জালিয়াতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত ট্রাম্পের দুই সাবেক কর্মকর্তা
প্রকাশিত : ১৩:১৭, ২২ আগস্ট ২০১৮ | আপডেট: ১৩:২০, ২২ আগস্ট ২০১৮
জালিয়াতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাবেক দুই ব্যক্তিগত কর্মকর্তা। এ দুই জন হলেন ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় নির্বাচনী প্রচারণা প্রধান পল ম্যানাফোর্ট এবং তাঁর সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেন।
গতকাল মঙ্গঅলবার দেশটির পৃথক দুইটি আদালত অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেয়। ভার্জিনিয়ার আলেকজান্দারের একটি আদালত আটটি জালিয়াতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে ম্যানাফোর্টকে। আর অল্প কিছু সময় আগেই নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের একটি আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন মাইকেল কোহেন। কোহেনও আটটি পৃথক চার্জের বিষয়ে দোষ স্বীকার করেন।
পল ম্যানাফোর্ট
ট্যাক্স ফাঁকি, ব্যাংক জালিয়াতি এবং বিদেশের ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট থাকার সত্যতা গোপন করাসহ আটটি চার্জে দোষ প্রমাণিত হয় ম্যানাফোর্টের বিরুদ্ধে। তবে আরও অন্তত ১০টি চার্জ এখনও প্রমাণিত হয়নি ম্যানাফোর্টের বিরুদ্ধে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ান সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠার পর যেসব মামলার কার্যক্রম শুরু হয়েছিল তার মধ্যে এটিই প্রথম। তবে প্রমাণ হওয়া চার্জের একটিতেও রুশ সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়নি আদালত। মামলায় দোষী প্রমাণিত হলেও এখনও সাজা ঘোষনা হয়নি ম্যানাফোর্টের বিরুদ্ধে। আগামী ২৯ আগস্ট পর্যন্ত মামলার উভয় পক্ষকে সময় দিয়েছেন আদালত। যে ১০টি চার্জের বিষয়ে শুনানি বাকি সেগুলোর বিষয়ে নতুন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা হবে কী না তা উভয় পক্ষের কাছে জানতে চেয়েছে আদালত।
৬৯ বছর বয়সী ম্যানাফোর্টের আইনজীবী কেভিন ডওনিং জানান, আদালতের রায়ে ‘হতাশ’ ম্যানাফোর্ট। এ মুহুর্তে ম্যানাফোর্ট তার সকল করণীয় উপায় নিয়ে ভাবছেন বলে জানান কেভিন।
মাইকেল কোহেন
এদিকে ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী নিউ ইয়র্কের আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন। তার বিরুদ্ধেও আটটি চার্জ প্রমাণিত হয়। এগুলোর মধ্যে নির্বাচনের সময় অবৈধ অর্থ খরচের চার্জও আছে। আর এই কাজের জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে দায়ী করেছেন কোহেন।
ট্রাম্পের নাম সরাসরি না বললেও আদালতে কোহেন বলেন, ‘নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে’ একজন ‘প্রার্থীর’ নির্দেশে তিনি ঐ অর্থ ব্যয় করেন। মূলত, ট্রাম্পের সাথে সাবেক এক পর্ণো তারকার যৌন সম্পর্কের বিষয়টি গোপন রাখতেই ঐ পর্নো তারকাকে আইন বহির্ভূতভাবে অর্থ দিয়েছিলেন কোহেন। আর তা ট্রাম্পের নির্দেশেই দেওয়া হয়েছিলো বলে দাবি করেন তিনি।
ট্যাক্স ফাঁকি এবং ব্যাংক জালিয়াতিসহ আটটি চার্জে আনা অভিযোগ স্বীকার করেন ৫১ বছর বয়সী কোহেন। এগুলো হলো-
- ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার ৫টি ঘটনা
- অর্থ সম্পর্কিত ভুল তথ্য দেওয়া
- আইন বহির্ভূত কাজে জেনে বুঝে সহায়তা করা
- একজন প্রার্থীর নির্দেশে নির্বাচনে আইন বহির্ভূতভাবে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করা
অভিযোগ প্রমাণিত হলেও সাজা শোনায়নি এখনও আদালত। আগামী ১২ ডিসেম্বর সাজার রায় শোনানোর কথা রয়েছে কোহেনের বিরুদ্ধে। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ৬৫ বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে এই আইনজীবীর।
ট্রাম্প যা বললেন
ম্যানাফোর্ট এবং কোহেনের বিরুদ্ধে এমন এক সময়ে আদালত রায় দিলো যখন এক র্যালিতে অংশ নিতে ওয়েস্ট ভার্জিনিয়াতে আছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তাঁর সাবেক দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণিত হওয়ার বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে কোহেনের বিষয়ে কোন মন্তব্য করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন ট্রাম্প। কোহেন সম্পর্কে মুখে কুলুপ এটেছে হোয়াইট হাউজও।
তবে ম্যানাফোর্টের সাজা হওয়াকে ‘খুবই দুঃখজনক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ট্রাম্প। এটিকে নির্বাচনের সময়ের ‘শয়তান নিধন’ হিসেবেও মন্তব্য করেন। একই সাথে, ম্যানাফোর্টের সাজার সাথে নির্বাচনে রুশ সংশ্লিষ্টতার কোন সম্পর্ক নেই বলেও দাবি করেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সূত্রঃ বিবিসি
//এস এইচ এস//
আরও পড়ুন