সিএনএন বিশ্লেষণ
ব্রেক্সিট ইস্যুতে নিঃসঙ্গ তেরেসা মে
প্রকাশিত : ১৩:৫৬, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮
কয়েক সপ্তাহ পরেই ব্রেক্সিট বিষয়ে চুক্তিতে পৌঁছাতে হবে তেরেসা মেকে। কিন্তু অচলাবস্থা কাটার মতো এখনও কোনও পথ খুঁজে পাচ্ছেন না ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। তাই এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে নিঃসঙ্গ নেতা তিনি। শুধু তাই নয়, সারা ইউরোপে তিনি এখন বিপর্যস্ত এবং যুক্তরাজ্যে পুরোপুরি কোণঠাসা।
ব্রেক্সিট বিষয়ে একটি সমঝোতা পরিকল্পনা ছিল তেরেসা মের। কিন্তু চেকার্স প্ল্যান নামের ওই সমঝোতা প্রস্তাব ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেতাদের কাছে পাত্তা পায়নি। অন্যদিকে নিজের দেশে বিরোধীদের সমালোচনায় জর্জরিত এই নেতা।
এখন যদি ওয়েস্টমিনস্টারে বিরুদ্ধবাদীদের হাত থেকে নিস্কৃতি পেতে চান, তাহলে তাকে একটা নতুন পথ খুঁজে বের করতে হবে। চেকার্স প্ল্যান ছাড়া আর কোনও যুৎসই বিকল্প নেই তার হাতে। আবার নিজ দল রক্ষণশীলদের কাছ থেকে বিরোধিতা ছাড়া আর কিছুই পাচ্ছেন না তিনি। তাদের আশঙ্কা, চেকার্স প্ল্যান ইউরোপীয় কমিশনকে ব্রিটেনকে চেপে ধরার সুযোগ দেবে। অন্যদিকে, ইউরোপীয় নেতারা মনে করছেন, এর দ্বারা যুক্তরাজ্য কোনও কিছু খরচ না করে মাঝখান থেকে লাভবান হওয়ার সুযোগ পাবে।
এ দিকে, নিজের মন্ত্রিসভার ওপরও তেরেসা মের খুব বেশি প্রভাব নেই। কারণ মন্ত্রিসভার অধিকাংশই তার মতের বিরোধী। এছাড়া পার্লামেন্টেও নিজের দলের অধিকাংশ সদস্যের সমর্থন পাচ্ছেন না তিনি। তাছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈঠকে সুলজবার্গে কমিশনপ্রধান তার প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোনও তা মেনে নেননি।
প্রসঙ্গত, ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে ব্রেক্সিট প্রক্রিয়া কার্যকরে দুই বছর মধ্যবর্তী সময়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তেরেসা মে। ইতালিতে ব্রেক্সিট বিষয়ে ভাষণে এ প্রস্ততাব রেখেছিলেন তিনি। বলেছিলেন মধ্যবর্তী ওই সময়ের মধ্যে জোটের সঙ্গে করা আগের বাণিজ্যচুক্তি বজায় থাকবে। এ সময় ইইউভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকরা বসবাস ও কাজ করতে পারবেন কিন্তু যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। ব্রেক্সিট কার্যকরের পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে দুই বছর সময় লাগবে। ব্রেক্সিট ইস্যুতে তেরেসা মের অন্তর্বর্তীকালীন সময়কে স্বাগত জানালেও পুরো বিষয়কে অস্পষ্ট আখ্যা দেন বিরোধী লেবার নেতা জেরেমি করবিন। এ দিকে, ব্রেক্সিট কার্যকরের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ হয়েছে ইতালিতে। বিক্ষোভে অংশ নেন ইতালিতে থাকা ব্রিটিশরা।
চেকার্স প্ল্যানে বলা হয়েছে, ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গেলেও ইউরোপীয় বাজারে তার অংশগ্রহণ থাকবে। লেবার পার্টিপ্রধান জেরেমি করবিনও ইউরোপীয় একক বাজারে ব্রিটেনের উপস্থিতি নিশ্চিত দেখতে চান বলে জানান পার্টির বার্ষিক সম্মেলনে। তবে শেষ পর্যন্ত কী হবে, তা এখনও বলা না গেলেও তেরেসা মে শিগগিরই এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে পারবেন, তা মনে হচ্ছে না।
একে//
আরও পড়ুন