দেশ থেকে নিজের টয়লেট এনেছিলেন কিম
প্রকাশিত : ২৩:০০, ১৩ জুন ২০১৮ | আপডেট: ২৩:০১, ১৩ জুন ২০১৮
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং-উন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রামের মধ্যে শত্রুতা সব সময় লক্ষ্য করা গেছে। তাদের মধ্যে বৈঠক হওয়া নিয়ে বেশ সংসয় ছিল। সব জল্পনা-কল্পানার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে বৈঠক হলো সিঙ্গাপুরে এই দুই নেতার মধ্যে। এই দুই নেতার বৈঠক নিয়েও রয়েছে বেশ কিছু চমকপ্রদ ঘটনা। এর মধ্যে অন্যতম ছিল, উত্তর কোরিয়া থেকে ভ্রাম্যমাণ টয়লেট সিঙ্গাপুরে নিয়ে আসা হয় কিমের জন্য।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-আনের বৈঠককে বলা হচ্ছে ঐতিহাসিক ঘটনা। সিঙ্গাপুরে এই প্রথম দুটো দেশের নেতারা বৈঠক করলেন। তাদের মধ্যে হওয়া করমর্দন থেকে শুরু করে তাদের যৌথ সমঝোতায় স্বাক্ষর - সবকিছু থেকেই বিশ্লেষকরা দেখার চেষ্টার করছেন এই আলোচনায় আসলে কতোটা কী অর্জিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সম্পর্কের ভবিষ্যতের ক্ষেত্রেও বা এই সমঝোতার তাৎপর্য কী?
কিন্তু সেদিনের কিছু বিষয় ও ঘটনা ছিল, যা নিয়ে লোকজন প্রচুর কথাবার্তা বলছেন। ঠিক কী ঘটেছিল তখন?
১. সমুদ্র সৈকত
প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প পরিচিত ছিলেন একজন প্রপার্টি ব্যবসায়ী হিসেবে। তারপরেও এটি বিস্ময়কর যে কেন তিনি উত্তর কোরিয়ার অপরিচিত সমুদ্র উপকূলের কথা উল্লেখ করেছেন।
কিমের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি বলেছেন, তাদের (উত্তর কোরিয়া) দারুণ কিছু সমুদ্র সৈকত আছে। তারা যখন সমুদ্রে তাদের কামান থেকে বিস্ফোরণ ঘটায়, তখন আপনারা সেসব দেখতে পান। সেখানে কি দারুণ সব বাড়িঘর বা কন্ডো হতে পারে না?
যুক্তরাষ্ট্রের সরকার তার নাগরিকদেরকে উত্তর কোরিয়ায় না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে আসছে। এবং বলেছে, যেসব নাগরিক উত্তর কোরিয়ায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন তারা যেন যাওয়ার আগে উইলের খসড়া করে যান।
২. পোজ বা ভঙ্গি
দুই নেতা যখন একসঙ্গে দুপুরের খাবার খেতে যান, ট্রাম্প তখন খাবারের টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সকৌতুকে জিজ্ঞেস করেন:"ভালো ছবি পাচ্ছেন, সবাই? যাতে আমাদেরকে সুন্দর, হ্যান্ডসাম এবং চিকন দেখায়?"
তবে তার এই কথার অর্থ মনে হয় অনুবাদের কারণে হারিয়ে গিয়েছিল। কারণ কিমের চোখেমুখে তখন কোন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ফটোসাংবাদিকদের কাছে জানতে চাচ্ছেন তাদেরকে সুন্দর দেখাচ্ছে কি না।
৩. ভিডিও-
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সংবাদ সম্মেলন শুরু হওয়ার আগে সাংবাদিকদেরকে চার মিনিটের একটি ভিডিও দেখানো হয়। এটি খুবই অস্বাভাবিক একটি ঘটনা। ভিডিওটি ছিল কোরীয় এবং ইংরেজি ভাষায়। সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেছেন, যে এই ভিডিওটি তিনি কিম জং-আনকে দেখিয়েছেন।
ভিডিওটিতে এমন কিছু দৃশ্য আর মিউজিক যোগ করা হয়েছে যাতে উত্তেজনার সৃষ্টি হতে পারে। এর ধারাভাষ্য দিচ্ছেন যিনি, নাটকীয় কণ্ঠে তিনি জিজ্ঞেস করছেন: এই নেতা কি তার দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্যে কাজ করবেন ... তিনি কি শান্তির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সমৃদ্ধি উপভোগ করবেন, যে সমৃদ্ধি তিনি আগে কখনো দেখেননি?
৪. দ্য বিস্ট
আলোচনার পর ট্রাম্প সিদ্ধান্ত নিলেন যে তিনি উত্তর কোরিয়ার নেতাকে তার কালো রঙের লিমুজিন গাড়িটি দেখাবেন। গাড়িটি পরিচিত `দ্য বিস্ট` নামে।
ক্যামেরা তখন দুই নেতাকে অনুসরণ করলো। তারা হেঁটে গেলেন গাড়ির দিকে। কিম খুব অল্প সময়ের জন্যে গাড়ির ভেতরটা দেখলেন।
৫. কলম
সমঝোতায় সই করার জন্যে টেবিলের ওপর যে কলমটি রাখা ছিল সেটি ছিল কালো রঙের। তার গায়ে ছিল প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের স্বাক্ষর, সোনালী রঙের।
কিন্তু এই কলমে সই করেননি কিম। একেবারে শেষ মুহূর্তে কিমের প্রভাবশালী বোন কিম ইউ-জং তার ভাই-এর দিকে একটি বলপয়েন্ট কলম এগিয়ে ধরেন, যা দিয়ে তিনি চুক্তিতে সই করেছেন।
পুরো সফরেই উত্তর কোরিয়ার নেতার নিরাপত্তার বিষয়টিকে খুব গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে কলমটি কি রাজনৈতিক না-কি নিরাপত্তার কারণে বদলানো হয়েছে, তা এখনও পরিস্কার নয়।
সংবাদ মাধ্যমে এও খবর বেরিয়েছে যে কিম তার সঙ্গে করে একটি ভ্রাম্যমাণ টয়লেট সিঙ্গাপুরে নিয়ে গিয়েছিলেন। কেন?
বলা হচ্ছে, যাতে কিমের মলমূত্র থেকে কেউ তার সম্পর্কে জৈব-তথ্য বের করে ফেলতে না পরে।
অবশ্য এই খবরটি বিবিসি যাচাই করে দেখতে পারেনি।
তথ্যসূত্র: বিবিসি।
এসএইচ/
আরও পড়ুন