আপাদত অনিশ্চয়তার অবসান, জোট সরকারই থাকছে
প্রকাশিত : ১০:৩২, ৪ জুলাই ২০১৮ | আপডেট: ১০:৩৪, ৪ জুলাই ২০১৮
অবশেষে শেষরক্ষা হলো জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের৷ আপাতত জার্মানির জোট সরকার সংকট থেকে রেহাই পেল৷ সোমবার রাতে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফার তাঁদের সংঘাত মিটিয়ে নিলেন৷ এই আপোশ মীমাংসা যে কেবল জোট টিকিয়েছে তা নয়, বরং এতে যে সরকারই টিকে গেল। তাই চ্যান্সেলর হিসেবে মার্কেলই যে থাকছে, তার কোনো সন্দেহ নেই।
জার্মানির সীমান্তে অবৈধ শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর দাবিতে অটল থাকার পর বাভেরিয়ার সিএসইউ দলের নেতা সেহোফার শেষ পর্যন্ত এক আপোশ মীমাংসা মেনে নিলেন৷ তবে ‘ঐকমত্য` সত্ত্বেও ম্যার্কেল ও সেহোফা একসঙ্গে সাংবাদিকদের সামনে এলেন না৷ সেহোফার বলেন, তিনি পদত্যাগ না করে মন্ত্রী থেকে যাচ্ছেন৷
সোমবারের বোঝাপড়ার আওতায় বাভেরিয়া-অস্ট্রিয়া সীমান্তে অবৈধ শরণার্থীদের কিছু অন্তর্বর্তীকালীন কেন্দ্রে আটক রাখা হবে৷ তারপর অস্ট্রিয়ার সম্মতি পেলে তাদের ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে৷ উল্লেখ্য, অস্ট্রিয়া আগেই জার্মানির সীমান্ত থেকে বিতাড়িত শরণার্থীদের গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে৷ জার্মানিতে সোমবারের বোঝাপড়ার পরেও অস্ট্রিয়া সীমান্তে সুরক্ষার উল্লেখ করেছে৷ অর্থাৎ অবৈধ শরণার্থীদের শনাক্ত করে সীমান্তে এমন কেন্দ্রে আটক রাখলেও দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ছাড়া তাদের সেই দেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে না, যেখানে তারা নিজেদের নথিভুক্ত করেছিল৷
এমন ‘সমাধানসূত্র` গত কয়েক সপ্তাহের রাজনৈতিক অস্থিরতা এই মুহূর্তে দূর করলেও আরও কিছু প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে৷ প্রথমত জার্মানির বর্তমান জোট সরকারে ৩টি শরিক দল রয়েছে৷ গত দুই সপ্তাহে ম্যার্কেল-সোহোফার সংঘাতের সময়ে এসপিডি দল প্রায় নীরব ছিল৷ এবার সেই ‘সমাধানসূত্র` কার্যকর করতে হলে এসপিডি দলেরও সম্মতির প্রয়োজন৷ অথচ ২০১৫ সালে ঠিক একই প্রস্তাব নস্যাৎ করে দিয়েছিল এসপিডি৷ বর্তমান কোয়ালিশন চুক্তির মধ্যে এমন কোনো কর্মসূচির উল্লেখ না থাকায় তারা এই প্রস্তাব কার্যকর করতে বাধ্য নয়৷ সোমবার রাতে তিন দলের বৈঠকের পরে এসপিডি নেত্রী আন্দ্রেয়া নালেস বলেন, এখনো বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়ে গেছে৷ দলের মধ্যে ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে এসপিডি দল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সরকারি জোটের বৈঠকে যোগ দেবে৷
তাছাড়া সেহোফার এ যাত্রা নিজের মুখরক্ষা করতে পারলেও তাঁর সঙ্গে চ্যান্সেলর ম্যার্কেল-এর ব্যক্তিগত সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটেছে৷ সোমবার দুপুরেও সেহোফার গর্জে উঠে বলেছিলেন, ‘‘যাকে আমি চ্যান্সেলর বানিয়েছি, সেই আমাকে বরখাস্ত করবে!`` সরকারের কার্যকালের বাকি সময়ে দুই নেতা কীভাবে একসঙ্গে কাজ করবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে৷ দুই নেতার এই ব্যক্তিগত সংঘাতের ফলে ইউনিয়ন শিবিরের দুই দল – ফেডারেল স্তরে সিডিইউ ও বাভেরিয়ার সিএসইউ পরস্পর থেকে অনেক দূরে সরে গেছে৷ সেই ক্ষত আদৌ দূর করা সম্ভব কিনা, তাও স্পষ্ট নয়৷
সূত্র: ডয়েচে-ভেলে
এমজে/
আরও পড়ুন