ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

চীনের পর মমতার যুক্তরাষ্ট্র সফরও বাতিল, নেপথ্যে...

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:১৭, ২৪ জুন ২০১৮

চীন সফর বাতিলের পর এবার যুক্তরাষ্ট্র সফরেও যাওয়া হচ্ছে না পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেইজিং সফর মমতা নিজে বাতিল করলেও যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে যে অনুষ্ঠানে মমতার যোগ দেওয়ার কথা ছিল সেই রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃপক্ষ মমতাকে না আসতে অনুরোধ করেছে। এ নিয়ে ভারতের রাজনীতিক মহলে নানা গুঞ্জনের ডালপালা ছড়াচ্ছে।  

শিকাগো শহরে বিশ্ব ধর্ম সম্মেলনে স্বামী বিবেকানন্দের বক্তৃতার ১২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে মমতাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল রামকৃষ্ণ মিশন। যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু ১১ জুন হঠাৎ তাঁকে চিঠি দিয়ে ২৬ আগস্টের ওই অনুষ্ঠান বাতিল করার কথা জানায় শিকাগোর বিবেকানন্দ বেদান্ত সোসাইটি।

সোসাইটির অধ্যক্ষ স্বামী ঈশাত্মানন্দ চিঠিতে মমতাকে লিখেছেন, রামকৃষ্ণ মিশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বামী অভিরামানন্দের আকস্মিক মৃত্যু (বেলুড়ে গঙ্গা থেকে ৮ জুন তাঁর দেহ মেলে) এবং অন্য কিছু ‘অপ্রত্যাশিত অসুবিধার’ জন্য অনুষ্ঠানটি বাতিল করা হচ্ছে। যদিও প্রেক্ষাগৃহ ভাড়া নেওয়া থেকে শুরু করে অন্য নানা প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গিয়েছিল বলে রামকৃষ্ণ মিশনের দাবি।

এখানেই বিষয়টি খুব ‘সরল’ বলে মনে করছে না রাজনৈতিক মহল। বিদেশ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও কিছু দিনের মধ্যেই শিকাগো যাওয়ার কথা। সেখানে বিবেকানন্দের শিকাগো বক্তৃতার ১২৫ বছর উপলক্ষেই মোদি অন্য একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। ওখানকার কোনো একটি ‘হিন্দু’ সংগঠনের নামে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর সফরের গুরুত্ব ‘বাড়াতে’ মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর বাতিল করা হল বলে মনে করা হচ্ছে। মমতা সেখানে গেলে তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ সংগঠিত করা হতে পারে বলেও অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল।

একইভাবে যাত্রার কয়েক ঘণ্টা আগে মুখ্যমন্ত্রীর চীন সফর বাতিল হওয়ার পিছনেও বিদেশ মন্ত্রকের ভূমিকার প্রশ্ন উঠছে। রাজনৈতিক মহলে অনেকের ধারণা, মমতার সফর নিয়ে চীন যত উৎসাহী ছিল, প্রধানমন্ত্রীর দফতর সেভাবে উৎসাহী ছিল না। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে এক নেতার মন্তব্য, ‘মুখ্যমন্ত্রীকে যেতে বলেছিলেন বিদেশমন্ত্রী। ২ এপ্রিল মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সফর চূড়ান্ত করে দিল্লিকে জানিয়ে দেন। কিন্তু আড়াই মাস কেটে গিয়ে যাত্রার চার ঘণ্টা আগেও তিনি জানতে পারলেন না, কার সঙ্গে দেখা করবেন ওখানে। এটা কি খুব স্বাভাবিক?’

বিদেশ মন্ত্রণালয় সূত্র অবশ্য বলছে, আসল কারণ হল চীনা প্রটোকল। প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপ্রধান। তিনি গেলে রাষ্ট্রীয় স্তরে চীনা প্রতিনিধিরা দেখা করেন। কিন্তু কোনো প্রাদেশিক নেতা চীনে গেলে তাঁর সঙ্গে প্রাদেশিক নেতাই দেখা করবেন। রাষ্ট্রীয় স্তরের কেউ দেখা করবেন না। এই প্রোটোকল ভাঙতে চীন কখনও রাজি হয় না।

যদিও মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

/ এআর /


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি