ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪

সাহসী নারীর মূর্তপ্রতিক রেহানা ফাতেমা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:০২, ৩১ অক্টোবর ২০১৮

ভারতের কেরালা রাজ্যের শবরীমালা মন্দিরে নারীদের প্রবেশাধিকার নিয়ে বিতর্ক যখন তুঙ্গে, ঠিক তখনই আবারও আলোচনার শিরোনামে উঠে এসেছে রেহানা ফাতেমার নাম ৷

ভারতের সরকারি জনসংযোগ বিভাগ, বিএসএনএল-এর টেকনিশিয়ান পদে কর্মরত রেহানা ফাতেমা এখন শুধু একজন কর্মজীবী  সাধারণ মেয়ে হলেও এই নারীর পরিচয় এখন শুধু  এখানেই সীমাবদ্ধ নেই ৷তিনি হয়ে উঠেছেন সাহসিকতার মূর্ত  প্রতীকে।

বর্তমানে ভারতে খবরের শীর্ষে আছে কেরালার শবরীমালা মন্দির ৷ সুপ্রিম কোর্টের রায় অবশেষে ইতি টেনেছে কয়েক শতাব্দী ধরে চলে আসা এই মন্দিরে নারীদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞায় ৷ কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি কিছুই ৷ আদালতের রায়ের পরও কোনো নারীকে এই মন্দিরে ঢুকতে দেননি পুরোহিতসহ অন্যান্য মন্দিরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা ৷

গত ১৭ই অক্টোবর রেহানা ফাতেমা ও আরও কয়েকজন নারী পায়ে হেঁটে মন্দিরে পৌঁছালেও তাঁদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি ৷

সম্প্রতি, মুসলমান হয়েও হিন্দুদের মন্দিরে ঢোকার চেষ্টা করার ‘অপরাধে’ ভাঙচুর করা হয়েছে ফাতেমার ঘর-বাড়ি ৷ কেরালা মুসলিম জামায়াত কাউন্সিলের পক্ষ থেকেও রেহানাকে একই অভিযোগে বহিষ্কার করার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে ৷

অনেকের মতে, রেহানা ফাতেমা একজন প্রচারমুখী মানুষ ৷ তবে তাঁর সাহসের প্রশংসা না করে পারা যায় না ৷ বিভিন্ন ইস্যুতে তিনি যেভাবে প্রতিবাদী হচ্ছেন, সাধারণ মানুষকে ভাবতে বাধ্য করছেন, তা অবশ্যই উল্লেখযোগ্য ৷ প্রতিবাদ করতে গিয়ে গোঁড়া হিন্দু এবং গোঁড়া মুসলমান দু’পক্ষেরই রোষের মুখে পড়েছেন তিনি ৷

উল্লেখ্য, এ বছরের মার্চ মাসে কেরালার আরেকটি ঘটনায় খবরের শিরোনাম হয়েছিল ফাতেমা ৷এক অধ্যাপক নারীদের স্তনের সাথে তরমুজের তুলনা করলে এর প্রতিবাদে রেহানা তরমুজ দিয়ে খোলা বুক আড়াল করে ছবি তুলেছিলেন ৷ সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দিলে বিস্তর সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি ৷ এমন অভিজ্ঞতা অবশ্য ফাতেমার জন্য নতুন কিছু নয় ৷  ২০১৪ সালের বিতর্কিত ‘কিস অফ লাভ’ আন্দোলনের সময় তাঁর সঙ্গী, চিত্র-নির্মাতা মনোজ শ্রীধরের সাথে একটি চুম্বনের ভিডিও শেয়ার করেও তীব্র আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়ছিলেন তিনি ৷

এত কিছু পরেও কিন্তু রেহানা বিন্দুমাত্র বিচলিত নন ৷ গোঁড়া মুসলমান পরিবারে জন্মগ্রহণ করা এই দুই সন্তানের মা জানিয়েছেন, বাবার মৃত্যুর পর থেকেই তিনি ধর্মের ওপর বিশ্বাস হারাতে শুরু করেন ৷

নারী স্বাধীনতায় বিশ্বাসী রেহানা স্বপ্ন দেখেন, বিভিন্ন সামাজিক বেড়াজাল ভেদ করে একদিন নারীরা নিজেদের শরীর ও চেতনার ওপর পূর্ণ স্বাধীনতা পাবে।

(সূত্রঃ ডয়েচে ভেলে)

কেআই/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি