ইমরানের মন্ত্রিসভায়ও সামরিক সরকারের ছায়া
প্রকাশিত : ১৭:৫৪, ২০ আগস্ট ২০১৮ | আপডেট: ১৮:১১, ২০ আগস্ট ২০১৮
সামরিক বাহিনীর প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতায় পাকিস্তানের গদিতে বসেছেন ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া ইমরান খান। এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর গঠন করেছেন মন্ত্রিসভাও। তবে মন্ত্রিসভা গঠনের পরই চারদিক থেকে আবারও ধেয়ে আসতে শুরু করেছে সমালোচনার তীর। এর কারণ, ‘গণতান্ত্রিকভাবে’ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেও, তার মন্ত্রিসভার অধিকাংশ মন্ত্রী-ই সামরিক বাহিনীর আমলে কোনো না কোনো মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রী অথবা গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ছিলেন।
ধারণা করা হচ্ছে, সেনা বাহিনীর আঙ্গুলের ইশারায় এমন মন্ত্রীসভা গঠন করেছেন ইমরান খান। তার মন্ত্রীসভায় পারভেজ মুশারফ আমলের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীর জায়গা হওয়ায় অনেকেই বলছেন মুশারফের বিরুদ্ধে চলমান মামলাগুলোর কার্যক্রম অচিরেই থেমে যেতে পারে। এর কারণ হিসেবে অনেকেই বলছেন, ইমরান খান এসব মন্ত্রীকে সাথে রেখে পারভেজ মুশারফের বিরুদ্ধে শক্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন না।
জানা গেছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, অর্থমন্ত্রণালয়, তথ্য মন্ত্রণালয়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়সহ আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এমন সংসদ সদস্যদের হাতে যারা পারভেজ মুশারফের আমলে কোনো না মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। এদের মধ্যে অন্যতম তেহরিক-ই-ইনসাফের ভাইস-প্রেসিডেন্ট মাকদুম শাহ। পারভেজ মুশারফের শাসনামলে তিনি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে পিটিআই’র তথ্য সচিব ফাওয়াদ চৌধুরীকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনিও সাবেক সেনা শাসক পারভেজ মুশারফ সরকারের দল ‘অল পাকিস্তান মুসলিম লিগে’র মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এদিকে সেনাশাসক মোশারফের আমলের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মাকদুম খসরুকে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ইমরান খানের মন্ত্রীসভায় কেবল সামরিক সরকারের পৃষ্ঠপোষকরাই নন, মন্ত্রীসভায় জায়গা করে নিয়েছে কট্টোরপন্থীরাও। দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়-আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্টের নেতা ফারুক নাসিমকে। অন্য মন্ত্রণালয় গুলোতেও একই অবস্থা। মূলত পিটিআই’র বেশিরভাগ নেতাই হয় সামরিক সরকারের মন্ত্রী ছিলেন, নয় পিপিপি অথবা নওয়াজ শরীফের দলছুট নেতা।
অভিযোগ রয়েছে, পারভেজ মুশারফের শাসনামলে দায়িত্ব পালন করা রাজনীতিকরাই সেনাবাহিনীর সঙ্গে ইমরান খানের দল-তেহরিক-ই-ইনসাফের ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে কাজ করেছেন। এমতাবস্থায় ইমরান খান তাদের পাশ কাটিয়ে সেনা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না। একইসঙ্গে পারভেজ মুশারফের বিরুদ্ধেও শক্ত কোনো অবস্থান তিনি যে নিতে পারছেন না তা মোটামুটি অনুমিতই।
এমজে/
আরও পড়ুন