ইমরান খানকে ঘিরে যত বিতর্ক
প্রকাশিত : ১০:১২, ৩১ জুলাই ২০১৮
নির্বাচনের আগেই বড় বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন ইমরান খানের সাবেক স্ত্রী রেহাম খান। সাপের খোলসের মতো একের পর এক ইমরানের অনিয়ম-দুর্নীতি, নারী লিপ্সার কথা বেরিয়ে আসতে থাকা রেহামের লেখায়। এরপরও পাকিস্তানের জনগণ ইমরানকে বিজয়ী করে। জয়ী হওয়ার পর রেহাম ফের বিস্ফোরক মন্তব্য করেন, সেনাবাহিনীর জুতার পালিশ করার জন্যই ইমরানকে বেছে নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।
শুধু রেহাম-ই নন, ইমরান নিজেও অনেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। তার মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো নারীবাদ, তালেবান খান, ভারত বিরোধীতা, সেনাছায়া, কট্টোরবাদীতাসহ আরও বেশ কিছু বিতর্ক আছে তার বিরুদ্ধে।
নারীবাদ
পাকিস্তান ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ইমরান নারীবাদীদের মোটেও পছন্দ করেন না। তিনি মনে করেন, নারীবাদের ধারণা পুরোপুরি পশ্চিমা। গত জানুয়ারিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইমরান বলেছিলেন, নারীবাদের কারণে ‘মায়ের ভূমিকায় নারীদের অধঃপতন ঘটে’। সমালোচকেরা বলছেন, রক্ষণশীলদের ভোট আদায় করতেই পিটিআই চেয়ারম্যানের এই নতুন রূপ!
ব্লাসফেমি আইন
পাকিস্তানের বিতর্কিত ব্লাসফেমি আইন রক্ষায় রাস্তায় নেমেছিলেন ইমরান। ব্লাসফেমি আইনে দোষীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার বিধান আছে। বুধবারের নির্বাচনের কয়েক সপ্তাহ আগে টেলিভিশনে দেওয়া এক বক্তব্যে ইমরান খান বলেন, তাঁর রাজনৈতিক দল ব্লাসফেমি আইনকে সমর্থন করে এবং এই আইন রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে। নিন্দুকেরা বলছেন, তাঁর দেওয়া এই বক্তব্য আহমদিয়া সম্প্রদায়ের জন্য ‘হুমকিস্বরূপ’।
‘তালেবান খান’
২০১৩ সালে ইমরান বলেছিলেন, পাকিস্তানে তালেবানের কার্যালয় খোলার অনুমতি দেওয়া উচিত। এ ছাড়া যে মাদ্রাসায় তালেবানের শীর্ষ নেতা মোল্লা ওমর ও জালালউদ্দিন হাক্কানি পড়াশোনা করেছিলেন, সেই মাদ্রাসার প্রধান ব্যক্তি সামি-উল হকের সঙ্গে মিত্রতার সম্পর্ক রয়েছে পিটিআইয়ের। এসব কারণে তাঁর নামকরণ করা হয়, ‘তালেবান খান’।
দুর্নীতি
সাম্প্রতিক নির্বাচনের আগে দুর্নীতি বিরোধী ইমরানই অন্যান্য দলের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের পিটিআইয়ে বরণ করে নিয়েছেন! গত এপ্রিল মাসে ইমরান ঘোষণা দিয়েছিলেন, নিজ দলের ২০ জন আইনপ্রণেতার বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য তিনি দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাকে সুপারিশ করবেন। কারণ তাঁদের বিরুদ্ধে সিনেট নির্বাচনের সময় ভোট বিক্রির অভিযোগ ছিল।
ভারত বিরোধীতা
ইমরানের বিরুদ্ধে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগগুলোর একটি ভারত বিরোধীতা। ইমরান শুরু থেকেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও দেশটির জনগণের ভারত বিরোধীতার মানষিকতা বুঝতে সক্ষম হয়েছিলেন। এজন্য নির্বাচনে নামার আগেই তিনি কাশ্মীর ইস্যুতে সরগরম হন। কাশ্মীরের জনগণকে মুক্ত করতে যা যা করা প্রয়োজন তার সবই করার ইঙ্গিত দেন ইমরান।
সেনাবাহিনীর ছত্রছায়া
পাকিস্তানের রাজনীতিতে বরবারই কালোথাবা বসানোর চেষ্টায় থাকে দেশটির সেনাবাহিনী। সেনাসমর্থন ছাড়া সরকার গঠন করা দেশটিতে একপ্রকার অলীক স্বপ্ন-ই। তাই সেনা বাহিনীর দুর্দণ্ড প্রতাপ ধরতে পেরেছিলেন ইমরান। নির্বাচনের আগে থেকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে উচ্চবাচ্চ তো দূরে থাক, সেনা বাহিনীর কর্মকাণ্ডে খুবই উচ্ছ্বসিত ছিলেন ইমরান। অনেকেই বলেন, সেনাবাহিনীর পদলেহন করে ক্ষমতায় বসেছেন ইমরান খান।
এমজে/
আরও পড়ুন