ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪

ইতিহাসে সৌদি’র সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্ব কেমন ছিল, এখন কেমন?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ২২:৪৬, ১৭ অক্টোবর ২০১৮ | আপডেট: ২২:৪৬, ১৭ অক্টোবর ২০১৮

নানান রাজনৈতিক সমীকরণের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়ে থাকে ইসরায়েল, জর্ডান, মিসর৷ কিন্তু  বিশ্ব-রাজনীতিতে  তেলসমৃদ্ধ সৌদি আরবের সঙ্গে মার্কিন বন্ধুত্ব বেশ পুরনো ৷ এই বন্ধুত্ব নানান মুহূর্ত অতিক্রম করেছে। আসুন জেনে নিই সৌদি ও মার্কিন সম্পর্কের একাল- সেকাল।  

বিশেষ বন্ধুত্ব শুরু  

১৯৪৫ সালে সৌদি আরবের প্রথম বাদশাহ আবদুল আজিজের সঙ্গে ঐতিহাসিক বৈঠক করেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট ৷ তখন থেকেই বিশেষ এক বন্ধুত্ব শুরু হয় দুই দেশের মধ্যে ৷ এরপর যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতার পালা বদল হলেও এই বন্ধুত্বে চিড় ধরেনি এতটুকুন ৷ ১৯৭৯ সালে ইরানে মার্কিন সমর্থিত শাহের পতন ঘটলে সৌদি আরব পরিণত হয় মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বন্ধু দেশ হিসেবে৷

ইরানে ইসলামী বিপ্লব 

১৯৭৯ সালে শাহকে সরিয়ে আয়াতুল্লাহ খোমেনি ইরানের ক্ষমতায় আসেন ৷ অ্যামেরিকাকে ‘গ্রেট শয়তান’ হিসেব আখ্যা দেন খোমেনি ৷ তেহরানে মার্কিন দূতাবাসে জিম্মি সংকট ও উদ্ধার অভিযানে ব্যর্থতার ফলে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার আর পুনর্নির্বাচিত হতে পারেননি ৷ আঞ্চলিক শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বরাবরই ইরানের বিপক্ষে সৌদি আরবের পাশে দাঁড়িয়েছে  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৷

কুয়েত আক্রমণ

১৯৯০ সালের আগস্টে কুয়েত দখল করে নেয় ইরাক ৷ সে সময় কুয়েতের রাজপরিবারকে আশ্রয় দেয় সৌদি আরব ৷ যুক্তরাষ্ট্র কুয়েতকে ইরাকি বাহিনীর দখলমুক্ত করতে অভিযান চালায় ৷ সে সময় সরাসরি যুদ্ধে অংশ না নিলেও মার্কিন বাহিনীকে নিজেদের ঘাঁটি ব্যবহার করার অনুমতি দেয় সৌদি আরব।

টুইন টাওয়ার হামলা

সৌদি বাদশাহ ফাহাদ এবং পরবর্তীতে বাদশাহ আবদুল্লাহ’র সঙ্গে বিশেষ বন্ধুত্ব ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের ৷ ওসামা বিন লাদেনের আল কায়েদা ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ারে হামলা চালানোর পরও এ বন্ধুত্বে ফাটল ধরেনি ৷ ২০০৩ সালে মার্কিন বাহিনীর ইরাক আক্রমণেও সহায়তা করেছে সৌদি আরব ৷

ইয়েমেন সংকট

হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে এবং প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদির সমর্থনে সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন জোট ২০১৫ সালে ইয়েমেনে বোমা হামলা শুরু করে ৷ তিন বছর ধরে চলা এ হামলায় হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন ৷ মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগও উঠেছে৷

কাতার

আরব বসন্তের পর থেকে এক সময়ের বন্ধু সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক শিথিল হয় কাতারের ৷ অনেকটা বিপ্লবীদের পক্ষে কাতারের অবস্থান থাকলেও সৌদি আরব অবস্থান নেয় বিপক্ষে ৷ তবে দুই দেশই বন্ধু-প্রতীম হওয়ায় বিরোধে পক্ষ নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র ৷ তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর ২০১৭ সালে ইরান ও মুসলিম ব্রাদার হুডের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সহায়তার অভিযোগে কাতারকে একঘরে করে দেওয়া হলে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থন পায় সৌদি আরব ৷

খাশগজি

তুরস্কের সৌদি কনস্যুলেটে সাংবাদিক জামাল খাশগজি হত্যার অভিযোগে বেশ বিপাকে পড়েছে সৌদি আরব ৷ আন্তর্জাতিক নিন্দার মুখে এবং খাশগজি যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকায় বন্ধুর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে বাধ্য হয় যুক্তরাষ্ট্রও ৷ তবে শেষ পর্যন্ত সৌদি আরবকে এ বিপদ থেকেও উদ্ধার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৷ কোন প্রমাণ ছাড়াই খাশগজি ‘দুর্বৃত্তের’ হাতে নিহত হয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি৷

(সূত্রঃ ডয়েচে ভেলে) 

কেআই/এসি 

   


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি