তুরস্কের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে: এরদোগান
প্রকাশিত : ১০:১২, ১৪ আগস্ট ২০১৮
প্রবল মার্কিন চাপের মুখে আর্থিক ও অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে তুরস্ক৷ এর জের ধরে ইতোমধ্যে দেশটি মুদ্রা সংকটে পড়েছে, যা আন্তর্জাতিক বাজারে তুরস্ককে ভাবিয়ে তুলেছে। তুরস্কের এমন অর্থনৈতিক চাপকে দেশটির বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন তুর্কী প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোগান।
সামরিক জোট ন্যাটোর দুই সদস্য দেশের মধ্যে এমন সংঘাতের ঘটনা সত্যি বিরল৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোগান একাধিক বিষয়কে কেন্দ্র করে পরস্পরের মধ্যে ব্যবধান এত বাড়িয়ে তুলেছেন যে, তার ফলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মারাত্মক অবনতি ঘটেছে৷ সিরিয়ায় তুরস্কের ভূমিকা, রাশিয়ার সঙ্গে সে দেশের বেড়ে চলা ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের জের ধরে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আমদানি থেকে শুরু করে তুরস্কের এক মার্কিন যাজককে আটক করার ঘটনার পর ওয়াশিংটন আঙ্কারার উপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করছে৷ তারই আওতায় ট্রাম্প প্রশাসন তুরস্ক থেকে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির উপর শুল্ক দ্বিগুণ করে দিয়েছে৷
এই সংঘাতের জের ধরে তুরস্কের মুদ্রা লিরার ব্যাপক অবমূল্যায়ন ঘটে চলেছে৷ চলতি বছরেই লিরার বিনিময় মূল্য প্রায় ৪০ শতাংশ কমে গেছে৷ ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে তুরস্ককে নিয়ে দুশ্চিন্তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে৷
এরদোগান অবশ্য এমন প্রবণতাকে মুদ্রা সংকট হিসেবে মানতে রাজি নন৷ তাঁর মতে, তুরস্ককে অর্থনৈতিক যুদ্ধের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে৷ ২০১৬ সালের জুলাই মাসে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের নেপথ্যে যারা ছিল, তারা এবার সে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করতে চাইছে বলে দাবি করেছেন তিনি৷ কোনো দেশের নাম না করলেও এরদোগান এই প্রচেষ্টা রুখতে সংগ্রামের ঘোষণা করেছেন৷ তাঁর মতে, তুরস্ক মোটেই কোনো ধরনের সংকটে পড়েনি৷ উৎপাদন বাড়িয়ে ও সুদের হার কমিয়ে তিনি এই ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করতে চান৷ সেইসঙ্গে তিনি তুরস্কের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে সঞ্চিত ডলার ও ইউরো বিক্রি করে লিরার বিনিময় মূল্য চাঙ্গা করার ডাক দেন৷ তুরস্কের বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র` রুখতে তিনি নতুন বাজার ও সহযোগী খুঁজবেন বলে জানিয়েছেন৷
মার্কিন যাজক অ্যান্ড্রু ব্রানসনকে আটক করে ওয়াশিংটনের রোষ আরও জোরালোভাবে টের পাচ্ছে তুরস্ক৷ এরদোগান বলেন যে, ব্রানসনের মুক্তির জন্য সময়সীমা স্থির করে দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু সেই হুমকির মুখে তুরস্ক নতি স্বীকার করবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি৷ উল্লেখ্য, প্রায় ২০ মাস ধরে কারাবাসের পর ব্রানসকে গৃহবন্দি রাখার নির্দেশ দেয় আদালত৷ ট্রাম্প ও মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স বার বার তাঁর মুক্তির দাবি করে চলেছেন৷
তুরস্কের এক প্রতিনিধিদল সম্প্রতি ওয়াশিংটন সফর করেও কোনো বোঝাপড়ায় পৌঁছতে পারেনি৷ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মার্কিন প্রশাসন তুরস্কের দুই মন্ত্রীর উপর বাধানিষেধ আরোপ করেছে৷
এমজে/
আরও পড়ুন