মিয়ানমারের বিচারের এখতিয়ার আইসিসির হাতে নেই: সুচির মন্ত্রী
প্রকাশিত : ২০:৩৮, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮
এবারের জাতিসংঘ সম্মেলনে বিতর্কপর্বে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচারিক এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে মিয়ানমার। সাধারণ অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে মিয়ানমারের প্রতিনিধি দাবি করেছেন, ‘ধোঁয়াশাপূর্ণ কোন আইনগত পরিসর থেকে আইসিসি মিয়ানমারের বিচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ধরণের পদক্ষেপ নিলে আইসিসি নিজেই তার গ্রহণযোগ্যতা হারাবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর সেদেশের সেনাবাহিনী সুপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধভাবে জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালায়। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর নেমে আসে নারকীয় হত্যা-ধর্ষণ, অগ্নি সংযোগের মতো লোমহর্ষক দমন-পীড়ন। এর ফলে নারী ও শিশুরা বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সেনাবাহিনীর অত্যাচার থেকে নিজেদের বাঁচতে প্রানভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা।
রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক বাস্তুচুত পর এই ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠে বিভিন্ন দেশ ও মানবাধিকার সংস্থা। এটি যুদ্ধাপরাধ নাকি মানবতাবিরোধী অপরাধ, তা খতিয়ে দেখতে কাজ শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত-আইসিসি।
অবশ্য যে ক’টি দেশ আইসিসি সনদে সাক্ষর করেনি তার মধ্যে মিয়ানমার অন্যতম। তাই সরাসরি মিয়ানমারের দোষীদের বিচার করার এখতিয়ার আইসিসির হাতে নেই। এই অবস্থানে দাঁড়িয়ে শুরু থেকেই মিয়ানমার আইসিসি’র বিচারিক এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলে আসছে।
আইসিসি মনে করছে, মিয়ানমার এই আদালতের সদস্য না হলেও বাংলাদেশ কিন্তু অন্যতম সদস্য রাষ্ট্র। তাই এই ঘটনার বিচার করার এখতিয়ার এই আদালতের রয়েছে। কারণ আন্তঃসীমান্ত অনুপ্রবেশের ধরণের জন্যই এই বিচার কাঠামোতে সম্ভব। এক প্রসিকিউটরের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৬ সেপ্টেম্বর নেদারল্যান্ডসের হেগে সংস্থাটির তিনজন বিচারক প্রি-ট্রায়াল কোর্ট বিচারের পক্ষে রায় দেন।
জাতিসংঘ ভাষণে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপেদষ্টা অং সান সু চি’র দফতরের মন্ত্রী টিনথ শুয়ে দাবি করেছেন, আইসিসি এমন একটা প্রেক্ষাপটে মিয়ানমারের বিচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে যখন অভ্যন্তরীণভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তির সুযোগ ফুরিয়ে যায়নি।
তিনি আরও দাবি করেন, এই ধারার কর্মকাণ্ড কেবল ওই আদালতের নৈতিক ও আইনগত এখতিয়ারকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে। তার দাবি, যেখানেই তারা মানবাধিকার হরণের আলামত পাচ্ছেন, সেখানেই দোষীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন।
অবশ্য, গত মাসে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির অফিস থেকে জানানো হয়েছিল, এই বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে মিয়ানমারের জড়ানোর কোনই বাধ্যবাধকতা নেই এবং এই বিচার প্রক্রিয়া ভবিষ্যতের জন্য কোনও ভালো দৃষ্টান্ত হবে না।
কেআই/এসি
আরও পড়ুন