পুলিশ দেখা করতে চেয়েছে, তারাই নথি দিয়েছে: রয়টার্স সাংবাদিক
প্রকাশিত : ২১:৪৮, ১৭ জুলাই ২০১৮
রাষ্ট্রীয় গোপন নথি হস্তগত করার অপরাধে বিচার শুরু হয়েছে মিয়ানমারের দুই সাংবাদিকের। গ্রেফতারের সময় রয়টার্সে কর্মরত থাকা এই দুই সাংবাদিকের একজন আদালতকে জানান যে, এক পুলিশ সদস্য তাঁর সাথে দেখা করতে চেয়েছেন। আর যে নথি সংগ্রহের অভিযোগে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয় তা ঐ পুলিশ সদস্যই তাঁদেরকে দেন।
গতকাল সোমবার থেকে ওয়া লোন (৩২) এবং কিয়াও সো ও এর জবানবন্দি রেকর্ড করা শুরু করে মিয়ানমারের ইনসেইন আদালত। প্রথমে আদালতে ঘটনার বর্ণনা দেন ওয়া লোন।
গতকাল সোমবার আদালতকে তিনি বলেন, গ্রেফতার হওয়ার দিন (১২ ডিসেম্বর,২০১৭) পুলিশ সদস্য ল্যান্স কর্পোরাল নায়িং লিন তাকে দুইবার ফোন করেন। অফিসের কর্মঘন্টা শেষ হয়ে গেলেও দেখা করার জন্য তাগিদ দেন নায়িং।
তিনি বলেন, “৫টার পর যখন আমি অফিস থেকে বের হচ্ছিলাম তখন নায়িং লিন আমাকে ফোন করেন এবং বলেন আমি যেন সন্ধ্যায় অবশ্য তার সাথে দেখা করি। তিনি বলেন, যদি আমি তখন না যাই তাহলে হয়তো তার সাথে আমার দেখা হবে না কারণ তাকে অন্য অঞ্চলে বদলি করা হবে”।
শেষমেশ নায়িং এর সাথে দেখা করতে গেলে হঠাত করেই তাঁর হাতে কিছু রোল করা কাগজ ধরিয়ে দেন বলে দাবি করেন ওয়া লোন। তিনি বলেন, “ঐ কাগজ নিয়ে আমাদের মধ্যে কোন ধরনের কথা হয়নি। সে হঠাত করে কাগজগুলো বের করেন আর আমার হাতে দিয়ে দেন। আমি সেগুলো চাইনি”।
তখন ওয়া লোনের সাথে কিয়াও সো ও ছিলেন। “কাগজগুলো দিয়েই তাড়াহুড়া করে নায়িং লিন বের হয়ে যান। এরপর যখন আমরা রেস্টুরেন্ট থেকে বের হতে নেই তখনই আমাদেরকে পুলিশ গ্রেফতার করে। আমরা তখন পর্যন্ত ঐসব কাগজ খুলেও দেখিনি”।
প্রসঙ্গত, দেশটির রাখাইল অঞ্চলে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও পুলিশের নির্যাতন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের দায়িত্বে ছিলেন এই দুই সাংবাদিকতা। ধারণা করা হয়, তাদেরকে ইচ্ছাকৃতভাবে ফাঁসানোর জন্যই এই ‘নথি নাটক’ সাজানো হয়েছে।
সাংবাদিক আটক ও বিচারের এই ঘটনাকে ‘প্রহসন’ এবং ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ’ হিসেবে উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনেকেই। তবে এতকিছুর মধ্যেও বিচারের মুখোমুখি করা হলো ওয়া লোন এবং কিয়াও সো’কে। বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে ১৪ বছর করে জেল হতে পারে এই দুই সাংবাদিকের।
সূত্রঃ রয়টার্স
//এস এইচ এস//এসি
আরও পড়ুন