন।

ট্রাম্প বলেছেন, উত্তর কোরিয়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা ক্ষেত্র ধ্বংস করতে রাজি হয়েছে।

বিবিসির বিশ্লেষক লরা বিকার বলছেন, আমাদের বলা হয়েছে এটা হবে। তাই হয়তো আমাদের `দেখা যাক কি হয়` বলে অপেক্ষা করতে হবে - যেমনটা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রায়ই বলে থাকেন।

উত্তর কোরিয়ার নেতার কাছ থেকে পূর্ণাঙ্গভাবে পরমাণু অস্ত্র মুক্ত করার একটি প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন ট্রাম্প।

লরা বিকার বলছেন, এখানে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দের অনুপস্থিতি দেখা যাচ্ছে।

একটি হচ্ছে `রিভার্সিবল` - অর্থাৎ এমনভাবে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত হতে হবে উত্তর কোরিয়াকে যাতে তারা ভবিষ্যতে আর পারমাণবিক সক্ষমতা ফিরে পেতে না পারে। আরেকটি হচ্ছে `ভেরিফায়েবল` - অর্থাৎ তথ্য-প্রমাণ যাচাই করে নিশ্চিত হতে হবে যে হ্যাঁ সত্যিই এটা হয়েছে।

আমেরিকা কিন্তু এটা পাওয়ার জন্যই চাপ দিচ্ছিল। কিন্তু দেড় পৃষ্ঠার দলিলে এ কথা নেই।

ট্রাম্প সংবাদ সম্মেলনে দলিলপত্রে নেই এমন কিছু খুঁটিনাটি প্রকাশ করে বলেছেন, পরমাণু অস্ত্র ত্যাগের ব্যাপারটি যেন যাচাই করা যায়, তাতে কিম জং উন রাজী হয়েছেন।

হয়তো ভবিষ্যতে কোনও এক সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প যে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত উত্তর কোরিয়া চাইছেন - তা পাবেন। কিন্তু এখনও তা তিনি পাননি - বলছেন লরা বিকার।

কিম জং উন ট্রাম্পকে বলেছেন, তিনি তার হাতে যে যুদ্ধবন্দীদের মৃতদেহ আছে তা ফেরত দেবেন। তাদের আত্মীয়স্বজন যারা যুক্তরাষ্ট্রে বাস করেন তার জন্য এটা কিছুটা স্বস্তির খবর।

কিম জং উন পেয়েছেন যাকে বলা চলে প্রায় রক স্টারের মর্যাদা। ক`দিন আগেও কিম জং উন লোকের চোখে ছিলেন বিচ্ছিন্ন, একঘরে হওয়া একজন `যুদ্ধোন্মাদ স্বৈরশাসক`, `মানবাধিকার লংঘনকারী` । অথচ সিঙ্গাপুরে তিনি পেয়েছেন জনতার হর্ষধ্বনি আর স্বাগতম।

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি আর ওই এলাকায় দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক মহড়া চালাবেন না। এই মহড়াগুলোকে কিম জং উন বলতেন উস্কানিমূলক। এখন ট্রাম্পও তাই বলছেন, আরো বলছেন, এগুলো খুব ব্যয়বহুলও বটে।

কোনও কোনও বিশ্লেষক এ অঙ্গীকারকে `মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছাড় দেওয়ার শামিল` বলে আখ্যায়িত করেছেন।

অবশ্য ট্রাম্প বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা এখনও উঠে যাচ্ছে না। কিম প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছেন বলে দেখা গেলে পরে তা তুলে নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেছেন, তিনি কোনও ছাড় দেননি।

তাই এটা কি `উইন-উইন` হলো - অর্থাৎ দু`পক্ষই কি জিতেছেন? নাকি শুধুই জিতেছেন কিম জং উন?

লরা বিকার বলছেন, এখনই বলা কঠিন, অন্তত যতদিন এর আরো খুঁটিনাটি জানা না যাবে। তবে আপাতত মনে হচ্ছে জিতেছেন কিমই।

সূত্র: বিবিসি

একে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি