ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪

নিজের আত্মজীবনীতে ইমরান সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য রেহামের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:০৪, ২৭ আগস্ট ২০১৮

নিজের আত্মজীবনীতে ইমরান খান সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন তাঁর সাবেক স্ত্রী রেহাম খান। তবে ইমরান খানের পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রাক্কালে এই আত্মজীবনী প্রকাশ হওয়াকে নিতান্তই কাকতালীয় বলছেন লেখিকা এবং সাংবাদিক রেহাম।

বইতে ইমরান খান এবং তাঁর দল পিটিআইকে ‘নগ্ন স্বৈরশাসকের থেকেও খারাপ’ বলে উল্লেখ করেছেন রেহাম। ৪৫ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ-পাকিস্তানি লেখিকা বলেন, “বেশ কয়েক বছর ধরেই আমি গুজব শুনছিলাম যে, আমি এমন কিছু লিখতে যাচ্ছি। আমাদের ডিভোর্সের আগে থেকেই এমন গুজব শুনছিলাম আমি। ডিভোর্সের কাগজ আমার কাছে আসার আগে থেকেই এই গুজব শুনছিলাম আমি”।

“আমার বই নিয়ে পিটিআই এর ভীতি ছিলো”

বেশকিছু ট্যাবলয়েড পত্রিকা আমাকে ইমরানের সম্পর্কে কথা বলার জন্য মোটা অংকের টাকা অফার করেছিলো। তাই আমার মনে হয় তাঁর দল, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ভয়ে ছিলো যে, আমি বইতে কী লিখতে যাচ্ছি। তাই পিটিআই নেতাকর্মীরা আমার নামকে বিতর্কিত করার প্রতিটি সুযোগ ব্যবহার করতো”।

“যতবারই পিটিআই নওয়াজ শরীফের সমালোচনা করতো ততবারই আমার নামে অভিযোগ করতো যে, ইমরানকে হেয় করে আমি বই লিখছি। একরকম বলতে গেলে, পিটিআই এর অতিমাত্রার ভীতিই আমাকে এই বইটি লিখতে বাধ্য করেছে”।

“সবকিছু ছাপিয়ে আমি একজন সাংবাদিক। কোন এক সময় গিয়ে হয়তো আমি বইটি লিখতামই। তবে পিটিআই এর অতিমাত্রার কৌতূহল আর ভীতি আমাকে বইটি লিখতে মনোনিবেশ করতে সাহায্য করেছে।

“আমাকে মেরে ফেলার আগেই আমার কাহিনী বলতে হবে”

এই বই লিখতে গিয়ে জীবন হুমকির মুখে ছিলো বলে জানান রেহাম খান। তিনি বলেন, “ইমরান যতই পিটিআই নিয়ে ব্যস্ত হচ্ছিল ততই আমার জীবন হুমকির মুখে ছিলো। তিন সন্তান নিয়ে আমি ছিলাম ‘সিঙ্গেল মাদার’। তখন হুমকিগুলো এমনভাবে এসেছে যে, তা কোন আদালতে প্রমাণ করা যাবে না। ইমরানের দ্বৈত চরিত্র নিয়ে বইতে লিখতে কী ক্ষতি হতে পারে আমার তার পরামর্শ শুনিয়ে হুমকি দেওয়া হতো আমাকে”।

রেহাম বলেন, “যখন আপনার সাথে এমনটা বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকে তখন আপনি অনুধাবন করবেন যে, আপনার গল্প শোনার মতো কেউ নেই। পিটিআই মনে করেছিলো এর মাধ্যমে আমাকে চুপ করানো যাবে। কিন্তু পিটিআই ভুল নারীর সাথে ঝামেলায় জড়িয়েছে। ভয়ের বদলে এসব হুমকি আমাকে আমার গল্প শোনাতে আরও বেশি শক্তি জুগিয়েছে”।

“মানুষের কী জানা উচিত না যে তিনি সত্যিই কেমন?”

এক সাক্ষাৎকারে এই বই লেখার নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিলো রেহাম খানকে। রেহাম খানের অভিযোগ যদি সত্যিও হয় তাহলে এক দম্পতির মধ্যেকার সম্পর্কের বিষয়গুলো এভাবে প্রকাশ করা কতটা যৌক্তিক এমন প্রশ্নের উত্তরে রেহাম বলেন, “আমার মনে হয় আমাদের যে প্রাচ্যীয় মন মানসিকতা তাই অস্ত্র হিসেবে আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। যারা আমার দিকে হামলে পরছেন তারা বলছেন যে, আমি শোবার ঘরের গোপনসব বিষয় প্রকাশ্যে এনেছি। আসলে তা মোটেই না”।  

রেহাম আরও বলেন, “সে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এবং পাকিস্তানের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি। মানুষের কী জানা উচিত না যে তিনি সত্যিই কেমন? আমি যদি অসত্য বা বানোয়াট কিছু বলি তাহলে তারা আমার বিরুদ্ধে মামলা করবেন। কিন্তু কোথাও কোন মামলা নেই। শুধু সামাজিক মাধ্যমে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কেউ আমাকে দয়া করে বলবেন যে এর কারণ কী?”

 গত বছরের সেপ্টেম্বরে নিজের আত্মজীবনী লেখা শুরু করেন রেহাম খান। ডিসেম্বর নাগাদ শেষ করেন নিজের প্রথম খসড়া পাণ্ডুলিপিটি। বিশ্বব্যাপী এই বইটি সম্পর্কে ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও বইটি শেষ পর্যন্ত প্রকাশ করতে বেশ কাঠখড় পোহাতে হয় রেহামকে।

শেষে হারপার কলিন্স পাকিস্তান বাদ দিয়ে অন্য দেশগুলোতে বইটি প্রকাশে সম্মত হয়। এরফলে পাকিস্তানের জন্য আরেকটি সংস্করন প্রকাশে উদ্যোগ নিতে হয় রেহামকে। পরবর্তীতে অবশ্য পাকিস্তানে বইটি প্রকাশ করতে পারেন রেহাম খান। তিনি বলেন, “কয়েক জন বন্ধু এবং আত্মীয়ের সাহায্যে বইটি পাকিস্তানে প্রকাশ করি আমরা। শুধু এজন্য যে, মানুষ যেন সত্যটা জানতে পারে”।

সূত্রঃ দ্য ন্যাশনাল

//এস এইএচ এস//

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি