ঢাকা, সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

ম্যাককেইনের সাত সন্তানের একজন বাংলাদেশী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৫৬, ২৬ আগস্ট ২০১৮ | আপডেট: ০৯:১২, ২৭ আগস্ট ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

পরপারে পাড়ি জমানো আমেরিকার ভার্জিনিয়ার ছয়বারের নির্বাচিত গভর্নর জন ম্যাককেইনের স্ত্রী সিন্ডি ম্যাককেইন যে মেয়েটিকে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় নিয়ে গিয়েছিলেন তার নাম ব্রিজেট ম্যাককেইন।

১৯৯১ সালে ম্যাককেইন পত্নী ব্রিজেটকে নিয়ে যান আমেরিকায়। তাদের প্রথম দেখা হয়েছিল কোথায় সে সম্পর্কে জানান তখনকার ম্যাককেইনের এইড হিসেবে কর্মরত ওয়েস গুলেট।  

ব্রিজেটের সঙ্গে সিন্ডির প্রথম দেখা হয়েছিল ঢাকার মাদারা তেরেসা পরিচালিত একটি অনাথাশ্রমে। অনাথাশ্রমটিতে তখন ১৬০টির মতো বাচ্চা ছিল। তবে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছিল ছোট একটি মেয়ে শিশু যে জন্মের সময়ই শারীরিকভাবে অক্ষমতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিল। জন্ম থেকেই ব্রিজেটের ঠোট এবং তালু কাটা ছিল। যার কারণে তাকে খাওয়াতেও খুব সমস্যা হতো। হার্টের সমস্যা থাকা আরেকটি মেয়েকেও চোখে পড়েছিল সিন্ডি এবং ওয়েস গুলেটের।

এই দুইটি মেয়েই শারীরিকভাবে এতোটাই নাজুক ছিল যে ডাক্তার না দেখালে তারা হয়তো বাঁচতো না। নিরীহ এই বাচ্চা দুটিকে দেখে আর কালবিলম্ব করলেন না ম্যাককেইন পত্নী। তিনি সঙ্গে করে নিয়ে যেতে চাইলেন এই বাচ্চা দুটিকে।

সে অনুযায়ী ভিসার জন্য আবেদনও করা হলো। কিন্তু তৎকালীন আমেরিকান অ্যাম্বেসির কর্মকর্তারা ভিসা দিতে সমস্যা করছিল বলে বেঁকে বসলেন সিন্ডি ম্যাককেইন।

তিনি ভিসা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাদানুবাদ চালিয়েই গেলেন। সিন্ডি ম্যাককেইনের সঙ্গে কথায় পেরে উঠতে না পেরে ব্রিজেটসহ আরেকটি মেয়ের ভিসা দিয়ে দিলেন তারা। সিন্ডি পরে বলেছিলেন, আমি জানি না আমার এতোটা সাহস কোথা থেকে এসেছিল।

ব্রিজেটকে অ্যারিজোনা বিমানবন্দরে প্রথম দেখেন জন ম্যাককেইন। নিজ স্ত্রীকে তখন জিজ্ঞাসা করেছিলেন, এই মেয়েটি কোথায় যাচ্ছে? জবাবে সিন্ডি বলেন, আমাদের বাড়িতে।

জন ম্যাককেইনের চেহারা তখন পিতৃত্বসুলভ আবেগে আপ্লুত হয়ে যায় বলে জানান, ওয়েস গুলেট। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া আরেকটি মেয়েশিশুকে দত্তক নেন ওয়েস গুলেট এবং তার স্ত্রী ডেবোরাহ। মেয়েটির নাম তারা রেখেছিলেন নিক্কি।
ব্রিজেটকে নিয়ে বেশ বিতর্কের মুখোমুখি হতে হয়েছিল জন ম্যাককেইনের। তখন ২০০০ সাল, জন ম্যাককেইন তখন রিপাবলিক পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট পদে জর্জ ডব্লিউ বুশের বিরুদ্ধে লড়ছিলেন।

তখন নিউ হ্যাম্পশায়ারের এক নির্বাচনী জনসভায় ব্রিজেটকে নিয়ে গেলে সেখানে জয়লাভ করে ম্যাককেইন। কিন্তু বুশপন্থীরা পরবর্তীতে সাউথ ক্যারোলিনাতে ফোন করে করা এক জরিপে ভোটারদের এই প্রশ্ন করে যে, আপনি কি জন ম্যাককেইনকে ভোট দেবেন যদি জেনে থাকেন যে তার একটি অবৈধ কৃষ্ণাঙ্গ সন্তান আছে?

এই প্রশ্নে কৃষ্ণাঙ্গ সন্তান বলতে ব্রিজেটকে ইঙ্গিত করা হয়েছিল। যাই হোক সাউথ ক্যারোলিনার সে নির্বাচনে হেরে যান ম্যাককেইন। এই হারের ধারাবাহিকতায়ই আর প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়নপ্রত্যাশীর দৌড়ে হারাতে পারেননি বুশকে।

এসি    


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি